|
|
|
|
কংগ্রেসের টিকিট নিয়ে শুরু টানাপোড়েন, চলছে বিক্ষোভ |
আশিস বসু • আগরতলা |
দলের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি। তার আগেই রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা প্রদেশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। অভিযোগ জমা পড়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছেও। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রার্থীর টিকিট নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপ, দলের মধ্যে গোষ্ঠীকোঁদল।
সম্প্রতি রাজ্য কংগ্রেসের নেতা তথা বিধায়ক সুবল ভৌমিক কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। চিঠিতে মূলত বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে বলা হয়েছে, “যে ভাবে ‘সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা’ তৈরি হয়েছে, তাতে আগামী নির্বাচনে দলের সামগ্রিক বিপর্যয় কেউ আটকাতে পারবে না।” তাঁর কথায়, ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা নিজেদের ‘পছন্দসই’ কয়েক জনের সঙ্গে ‘আলাপ-আলোচনা’ করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। দল পরিচালনা থেকে নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করা, সমস্ত বিষয়েই ‘ব্যক্তিগত আনুগত্যের’ নিরিখে মাপা হচ্ছে। দলীয় আনুগত্য সেখানে গৌণ। কংগ্রেস দলের পক্ষে এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সারা বছর ধরে যাঁরা দলের হয়ে গ্রামেগঞ্জে, মানুষের পাশে থেকে রাজনৈতিক লড়াইটা লড়ছেন, তাঁদের এড়িয়ে কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে বলে সুবলবাবুর ক্ষোভ।
সুবলবাবুর বক্তব্য, ১৯৯৩ সাল থেকেই ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব কার্যত একই ভুল করে চলেছে। তাঁর মতে, এ কারণেই প্রতি ভোটেই কংগ্রেসের ভরাডুবি হচ্ছে। প্রদেশ নেতাদের পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী তালিকা তৈরি হলে, এ বারেও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি কোনও ভাবেই আটকানো যাবে না বলে তাঁর আশঙ্কা। সুবলবাবু এখনই এই বিষয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
শুধু সুবলবাবু একা নন। বিভিন্ন জায়গা থেকে, কংগ্রেসের বিভিন্ন গোষ্ঠী আস্তে আস্তে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা যাচ্ছে। কমলাসাগরে দলীয় কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন দলের নেতা অরুণকান্তি ভৌমিক। চড়িলাম, তেলিয়ামুড়া, অমরপুর এবং বক্সনগরের স্থানীয় নেতাদের প্রার্থী করার দাবিতে প্রদেশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দলের কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কংগ্রেস বিধায়ক বীরজিৎ সিংহও বিষয়টি নিয়ে সেই সনিয়াজির দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি জানান, ‘‘কংগ্রেস নেত্রী সনিয়াজিকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার সময় এ রাজ্যে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি, রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতি, কর্মীদের ভাবাবেগকে মাথায় রেখেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তিনি অনুরোধ করেছেন বলে জানান।
এ দিকে, বিভিন্ন স্তরে দলীয় কর্মী-নেতাদের এ ধরনের বিক্ষোভে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মণ অবশ্য কোনও পাত্তাই দিচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘দলের নেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লেখার অধিকার দলের সব কর্মীরই রয়েছে। দলের প্রার্থী তালিকা ১২-১৩ জানুয়ারি নাগাদ হয়তো চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তার পরেও দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ থাকলে বিষয়টি হাইকম্যান্ডের নজরে আনা হবে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রদেশ কংগ্রেসের আর এক নেতার মতে, ‘‘এ ধরনের কর্মী-বিক্ষোভ কার্যত রাজ্য নেতৃত্বের উপর কোনও কোনও স্থানীয় নেতার চাপ সৃষ্টি করার কৌশল মাত্র।’’ এ দিকে, বিজয় রাংখলের আইএনপিটি’র সঙ্গে কংগ্রেসের নির্বাচনী সমঝোতা প্রায় সম্পূর্ণ। ১০ থেকে ১১টি আসন জোট সঙ্গীকে ছাড়ছে কংগ্রেস। এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি প্রতিনিধি তরুণ গগৈ। |
|
|
|
|
|