অর্থনীতি নিয়ে দিল্লির রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে রেটিং ছাঁটাইয়ের হুঁশিয়ারি জিইয়ে রাখল আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ। পাশাপাশি, পুরনো বকেয়া আদায়ের জন্য কর ফাঁকি প্রতিরোধ আইন বলবৎ না করতে কেন্দ্রের উপর বিদেশি লগ্নিকারীদের চাপও অব্যাহত। যার জেরে আসন্ন বাজেটে ভোডাফোনের মতো পুরনো গাঁটছড়ার ক্ষেত্রে করের দাবি থেকে পিছু হটে ওই আইন সংশোধন করারই ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র। এক কথায় ভারতীয় অর্থনীতির উপর আস্থা ফেরেনি আন্তর্জাতিক মহলের।
ফিচের অভিযোগ, সংস্কারের পথে কেন্দ্র পা বাড়িয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার সুফল তেমন চোখে পড়েনি এখনও। পিছু ছাড়েনি বৃদ্ধির ঢিমে গতি, চড়া মূল্যবৃদ্ধি আর মাত্রাছাড়া ঘাটতির ‘ত্র্যহস্পর্শ’। এই ৩ সমস্যা না-মিটলে, এক-দু’বছরে ভারতে টাকা ঢালার ঝুঁকি আরও বাড়বে বলেই মনে করে তারা।
মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর্স-এর হুমকির পর এই পূর্বাভাস গত জুনেই ঘোষণা করেছিল ফিচ। জানিয়েছিল, ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’-এ বদলে দিচ্ছে তারা। হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, পরিস্থিতি না-বদলালে ক্রেডিট রেটিং কমানোর। মঙ্গলবার সেই নেতিবাচক পূর্বাভাস বজায় রেখে রেটিং কমানোর পুরনো হুঁশিয়ারিকেই উস্কে দিল তারা। কেন্দ্র জানিয়েছে, হুঁশিয়ারিতে আদৌ আতঙ্কিত নয় তারা। আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত সচিব অরবিন্দ মায়ারামের দাবি, আশঙ্কার কারণ নেই। কারণ, অর্থনীতির হাল ফেরাতে ঠিক পথেই হাঁটছে কেন্দ্র।
কিন্তু মুখে এ কথা বললেও, এই মুহূর্তে অর্থনীতির নড়বড়ে অবস্থা নিয়ে কেন্দ্র যে কতটা চাপে, তা মায়ারামের বক্তব্যের বাকি অংশেই স্পষ্ট। দুনিয়ার বিশ্বাস যে এখনও অর্জন করা যায়নি, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। স্বীকার করেছেন, ঘাটতিতে লাগাম পরানোর বিষয়ে এখনও আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি কেন্দ্র। তবে তাঁর দাবি, চলতি অর্থবর্ষের শেষে রাজকোষ ঘাটতি ৫.৩ শতাংশে বেঁধে রাখা সম্ভব হবে। এই চাপে থাকার বিষয়টিই স্পষ্ট কর ফাঁকি প্রতিরোধ আইন (জিএএআর) নিয়ে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক ‘অবস্থানে’ও। অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, বিদেশি লগ্নিকারীদের আস্থা জয়ের লক্ষ্যে সোম কমিটির রিপোর্ট মেনে আসন্ন বাজেটে ওই আইন সংশোধন করতে পারে তারা। তা হলে আইনটি প্রণয়নের আগে হওয়া সমস্ত গাঁটছড়া এর আওতার বাইরে থাকবে। কেন্দ্র মনে করে, এতে দাঁড়ি পড়বে কর নিয়ে ভোডাফোন বিতর্কের উপর। বিদেশি লগ্নিকারীদের আস্থাও ফিরবে। আর তার হাত ধরে গতি ফিরবে বৃদ্ধির চাকাতেও। |