|
|
|
|
পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়খণ্ডীদের সঙ্গে জোটের ইঙ্গিত মানসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহলে ঝাড়খণ্ডী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট গড়ে শাসক তৃণমূলকে ধরাশায়ী করতে চায় কংগ্রেস। সেই সঙ্গে জঙ্গলমহলে উন্নয়নের যাবতীয় টাকাই যে কেন্দ্রের সরকার দিচ্ছে, তা-ও প্রচারে তুলে ধরতে চান কংগ্রেস নেতৃত্ব। আঞ্চলিক দলগুলির
সঙ্গে জোট করে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ও বিধায়ক মানস ভুঁইয়া।
মঙ্গলবার দুপুরে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ায় দলীয় এক কর্মিসভায় এসে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানসবাবু এবং প্রদেশ কংগ্রেসের দুই সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী ও কৃষ্ণা দেবনাথেরা পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কর্মীদের প্রস্তুত হতে বললেন। মানিকপাড়া অডিটোরিয়ামে ঝাড়গ্রাম মহকুমা কংগ্রেসের ওই কর্মিসভায় হাজির ছিলেন কয়েকশো কর্মী।
এমনিতেই জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল। দুর্গেশ মল্লদেবের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াইটা বেশ কঠিন। এই পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব বেশি আসনে জোট করে প্রার্থী দেওয়ার পক্ষপাতী কংগ্রেস। মানসবাবুর কথায়, “সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি’র ত্রিফলা আক্রমণ ঠেকাতে প্রতিটি ব্লকে দলের বুথ কমিটিতে বেশি করে মহিলা, আদিবাসী ও তফসিলিদের নিয়ে আসা হচ্ছে। |
|
কর্মী সম্মেলনে মানস ভুঁইয়া। মানিকপাড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র। |
ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সঙ্গে আমাদের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। আরও কিছু সহযোগী দলের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই দলগুলির সঙ্গে জোটের ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।” সেই সঙ্গে চলবে তৃণমূল বিরোধী প্রচার। মানসবাবু বলেন, “আমরা রাজ্যের ক্ষমতায় নেই। কিন্তু মাওবাদী প্রভাবিত পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে যত উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে তার পুরো টাকাটাই দিচ্ছে কেন্দ্রে আমাদের সরকার। স্পেশাল প্যাকেজের পুরো টাকাও কেন্দ্রের। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল ধারাবাহিক ভাবে প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেসের সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ ও কুৎসা করে চলেছেন। ওরা কেন্দ্র থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পেয়েও কাজ করতে পারছেন না। নেতাইয়ের রাস্তা দু’বছরেও পাকা হল না। এসবই আমরা মানুষের কাছে গিয়ে বলব।” জেলায় শিল্প না হওয়া এবং পুলিশের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নিয়েও সরব হন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক। মানসবাবুর বক্তব্য, “খড়্গপুর রেল ওয়ার্কশপ ও কয়েকটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা ছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুরে আর কোনও শিল্প নেই। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের কর্তারা শাসক দলের নেতা-নেত্রীর মতো আচরণ করছেন, অভিযোগ করে মানসবাবু বলেন, “পুলিশ কর্তারা আমাদের কর্মীদের তৃণমূলে যোগ দিতে বলছেন। না হলে কংগ্রেস কর্মীদের মাওবাদী মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন মানসবাবু।
ঝাড়গ্রামের কংগ্রেস নেতা প্রসূণ ষড়ঙ্গী ও তাপস মাহাতোদের দেখিয়ে মানসবাবু বলেন, “সংগঠন করতে গিয়ে ৩৪ বছর সিপিএমের হাতে প্রসূণ-তাপসেরা অনেক মার খেয়েছেন। এখন অবশ্য আর লালপতাকা দেখা যাচ্ছে না। এখন সবই তৃণমূলের তেরঙ্গা পতাকা। জ্ঞাতিভাইয়েরা মারলে মারবে। আমরা আন্দোলনের পথ ছাড়ব না।” অমিতাভবাবু ও কৃষ্ণাদেবীদের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করছেন। কাজ করতে পারছেন না। বলছেন, টাকা নেই। অথচ কেন্দ্র দিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এর জবাবদিহি চান মানুষ।” |
|
|
|
|
|