লোকসভা নির্বাচনের আর চোদ্দ মাস বাকি। তার আগে কংগ্রেস যখন এখন থেকেই ‘পপুলিজমের’ পথে হাঁটতে চাইছে, তখন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। রাজকোষ ঘাটতির কারণ দেখিয়ে তিনি সবুর করতে বলছেন কংগ্রেসকে। কংগ্রেস ও সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা ৬টি থেকে বাড়িয়ে ৯টি করা থেকে শুরু করে ইন্দিরা আবাস যোজনায় আরও অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব, সবেতেই আপত্তি জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এই অবস্থায় এখন সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপ দাবি করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক শীর্ষ সারির মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা আজ জানান, ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা সিলিন্ডারের সংখ্যা ৬টি থেকে বাড়িয়ে ৯টি করার জন্য এক প্রকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে কংগ্রেস। এমনকী কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলিও তাই চাইছেন। এই মর্মে ক্যাবিনেট নোট প্রস্তুত করে সচিবালয়ের কাছে পাঠিয়েছেন মইলি। কিন্তু চিদম্বরমের বক্তব্য, সরকার এই সিদ্ধান্ত নিলে ভর্তুকি বাবদ খরচ বাড়বে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকা। তা বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির অনুকূল নয়। বরং ভর্তুকির বোঝা ও আর্থিক ঘাটতি কমাতে ডিজেলের দাম অন্তত ২-৩ টাকা ও রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৫০-৭৫ টাকা বাড়ানোর পক্ষে অর্থমন্ত্রী।
একই ভাবে ইন্দিরা আবাস যোজনার আওতায় গরিব পরিবার পিছু গৃহ নির্মাণের জন্য অনুদান এক ধাক্কায় ৩০ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবেও আপত্তি জানাচ্ছেন চিদম্বরম। কাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তার আগেই চিদম্বরমের বক্তব্য, কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত নিলে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে কেন্দ্রের। ফলে তা পিছিয়ে দেওয়া হোক।
ইন্দিরা আবাস যোজনার আওতায় বর্তমানে গরিব পরিবারগুলির গৃহনির্মাণের জন্য ৪৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রস্তাব ছিল তা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করার। সেই সঙ্গে আরও ৯ হাজার টাকা দেওয়া হোক শৌচাগার নির্মাণের জন্য। কিন্তু ওই অতিরিক্ত ৯ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব অনেক আগেই খারিজ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। বরং অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য ছিল, পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থার জন্য কেন্দ্রের চলতি প্রকল্পকে ইন্দিরা আবাস যোজনার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হোক। আর এখন চিদম্বরম ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে অনুদান বাড়াতেই অনীহা দেখাচ্ছেন। এই অবস্থায় অবশ্য একটা মধ্যপন্থা বার করতে চাইছে যোজনা কমিশন। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ার বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট যোজনার আওতায় গরিব পরিবারগুলির গৃহনির্মাণের জন্য অনুদান বর্তমানের ৪৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫ হাজার টাকা করা হোক। পার্বত্য এলাকায় গৃহনির্মাণের জন্য অনুদান করা হোক ৭০ হাজার টাকা। |