ধর্মঘট স্বতস্ফূর্ত, বলছে ডিএসও
ছাত্র ধর্মঘটে মিশ্র সাড়া উত্তরবঙ্গের
সইউসি-র ছাত্র সংগঠনের ডাকা ছাত্র ধর্মঘটের মিশ্র সাড়া মিলল উত্তরবঙ্গে। দিল্লির গণধর্ষণের প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রীদের নিরাপত্তার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়েই ছাত্র ধর্মঘট ডাকে ছাত্র সংগঠন ডিএসও। ধর্মঘটের জেরে জলপাইগুড়ির বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ ছিল। পঠনপাঠন হয়নি শিলিগুড়ির একাংশ স্কুলেও। বন্ধ ছিল শিলিগুড়ি কলেজও। কোচবিহারে স্কুলের পাশাপাশি কলেজের গেটেও বনধ সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তবে মালবাজার, ইসলামপুরে এদিন ধর্মঘটের তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে এদিনের ধর্মঘটে বেশিরভাগ স্কুলেই যেমন স্বাভাবিক পঠনপাঠন বিঘ্নিত হয়েছে, পাশাপাশি পড়ুয়াদের পাঠ্য পুস্তক বিলি করা এবং ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া ব্যহত হয়েছে। বুধবার থেকেই রাজ্য জুড়ে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে, বেশ কিছু স্কুল এদিন বৃহস্পতিবার থেকেও খোলার কথা ছিল বলে জানা গিয়েছে। এদিন বনধের জেরে শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই পঠনপাঠন বন্ধ থাকল সেইসব স্কুলগুলিতে।
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
ডিএসও তরফে অবশ্য এদিন স্বতস্ফুর্ত ধর্মঘট হয়েছে বলে দাবি করা হলেও, বেশ কিছু এলাকায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ডিএসওর রাজ্য সভাপতি সুজিত ঘোষ বলেন, “উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা জোর করে ধর্মঘট ভাঙতে চেষ্টা করে। মেডিক্যাল কলেজে তৃণমূলের সমর্থকরা জোর করে ছাত্র ছাত্রীদের কলেজে ঢুকিয়ে দেয়। এছাড়া সর্বত্র স্বতস্ফুর্ত সাড়া মিলেছে। রাজ্যের সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা ধর্মঘটের বিষয়কে সমর্থন জানিয়েছেন এবং ডিএসওর নেতৃত্বে রাজ্যে নতুন ধারার যে ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছে, তাও এই ধর্মঘট থেকে প্রতিষ্ঠিত।” ডিএসও’র দাবি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যল কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা জোর করলেও কী কারণে এই ঘর্মঘট তা তারা ওই পড়ুয়াদের বোঝান। এর পর তারা আর ক্লাস করেননি। ক্লাস হয়নি উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালেও। তবে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা শুভায়ু ঘোষ বলেন, “সংগঠনের কেউ গোলমাল করেনি।” কম সংখ্যক পড়ুয়া উপস্থিত হওয়ায় শিলিগুড়ি হার্লস স্কুস, বয়েজ স্কুল, হামিকপাড়া বালিক্য বিদ্যালয়, ঘোঘোমালি হাই স্কুল, মতো অধিকাংমশ স্কুলেই ক্লাস হয়নি। বুদ্ধভারতী স্কুলে অবশ্য অন্যান্য দিনের মতো ক্লাস হয়েছে। বাগডোগরা কলেজও ছিল স্বাভাবিক। ঘোঘোমালি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ সেন রায় জানান, পড়ুয়ারা উপস্থিত না হওয়ায় ক্লাস হয়নি। নতুন শিক্ষাবর্ষে বই পড়ুয়াদের বিলি করা যায়নি। ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার ও কালচিনিতে অনেক স্কুলে বনধ সমর্থনকারীরা না থাকলেও বেশি সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী না আসায় স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে যায়। ইসলামপুরের প্রায় সব স্কুল কলেজ খোলা ছিল। মিশ্র প্রভাব কোচবিহারেও। জেলার বহু স্কুল তো বটেই কলেজেও গেট বন্ধ করে রাখে বনধ সমর্থকরা। কোচবিহার সরকারি স্কুলগুলিতেও ক্লাস হয়নি। শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই বনধের সমালোচনা করেছেন শিক্ষানুরাগী মহল। জলপাইগুড়ির একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধীরাজমোহন ঘোষ বলেন, “শুরুতেই শিক্ষা বছর একদিন পিছিয়ে গেল। এটা কাম্য নয়। তবে যে বিষয়ে বনধ সেটি স্পর্শকাতর।” রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “শুক্রবার থেকে শুরু উচ্চমাধ্যমিকের প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষার প্রস্তুতিপর্বও থমকে গিয়েছে।”
শিলিগুড়ির কাছারি রোডে ডিএসওর বিক্ষোভ। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
প্রতিবাদ। দিল্লিতে গণধর্ষণের প্রতিবাদে কার্যত বনধের চেহারা নিল কালচিনি ব্লক। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কালচিনি-জয়গাঁ রুটে গাড়ি চলাচল ছিল বন্ধ। এদিন ডিএসওর তরফে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলেও কালচিনিতে ছাত্ররা দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় কালো পতাকা লাগিয়ে দেয়। কালচিনি থানার ওসি রিংচেন লামা ভুটিয়া জানান, ছাত্রছাত্রীরা এ দিন দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে কালো পতাকা লাগান। জয়গাঁ, কালচিনি ব্যবসায়ী সমিতিও ওই প্রতিবাদে সামিল হয়ে দোকানপাট বন্ধ রাখেন। আলিপুরদুয়ার তরাই ম্যাক্সি ট্যাক্সি ওর্নাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক দেবাঙ্কুর দে জানান, হাঁসিমারা ও দলসিং পাড়ার কাছে রাস্তায় কালো পতাকা দেখে কর্মীরা জানতে পারেন দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদ হচ্ছে। তাঁরা গাড়ি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.