কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরে ঠান্ডায় চেয়ারে বসে তিনি বর্ষশেষের রাত কাটিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের এই বিদেশিনীকে নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে কার্যত জেরবার রাজ্য পুলিশ। সঙ্গে বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকায় গ্রেফতার করা যায়নি। অভিযোগও নেই। অথচ দু’পকেট উল্টে দিয়ে বিদেশিনী জানান, তাঁর কাছে কানাকড়িও নেই। তাঁকে ফেরত পাঠানো নিয়ে চলছিল বিস্তর দৌড়ঝাঁপ। শেষে রবিবার রাতে তিনি ফিরে যান সিঙ্গাপুর।
৪৫ বছরের অ্যান্তনি জেনিফার পুলিশকে খোলসা করে কিছু বলেননি। পুলিশের দাবি, তাঁর কথায় অসঙ্গতি আছে। কেন তিনি মাত্র দু’হাজার টাকা নিয়ে ভারতে বেড়াতে এলেন তার সদুত্তরও মেলেনি। দিল্লিতে সিঙ্গাপুর দূতাবাসের অফিসার ট্যান বলেন, “ওঁর সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য আমাদের কাছেও নেই।” তাঁকে দেশে ফেরাতে রবিবার সিঙ্গাপুর থেকে আসে সে দেশের পুলিশ।
জেনিফার জানান, গত ২২ ডিসেম্বর তিনি দিল্লি আসেন। সঙ্গে ব্যাগ ছিল না। পরনে কয়েকটি টি-শার্ট, স্ল্যাক্স। উপরের টি-শার্ট, স্ল্যাক্স নোংরা হয়ে গেলে খুলে ফেলে দিচ্ছিলেন। সঙ্গে সাকুল্যে ১৫০০-২০০০ টাকা! এত কম টাকা নিয়ে কেন এলেন? জেনিফারের উত্তর, “ঘুরতে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম, টাকা ফুরোলে অস্থায়ী চাকরি করে টাকা তুলে দেশে ফিরব।” দিল্লি থেকে বাসে অমৃতসরে পৌঁছেই টাকা ফুরোয়। স্বর্ণমন্দিরে বিনা পয়সায় দিন কয়েক থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হলেও মন্দির থেকে বেরিয়ে বিপদে পড়েন। উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে দেখে তাঁকে নিয়ে যায় পঞ্জাব পুলিশ। জেনিফার কলকাতায় আসতে চান জেনে তারাই ট্রেনের টিকিট কেটে দেয়।
জেনিফার কলকাতায় আসেন ৩১ ডিসেম্বর। স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে বাসে বিমানবন্দর। তিনি জানান, রাত কাটে বিমানবন্দরের বাইরে। কেউ বিস্কুট, কেউ চা খাওয়ান। পর দিন সকালেই খবর পেয়ে থানায় নিয়ে যায় বিমানবন্দর পুলিশ। কলকাতায় সিঙ্গাপুরের দূতাবাস না থাকায় দিল্লিতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানানো হয়। বিধাননগর পুলিশের অতিরিক্ত ডিসি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “কিছু না কিছু রহস্য রয়েছে।” তবে কি মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন জেনিফার? নিম্বালকারের কথায়, “কারও সঙ্গে বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকলে তাঁকে কী করে আপনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলবেন?” |