জেলাশাসক থেকে শুরু করে জেলার দুই মন্ত্রীর কাছে দরবার করেও আশ্বাস না পেয়ে শতাধিক কর্মপ্রার্থী অনশন শুরু করেছেন। বুধবার সকাল থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী পদে পরীক্ষা দেওয়া ওই প্রার্থীরা অনশন শুরু করেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেও প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী নিয়োগের প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তা বাতিলের দাবি তুলেছেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ২০০৯ সালে মালদহ জেলা পরিষদ এবং জেলার নানা গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯৩ জন পঞ্চায়েত কর্মীর পদে নিয়োগে বিজ্ঞাপন দেয়। ২০১০ সালে ৪ জুলাই পঞ্চায়েত-কর্মী পদে জেলার ২৯ হাজার যুবক-যুবতী পরীক্ষা দেন। এর এক বছর পর ২০১১ সালে অগস্টে লিখিত পরীক্ষার ফল বেরোয়। ৬১৬ জন পাশ করেন। জেলাশাসক মৌখিক পরীক্ষার জন্য সাত জনের একটি কমিটি তৈরি করেন। তাতে অতিরিক্ত জেলাশাসকদের মতো সরকারি আধিকারিকেরা ছাড়াও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, বিরোধী দলনেতাও ছিলেন। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে মৌখিক পরীক্ষা হয়। কিন্তু তার পরে আর চূড়ান্ত কোনও তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
জেলশাসক শ্রীমতী অর্চনা বলেন, “কবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে বলতে পারব ন। সংশ্লিষ্ট দফতর তা দেখছে।” মালদহ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, জেলা কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক মোস্তাক আলম বলেন, “পঞ্চায়েতকর্মী নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকা বার করতে আইনগত বাধা নেই। জেলার দুই মন্ত্রীর নির্দেশে জেলাশাসক তালিকা প্রকাশ করছেন না। পরীক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে।” জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রীদেবী এবং কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “ওই চাকরির জন্য কর্মীপ্রার্থীদের অনেকেই জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ ও আধিকারিকদের টাকা দেন। ২-৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অনেককে পাশ করানো হয়েছে। আমাদের সরকার কারও থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দেবে না। যোগ্যরাই চাকরি পাবেন। তাই মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে ফের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মোস্তাক আলম জানান, ৫০ নম্বরের পরীক্ষায় ৪৩ নম্বরই ছিল লিখিত পরীক্ষা। মৌখিক পরীক্ষা ছিল ৭ নম্বরের। মৌখিক পরীক্ষার কমিটি জেলাশাসকই তৈরি করেন। তাতে ৪ জন সরকারি আধিকারিক ছিলেন। ৭ নম্বর দিয়ে কাউকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া যায় না। যাঁরা এই অভিযোগ তুলছেন তাঁরা প্রমাণ করুন টাকা কারা, কী ভাবে, কাদের কাছ থেকে নিয়েছেন। |