কেন্দ্রীয় ভূমি ও জল বোর্ডের পূর্বচক্র কলকাতার উদ্যোগে কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে গ্রামস্তরীয় ভূগর্ভস্থ জল পরিকল্পনা বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ শিবির শেষ হল মঙ্গলবার বিকেলে। অনুষ্ঠানে সংস্থার বিজ্ঞানীরা রাজ্যের শস্যগোলা বর্ধমানে ক্রমশ নামতে থাকা জলস্তর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
দু’দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, কৃষি দফতরের কর্মী, ব্লক অফিসের কর্মী এবং গভীর নলকূপের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা বিজ্ঞানীদের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। অনুষ্ঠানে ছিলেন পূর্বচক্রের নির্দেশক জে সি পতি, বিজ্ঞানী সঞ্জীব চক্রবর্তী, সুপ্রিয় ব্রহ্ম, কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তি চাল, কালনা ১ ব্লকের বিডিও অলিভিয়া রায় প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানীরা জলস্তর নেমে আসার কারণ হিসেবে কম বৃষ্টিপাত, বোরো চাষের জন্য যথেষ্ট জল তোলা-ইত্যাদির উল্লেখ করেন। তারা জানান, যে পরিমাণ মিষ্টি জল চাষের জন্য তোলা হচ্ছে তা পূরণ হচ্ছে না। ফলে প্রতি বছরই জলস্তর ক্রমশ নেমে যাচ্ছে। জেলার ব্লকগুলির মধ্যে ভাতারে সবচেয়ে দ্রুত জলস্তর নামছে বলে তাঁরা জানান। এ ছাড়া কালনার সিঙ্গেরকোন, বন্দেবাজ, সিমলন-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার জলস্তর পরিস্থিতি প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয়। সংস্থার বিজ্ঞানী ইন্দ্রনীল রায় বলেন, “বৃষ্টির জল কতটা মাটির তলায় ঢুকছে তার উপর জলস্তরের ওঠা-নামা নির্ভর করে। গভীর নলকূপ বসানোর সময় আগে সেখানকার জলস্তরের পরিস্থিতি দেখে নেওয়া উচিত।” তিনি আরও জানান, মাটির তলার জল বেশি পরিমাণে তুলে নেওয়ায় পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকে আর্সেনিক সমস্যা বেড়েছে। |
তাই আর্সেনিক সমস্যা আছে এমন এলাকার মানুষকে কুয়ো খনন করে জল পানের পরামর্শ দেন তিনি। অনুষ্ঠানের পর আরেক বিজ্ঞানী বলেন, “একটা গভীর নলকূপ থেকে আরেকটি গভীর নলকূপের দূরত্ব কিলোমিটার খানেক হওয়া উচিত।” কিন্তু এই বিধি না মেনে বহু জায়গাতেই গভীর নলকূপ খনন করা হচ্ছে। ফলে মাটির তলায় জলস্তরে চাপ পড়ছে। এই সংস্থারই আর এক বিজ্ঞানী শেখ মহদুদ হোসেন বলেন, “যাঁরা প্রশিক্ষণ নিলেন তাঁদের জলস্তর বিষয়ে একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় স্তরে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকায় এলাকার কোন কোন জায়গায় পানীয় জলের টিউবওয়েল-সহ জলপ্রকল্প করতে পারা যাবে সে সম্বন্ধে প্রশিক্ষিতেরা মতামত দিতে পারবেন। প্রশিক্ষকদের পরবর্তী সময়ে কাজে লাগানোর ব্যাপারেও সংস্থার ভাবনা-চিন্তা রয়েছে।” |