নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মোরাদাবাদের অখ্যাত এক গ্রাম। নাম সাহসপুর। উত্তরপ্রদেশের ম্যাপেও খুঁজে বের করতে কষ্ট হবে। কিন্তু সেই অখ্যাত গ্রামও যে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাবে, কে জানত?
ভোর থেকে গ্রাম লোকে-লোকারণ্য। কাতারে-কাতারে লোক হেঁটে চলেছেন দিল্লি-লখনউ রোড ধরে। কেন? না, নায়ক আসছেন।
মহম্মদ সামি আসছেন!
সামি বাংলার হয়ে খেলেন বটে, কিন্তু আদতে তিনি উত্তরপ্রদেশের। এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিষেকেই ৯ ওভারে ৪ মেডেন দিয়ে ২৩ রানে একটি উইকেট। কোটলায় তাঁর ওভারের আগে পর্যন্ত ম্যাচে ভাল রকম ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ৪৮তম ওভারে তাঁর মেডেন উইকেট ম্যাচের রংই পাল্টে দেয়। যা নিয়ে সামি বলছেন, “ওয়াসিম ভাইয়ের (আক্রম) ছোট ছোট কিছু পরামর্শে আমার অনেক উন্নতি ঘটেছে। রিভার্স সুইং উনি আমাকে শিখিয়েছেন।” সঙ্গে সামির আরও সেংযাজন, “গম্ভীর আবার বলেছে, নতুন বলে ঠিক কোন লাইনে বল করলে ওপেনাররা সমস্যায় পড়বে। নেটে আমাকে দেখিয়েও দিয়েছে।” |
ঘরে ফেরা। আমরোহায় বন্ধুদের মাঝে সামি। সোমবার। ছবি: পিটিআই
|
সাহসপুরের উন্মাদনাও এর পর আর রোখে কে?
গ্রামে বিদ্যুৎ আছে ঠিকই, কিন্তু সব সময় তা থাকে না। রবিবার সকাল থেকেই সাহসপুরে ঢুকতে থাকে একের পর এক জেনারেটর! ভারত বল করার সময় কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সেগুলো চালিয়েও দেওয়া হয়। সোমবার দিল্লি থেকে সোজা মোরাদাবাদ চলে যান সামি। কিন্তু বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে সন্ধে পার। হবে না? মাঝরাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁকে মালা পরানো হয়েছে, গাড়ির সামনে কনভয়ের মতো চলেছে শ’য়ে শ’য়ে বাইকের মিছিল। আরও আছে। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে রীতিমতো ‘ডিজে’ নিয়ে উপস্থিত হন প্রতিবেশিরা। এবং তাঁর গাড়ি দাঁড় করিয়ে চলে ঘণ্টাখানেকের শো। সন্ধেয় সামির কোচ বদরুদ্দিন উত্তরপ্রদেশ থেকে ফোনে বলছিলেন, “আরে, আমি পর্যন্ত ওর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে পারিনি। চার দিকে এত ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি। ও নিজেও কাহিল।”
শুধু একটাই যা খচখচানি। ভারতের হয়ে সামি আহমেদ নাম নিয়ে খেললে কী হবে, সিএবি, ক্লাব ক্রিকেট সব জায়গাতেই তাঁর নাম মহম্মদ সামি। এবং নাম-বিভ্রাটে একটু হলেও নায়কের মনখারাপ। ভারতের হয়ে প্রথম ম্যাচটাই কিনা অন্য নামে খেলতে হল! |