|
|
|
|
এড়ালেন প্রধানমন্ত্রীকে |
মমতার সৌজন্য নিয়ে ক্ষোভ কংগ্রেসে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিমানবন্দরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে স্বাগত বা বিদায় কোনওটাই জানালেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই গাড়িতে চেপে মুখ্যমন্ত্রী গেলেন তাঁকে বিদায় জানাতে।
মমতার এই আচরণে বেজায় অসন্তুষ্ট কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি কোনও রাজ্য সফরে গেলে মুখ্যমন্ত্রীরা অন্তত তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এটা শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে। সাম্প্রতিক কালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা বা গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় সেই সৌজন্য দেখিয়েছেন। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “মমতাই হয়তো শুধু ব্যতিক্রম। যিনি কোনও প্রোটোকল বা শিষ্টাচার মানেন না।” এ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কোনও কর্তা বা কংগ্রেস নেতারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তৃণমূল সূত্রে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, গত কাল প্রধানমন্ত্রী যখন কলকাতায় পৌঁছন তখন ভারত-পাক ক্রিকেট টিমের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান ছিল। ফলে তাঁর পক্ষে বিমানবন্দরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনাচক্রে, আজ রাষ্ট্রপতি কলকাতা ছাড়ার মোটামুটি আধ ঘণ্টার মধ্যেই রওনা হয় প্রধানমন্ত্রীর বিমানও। কিন্তু এই সময়টুকু মমতা আর মনমোহনের জন্য বিমানবন্দরে অপেক্ষা করেননি। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দিতে ইডেনে যাওয়ার তাড়া ছিল মুখ্যমন্ত্রীর।
স্বভাবতই, এই সমস্ত ব্যাখ্যায় আমল দিচ্ছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর এমন আচরণ এই প্রথম নয়। কলকাতা সফরে গিয়ে মনমোহন সিংহের এমন অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে। মমতা যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখনও এক বার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে তিনি বিমানবন্দরে যাননি। কারণ, সেখানে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
মনমোহনের বাচনভঙ্গি নকল করে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি করেছিলেন মমতা। ইউপিএ ছাড়ার পর বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চে আজই প্রথম দেখা হল দু’জনের। মঞ্চে পাশাপাশি বসলেও দু’জনে কথা বলেছেন হাতে গোনা। মমতা আবার নিজে বলতে উঠে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন। মনমোহনের আগমন থেকে প্রস্থান, আগাগোড়া এই শৈত্যই বজায় রেখে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। অথচ প্রণবববাবুর (যাঁকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা নিয়েই তাঁর আপত্তি ছিল) সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ভাবেই পরোক্ষে চাপ বাড়াতে চাইছেন কংগ্রেসের উপরে। সম্প্রতি দিল্লি সফরে এসে তিনি প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেছেন, প্রণববাবুর সঙ্গে নৈশভোজ বৈঠক করার প্রস্তাবও রেখেছেন। মজার বিষয় হল, রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞান কংগ্রেসের অনুষ্ঠান থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় প্রোটোকল অনুযায়ী তাঁর গাড়িতে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের বসার কথা ছিল। কিন্তু নারায়ণনের আগেই সেই গাড়িতে উঠে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। |
|
|
|
|
|