শিয়ালদহ স্টেশনের কাছেই লালগোলা প্যাসেঞ্জারের একটি কামরা লাইনচ্যুত হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়। শিয়ালদহ মেন, বনগাঁ ও ডানকুনি শাখায় প্রায় দু’ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। আটকে যায় দূরপাল্লার ট্রেনও।
ওই দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। কিন্তু ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিন শাখার হাজার হাজার যাত্রী অকূল পাথারে পড়েন। বাতিল করা হয় ২০টি লোকাল ট্রেন। সন্ধ্যার পরেও শিয়ালদহের ওই তিন শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
পূর্ব রেলের খবর, এ দিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে কারশেড থেকে ১০ নম্বর লাইন দিয়ে শিয়ালদহে আনার সময় রুট রিলে ইন্টারলক বা আরআরআই কেবিনের কাছে একটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। ওই কামরা স্তম্ভে ধাক্কা দেওয়ায় ওভারহেড তার ছিঁড়ে যায়। বাধ্য হয়েই সব লাইনে ওভারহেড তারে বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ করে দিতে হয়। সব লাইনেই থমকে যায় ট্রেন। |
লাইনচ্যুত প্যাসেঞ্জার ট্রেন সারানোর চেষ্টা চলছে।
মঙ্গলবার শিয়ালদহে। —নিজস্ব চিত্র |
এই দুর্ঘটনার জেরে শিয়ালদহ এবং শহরতলির বিভিন্ন স্টেশনে হাজার হাজার যাত্রী বিপাকে পড়েন। অনেকেই দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরে ট্রেনের আশা ছেড়ে সড়কপথে রওনা দেন। শিয়ালদহ স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ অসহায় অবস্থায় প্ল্যাটফর্মে ভিড় করেছেন। ট্রেনের সময়সারণির বৈদ্যুতিন বোর্ডে ট্রেনের নাম ও সময়, প্ল্যাটফর্ম নম্বর ফুটে উঠছে। কিন্তু ট্রেন ছাড়ছে না। হারাধন মণ্ডল নামে বেলডাঙার এক বাসিন্দা বলেন, “কলকাতা থেকে জিনিসপত্র কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। স্টেশনে এসে শুনলাম, দুর্ঘটনায় ট্রেন বন্ধ। কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না।”
একই রকম অভিজ্ঞতা অন্য রুটের যাত্রীদেরও। মায়ের চিকিৎসা করাতে নীলরতন সরকার হাসপাতালে এসেছিলেন বনগাঁর সুবোধ রায়। ট্রেন না-থাকায় প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চেই মাকে শুইয়ে রাখেন তিনি। অনেক মহিলা কচিকাঁচাদের নিয়ে বেঞ্চে জায়গা না-পেয়ে প্ল্যাটফর্মের মাটিতেই বসে থাকেন দীর্ঘ ক্ষণ। দেড় ঘণ্টার মধ্যে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরাটিকে লাইনে তোলার পরে একটি লাইন ছাড়া অন্যান্য লাইনে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বাকি লাইনটি চালু হয় বিকেল ৪টে নাগাদ। ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সুচিত্র দাস বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত হচ্ছে।” রেলের একটি সূত্রের খবর, পয়েন্ট ঠিক ছিল না। সেই কারণেই এই বিপত্তি। |