এ বার রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য মেলা ‘বেঙ্গল লিডস ২’- হতে চলেছে হলদিয়ায়। তারই প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দিতে মঙ্গলবার শিল্পশহরে এলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। টাউনশিপে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) অতিথিশালা ‘হলদিয়া ভবনে’ এই বৈঠকে পার্থবাবু ছাড়াও ছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা এইচডিএ-র চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী, শিল্পোন্নয়ন নিগমের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সুদীপ দাস, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর প্রদ্যুত বিশ্বাস, জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি, জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন প্রমুখ।
আগামী ১৫ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী এই শিল্প-বাণিজ্য মেলা। মেলার খুঁটিনাটি নিয়েই এ দিন আলোচনা হয়। বেলা ১২টা থেকে টানা দেড় ঘন্টা বৈঠক চলে। পরে পার্থবাবু সাংবাদিকদের বলেন, “শিল্পপতিরা এত বেশি উৎসাহী যে সব স্টল বুক হয়ে গিয়েছে। মেলার জন্য বারোশো আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হবে। প্রতিদিনই থাকবে সেমিনার। ১৭ জানুয়ারি শেষ দিনে রাজ্যপালকে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।” হলদিয়াকেই ‘ডেস্টিনেশন’ করার কারণ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, “হলদিয়া নতুন শিল্প বিনিয়োগের গন্তব্য হচ্ছে। এখানে জমি, পরিকাঠামো, পরিবেশ সবই রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে এই শিল্পশহরে দু’ঘন্টায় পৌঁছে যাওয়া যায়। সে জন্যই শিল্পপতিরা এই জায়গা ব্যবহার করতে চাইছেন।” রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে আশাবাদী শিল্পমন্ত্রীর মতে, রাজ্যে ২২২টি শিল্পসংস্থার প্রস্তাবিত প্রকল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রায় ১ লক্ষ ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। প্রায় ৩ লক্ষ ৯ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে। |
এই শিল্প-বাণিজ্য মেলা হবে হলদিয়া হেলিপ্যাড ময়দানে। এই শহরে কলকাতার মিলন মেলা বা সায়েন্স সিটির নির্দিষ্ট কোনও অনুষ্ঠানের জায়গা না থাকায় আক্ষেপ করেন পার্থবাবু। সেই সঙ্গে জানান, নির্দিষ্ট হল না থাকায় তাঁবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার হবে। ২১০টি শিল্পসংস্থা যোগ দেবে এই মেলায়। টাটা গোষ্ঠীও কি আসছে? শিল্পমন্ত্রীর জবাব, “আমরা প্রত্যককেই আমন্ত্রণ জানিয়েছি।” হলদিয়া পেট্রোকেমের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, “এইচপিএলের বোর্ড মিটিং না হলে কিছু বলা যাবে না। এতদিন অবহেলায় পড়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আর্থিক হাল ফেরানোর ব্যবস্থা করেছেন। ইক্যুইটি ট্রান্সফার করে আমরা বিআইএফআর-এ যাওয়া বাঁচিয়েছি।” গত শনিবার নন্দীগ্রামের কাছে চণ্ডীপুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সমাবেশে বিপুল জনসমাগম নিয়েও এ দিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি পার্থবাবু। তিনি বলেন, “তিনি (বুদ্ধবাবু) কোথাও যান না। নন্দীগ্রামের মানুষের উপর যখন গুলি চলেছিল, তখনও তিনি যাননি। ভাঙা কোমরে বাইকে চড়লে জননেতা হওয়া যায় না। এক দিনের নোটিসে শুভেন্দু ওখানে দশ গুণ মানুষ জমায়েত করে দেখিয়ে দিয়েছেন।” সাম্প্রতিক কালে বেশ কিছু ঘটনায় বামেদের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলেরই কেউ কেউ জড়িত বলে এ দিন পরোক্ষে অভিযোগ করেন শিল্পমন্ত্রী। কারও নাম না করে তিনি বলেন, “আমাদের কেউ কেউ বেড়ালকে বাঘ বানানোর চেষ্টা করছে।” এ ক্ষেত্রে তিনি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, কবীর সুমন, শিউলি সাহার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিমত। |