ওএনজিসি-১ (কাতসুমি)
ইস্টবেঙ্গল-০ |
দিল্লির ঠান্ডা বা অম্বেডকরের মাঠ নয়। আই লিগে মঙ্গলবার মেহতাবরা ওএনজিসির কাছে হারলেন তাঁদের ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায়। এরই সঙ্গে খাটল না কোচ ট্রেভর মর্গ্যানের চালও। ফলে জটিল হল লাল-হলুদের আই লিগ জয়ের অঙ্ক।
ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত গোল শূন্য। এই সময়ই ইস্টবেঙ্গল কোচ পরপর দুটি পরিবর্তন করে চলে গেলেন তিন ফরোয়ার্ড ও তিন ডিফেন্ডারে। আর এই পরিবর্তন দুটিই কাল হল ওপারাদের। লেফট ব্যাক সৌমিকের বদলে মননদীপ এবং রাইট ব্যাকে নওবার বদলে রাজু গায়কোয়াড়। লাল-হলুদ কোচের পরিকল্পনা ছিল ওএনজিসি বক্সে রাজুর লম্বা থ্রো রবিনদের মাথায় ফেলা। যাদের জন্য এই পরিকল্পনা সেই রবিন সিংহ বা ডিফেন্স থেকে উপরে উঠে আসা ওপারা কিংবা অর্ণব কোচের পরিকল্পনা সফল করতে পারলেন না ওএনজিসি রক্ষণ ও গোলকিপারের দক্ষতায়। উলটে তিন ফরোয়ার্ডে খেলতে গিয়ে ইস্টবেঙ্গলের জমাট ডিফেন্সও হয়ে গেল নড়বড়ে।
অ্যাটাকিং থার্ডে লোক বাড়িয়ে মর্গ্যান তখন সাত জনে চলে যেতে চাইছেন। ভেবেছিলেন প্রয়োজনে তিন জনের ডিফেন্সকে সাহায্য করতে ভাসুমরা নেমে আসবেন। কিন্তু বাস্তবে মর্গ্যানের সেই ভুল চালকে ধরে ফেললেন ওএনজিসি কোচ সন্তোষ কাশ্যপ। পড়ে পাওয়া সুযোগকে সম্পূর্ণ কাজে লাগিয়ে তিন পয়েন্ট পকেটে পুরে মাঠ ছাড়লেন তিনি। |
গোলের উল্লাস। কাতসুমির। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই |
খেলা শেষ হওয়ার তখন মিনিট তিনেক বাকি। প্রতি-আক্রমণে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ওএনজিসির মিডফিল্ডার লালমুয়ান পুঁইয়া লাল-হলুদ বক্সে মাপা থ্রু বাড়ালেন কাতসুমির জন্য। বলটি ধরে কাতসুমি কোমরের এক ঝটকায় অর্ণবকে কাটিয়ে অনবদ্য শটে পরাস্ত করলেন অভিজিৎ মণ্ডলকে (১-০)। ভাসুমের টিকিও তখন খুঁজে পাওয়া গেল না। আর সেখানেই ইতি রাজধানী থেকে মর্গ্যানের তিন পয়েন্ট নিয়ে ফেরার স্বপ্ন।
এ দিন শুরুটা খারপ হয়নি ইস্টবেঙ্গলের। ম্যাচের শুরুতেই চিডির বাড়ানো বল ধরে একা গোলকিপারকে সামনে পেয়েও বাইরে মারেন লালরিনডিকা। এই সময়েই পেনকে বক্সে ফাউল। যদিও তামিলনাডুর রেফারি শ্রীকৃষ্ণ লাল-হলুদ মাঝমাঠের ফুসফুসকে হলুদ কার্ড দেখান প্লে-অ্যাকটিংয়ের জন্য। কিছু পরেই নওবার ডান পায়ের শট। লাল-হলুদ ঝড়ে তখন বেসামাল সন্তোষ কাশ্যপের দলের রক্ষণ। এর কিছু পরেই পাল্লা দিয়ে শুরু হল রবিন সিংহের সহজ সুযোগ অপব্যবহারের প্রদর্শনী। দুই অর্ধ মিলিয়ে কখনও নওবার ক্রস, কখনও মেহতাবের থ্রু, কখনও বা ইসফাকের ক্রস থেকে একের পর এক সিটার নস্ট করলেন রবিন।
ইস্টবেঙ্গলের এই অপ্রত্যাশিত হার তাদের কিছুটা হলেও পিছিয়ে দিল আই-লিগ খেতাবের দৌড় থেকে। ১৪ ম্যাচে তারা তৃতীয় স্থানে আটকে থাকল ২৭ পয়েন্টেই। আর দুটো ম্যাচ কম খেলেও ২৮ পয়েন্ট নিয়ে চার্চিল ও পুণে এফসি প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে। এক ম্যাচ কম খেলে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ডেম্পো নিঃশ্বাস ফেলছে ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে।
|
আই লিগে প্রথম তিন
চার্চিল ম্যাচ ১২ জয় ৯ পয়েন্ট ২৮
পুণে এফ সি ম্যাচ ১২ জয় ৯ পয়েন্ট ২৮
ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ ১৪ জয় ৮ পয়েন্ট ২৭ |
|
ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ ঘরের মাঠে পুণে এফসির বিরুদ্ধে। এ দিন ম্যাচ হেরে কোচ মর্গ্যানের গলাতে হতাশার সুর। খেলা শেষে তিনি বলেই ফেললেন “রবিন সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে প্রথমার্ধেই আমরা ম্যাচ পকেটে পুরতে পারতাম। লিগ পেতে গেলে বাকি ১০ ম্যাচের মধ্যে অন্তত আটটাতে জিততেই হবে।”
চার ম্যাচে তিনটি জয় ও একটি ড্র করে ওএনজিসিকে ১০ পয়েন্ট এনে দেওয়া সন্তোষ কাশ্যপ তখন হাসি মুখে মাঠ ছাড়ছেন। বাসে ওঠার আগে বলে গেলেন “সব কৃতিত্বই ছেলেদের। অবনমন বাঁচাতে নেমে আপাতত সপ্তম স্থানে। এই ফর্ম লিগের শেষদিকেও ধরে রাখতে হবে।”
|
ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, নওবা (রাজু), উগা, অর্ণব, সৌমিক (মননদীপ) ইসফাক (ভাসুম), পেন, মেহতাব, লালরিনডিকা, চিডি, রবিন। |