কুমারগ্রামের বধূর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় যুক্ত তান্ত্রিকের খোঁজে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তান্ত্রিকের তিনটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পারেন, অসমের বিভিন্ন এলাকায় তান্ত্রিকের গতিবিধি রয়েছে। তবে তার বাড়ি ঠিক কোথাও তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। দ্রুত কুমারগ্রাম থানার একটি পুলিশ দল অসমে যাচ্ছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ওই তান্ত্রিকের খোঁজে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তদন্ত চলছে। আশা করছি, তান্ত্রিককে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তান্ত্রিকের নাম সমরজিৎ সিংহ। মাঝবয়সী ওই তান্ত্রিক আগেও মৃতার শ্বশুড়বাড়িতে এসেছিলেন। সে সময় তিনি নিজেকে অসমের বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন। বাংলা এবং হিন্দি মিশিয়ে তিনি কথা বলেন। ২০১১ সালে মৃতার গ্রেফতার হওয়া ননদ দ্রৌপদীর সঙ্গে মিসড কলের সূত্র ধরে সমরজিতের পরিচয় হয়। তাদের বারবিশায় দেখাও হয়। তার পর দ্রৌপদীকে তিনি নিজের বোন হিসাবে ঘোষণা করে বাড়িতে যাতায়াত করতেন। এমনকী, দ্রৌপদীর পেটের রোগ এবং ওই পরিবারের আরেক জনের টিউমারের চিকিৎসা করেন। এরই মধ্যে দ্রৌপদীর দাদা সুকুমার রায়ের টিউমার হয়। তার চিকিৎসা করতে সমরজিৎ কুমারগ্রামে শেষ বার ১৪ ডিসেম্বর কুমারগ্রামের বিডিও অফিস পাড়ার ওই বাড়িতে আসেন। পরে বন্ধ ঘরে পুজোর নামে সুকুমারের স্ত্রী সঙ্গে তিনদিন সহবাস করেন। এই কাজে অভিযুক্তরা তাঁকে মদত দেন বলে অভিযোগ। তিন দিন পর আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন ওই বধূ। গত মাসের শেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর মা গত বুধবার অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরে পুলিশ মৃতার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ননদকে ধরে। এ দিন ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন।
ঘটনার খবর চাইর হতেই অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হয় রাজনৈতিক দলগুলি। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পিন্টু গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “এমন পৈশাচিক ঘটনা মানা যায় না। তান্ত্রিকের সাজা চাই।” প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার, তৃণমুল কংগ্রেসের পক্ষে দুলাল দে বলেছেন, “অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি পুলিশকে জানানো হবে।” একই দাবি কামাখ্যাগুড়ির নাগরিক মঞ্চ সম্পাদক পলাশ দে-র। |