টিএমসিপি-র দুই বা ততোধিক গোষ্ঠীর মধ্যে ভোটযুদ্ধ হল বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজে। মঙ্গলবার এই কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছিল। এসএফআই কোনও প্রার্থী না দিলেও ৩৮টি আসনের জন্য টিএমসিপি-র মোট ৮১ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। টিএমসিপি সূত্রে জানা যায়, পাঁচটি আসনে সংগঠনের জেলা সভাপতি অশোক রুদ্রের অনুগামীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন। বাকি ৩৩টি আসনে দুই থেকে চারটি করে গোষ্ঠী আলাদা আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। অশোকবাবুর দাবি, “সব আসনেই সংগঠন অনুমোদিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। টিএমসিপি-র নাম করে এক দল লোকের গণ্ডগোল পাকানোর চক্রান্ত কাজে আসেনি।”
তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কলেজের ভোট নিয়ে টিএমসিপি-র চারটি গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিল। তা মেটাতে জেলার তৃণমূল নেতা রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন দেবনাথ বারবার বৈঠকও করেন। সংগঠন অনুমোদিত প্যানেলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলে কড়া ব্যবস্থা হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও অশোকবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন ভোট থেকে সরে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ।
এই কলেজের ভোটে গণ্ডগোল পাকানোর আশঙ্কায় সোমবার রাতে পুলিশ স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনন্ত পাল, খোকন শীল-সহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কলেজে গোলমাল পাকাতে পারে এই আশঙ্কায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে এ দিন ব্যক্তিগত মুচলেকা দিয়ে জামিন পান তাঁরা।”
বর্ধমানের তৃণমূল নেতা মেহবুব আলমের দাবি, “চাপ দিয়ে সংগঠনের সরকারি প্যানেলের বিরোধী প্রার্থীদের সরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৩ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। তবে এক দিকে তা ভালই হয়েছে। তা না হলে কোনও না কোনও ভাবে তাঁদের গণ্ডগোলে নাম জড়িয়ে দেওয়া হত।” অশোক রুদ্র-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের এ দিন কলেজে দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেতা সন্তু ক্ষেত্রপালের দাবি, “কলেজে প্রচুর পুলিশ ছিল। আমরা কলেজে গেলেই গ্রেফতার করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ঝামেলায় না জড়াতেই অশোক রুদ্রের বিরোধী গোষ্ঠীর কেউ কলেজে যাননি। ফলে এক তরফা ভাবে সরকারি প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হল।” |