অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার মেয়ে ও নাতির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাট ২ ব্লকের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের শোভা রায় বিডিও এবং মহকুমাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গাইয়ের তৃণমূল নেতা অভয় মণ্ডলের মেয়ে লক্ষ্মীরানি ঘোষের ছেলে কুন্তল ঘোষ বেঙ্গাই মৌজায় কংসাবতী ক্যানেল-সংলগ্ন তাঁদের একতলা বাড়িটি দোতলা করছেন। কাজ শুরু হয়েছে গত ২০ নভেম্বর। অভিযোগ, ওই নির্মাণ অবৈধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ওই নির্মাণ কাজের বিষয়ে ২৭ নভেম্বর পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানান। অভিযোগ পাওয়ার পর পঞ্চায়েত প্রধান ১৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীরানি ঘোষকে নোটিস পাঠিয়ে নির্মাণ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু কাজ হয়নি। পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের শোভা রায়ের অভিযোগ, ‘স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অনুপ রায়ের মাধ্যমে মৌখিক ভাবে একাধিক বার কাজ বন্ধ করতে বলেছি। নোটিসও দিয়েছি। তারপরেও কাজ চলায় বিষয়টি গত ২০ ডিসেম্বর মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’ প্রধান আরও বলেন, ‘‘আইনের দ্বারস্থ হওয়াই যেত। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও নির্মাণের ক্ষেত্রে জমির দলিল, প্ল্যান, ফিজ, পঞ্চায়েতের ট্যাক্সের হালফিল রসিদ এবং প্রতিবেশীদের ‘নো-অবজেকশনের’ শংসাপত্র দু’ কপি করে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ প্রথমে তদন্ত করে দেখবে সেগুলি সব যথাযথ কিনা। সেই তদন্তের পরে পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় তা পাস করিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেওয়া হয় তিনি নির্মাণ কাজ করতে পারবেন কিনা।
এই ঘটনায় জেরে স্থানীয় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের চিত্রও সামনে এসেছে। গোঘাট ব্লকের তৃণমূল নেতা তপন মণ্ডল জানান, ‘‘পঞ্চায়েতের অনুমতি না নিয়ে ওই নির্মাণ করা ঠিক হয়নি। আমরা কাজটা বন্ধ করতে বলেছি। পুলিশকেও বিষয়টা দেখতে বলা হয়েছে।’’ যদিও অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের দাদু তৃণমূল নেতা অভয় মণ্ডল বলেন, ‘‘দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়নি। ছাদ ঢালাইয়ের আগে অনুমতি নিলেই হল। আমার নাতি টাকা এবং নকশা আগেই জমা দিয়েছে। অনুমতি না দিলে পঞ্চায়েতই ফাঁসবে।’’
অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের দাবি, ‘আমরা ১৯ ডিসেম্বর আবেদনপত্র-সহ কাগজপত্র জমা দিয়েছি। পাশের জায়গার মালিকদের মতামত নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ কিনা জানা নেই। তাই নেওয়াও হয়নি। পরিকল্পিত ভাবে আমাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’’ এ প্রসঙ্গে গোঘাট ২ বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |