|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
‘বাকি’ নহে, ‘পাকি’ |
বইপোকা |
‘অভয় দাও তো বলি আমার উইশ কি?— একটি ছটাক সোডার জলে বাকি তিন পোয়া হুইস্কি’। ‘চিরকুমার সভা’য় এই নাকি লিখিয়াছিলেন রবীন্দ্রনাথ! অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা প্রসঙ্গে লিখিয়াছেন জগন্নাথ বসু, তাঁহার সম্প্রতি-প্রকাশিত পরচর্চা (সপ্তর্ষি) গ্রন্থে। স্মৃতিগুলি চমত্কার, কিন্তু বিস্মৃতির পরিমাণও অত্যল্প নহে। রবীন্দ্রনাথের রচনা হইতে উদ্ধৃত করিতে হইলে মূলের অনুগত থাকিতে হইবে। ‘উইশ কি’ নহে ‘Wish কী’ এই পার্থক্য না হয় ছাড়িয়া দিলাম, ‘পাকি’কে ‘বাকি’ করিয়া দিলে সকলই যে সোডার জল হইয়া যায়! বিশেষ করিয়া যে লেখক সত্যজিত্ রায় কেন ‘জন অরণ্য’ ছবিতে রেডিয়োকে সোর্স হিসাবে ব্যবহার করিয়াও ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’ রবীন্দ্রসঙ্গীতে ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করিলেন সেই প্রশ্ন সত্যজিতেরই নিকট উত্থাপন করেন এবং তাঁহার উত্তরটি পছন্দ না হওয়ায় সেই ঘটনার স্মৃতিচারণে বিখ্যাতদের অসহিষ্ণুতা লইয়া দীর্ঘ ভূমিকা করেন তাঁহার লেখনী হইতে এমন সূক্ষ্ম বিচ্যুতিও কাম্য নহে। সুখপাঠ্য এই গ্রন্থে এমন সূক্ষ্ম প্রমাদ বেশ কয়েকটি। বেশ কিছু উদ্ধৃতির কোনও উত্সের হদিশ নাই। স্মৃতিচারণাতেও কিন্তু উত্স না থাকিলে তাহার অথেন্টিসিটি নষ্ট হয়। বিশেষ করিয়া গ্রন্থের প্রথম ব্লার্বের প্রথম বাক্যটিই হাস্যকর, ‘কেউ ভোলে কেউ ভোলে’। সকলেই জানেন উহা হইবে ‘কেউ ভোলে না কেউ ভোলে’। তদুপরি কেন এ গ্রন্থে কিছু ব্যক্তিত্বের স্কেচ আছে, কিছু ব্যক্তিত্বের নাই তাহাও বুঝা গেল না। আসলে গ্রন্থ লিখিবার, তাহা ছাপাইবার, তাহা লইয়া বেশ প্রচারিত হইবার বড় বিষম তাড়া এখন পড়িয়াছে বইপাড়া এবং কতিপয় লেখকের। ইহাতে রাশি রাশি ভুল আবর্জনার ন্যায় জমে, কাজের কাজ কিছু হইয়া উঠে না। |
|
|
|
|
|