ভারত পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ নয়, মুরুটিয়ার শিকারপুর সীমান্ত দিনভর মেতে রইল বিএসএফ ও বিজিবি’র প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতায়। শিকারপুর হাই স্কুল মাঠে বৃহস্পতিবার বেলা দু’টোতে খেলা শুরু। কিন্তু পিলপিল করে লোকজন ভিড় জমাতে শুরু করেছিল সেই সকাল থেকে। বিএসএফ অবশ্য দর্শকদের মাঠে ঢোকার অনুমতি দেয় খেলা শুরুর একটু আগে। গোটা খেলা জুড়ে টানটান উত্তেজনা থাকলেও মূল খেলা ও টাইব্রেকার অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। শেষ পর্যন্ত সাডেন ডেথে ৪-৩ গোলে জয়ী হন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা। ওপার বাংলার খেলোয়াড়দের উঠে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানালেন এপার বাংলার অন্তত হাজার চারেক দর্শক। দীর্ঘ প্রায় চার দশক বাদে এমন একটা মূহুর্তের সাক্ষী থাকতে পেরে রীতিমত নস্টালজিয়ায় ভুগছিলেন কুষ্টিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান তথা পেশায় আইনজীবী শফিকুল আলম। |
শফিকুল বলেন, ‘‘আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে শিকারপুরের এই মাঠেই একবার কুষ্টিয়া ও নদিয়া জেলার মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়েছিল। তখন আমার বয়স মাত্র ১২। বাবার সঙ্গে খেলা দেখতে এসেছিলাম। এত বছর বাদে ফের এইরকম একটা ফুটবল ম্যাচ দেখতে দেখতে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দুটো দেশ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু এখনও পর্যন্ত আবেগটা তো একই রকম আছে।”
মুর্শিদাবাদ হেডকোয়ার্টারের অ্যাডিশনাল ডিআইজি রাজ কুমার ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসের কুষ্টিয়া সেক্টরের কম্যান্ডার মহম্মদ ফরিদউদ্দিন বলেন, “বিএসএফ ও বিজেবি’র উদ্যোগে এরকম প্রীতি ফুটবল কিংবা ভলিবল প্রতিযোগিতা মাঝে মধ্যেই হয়ে থাকে। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভাল হয়। সেই লক্ষ্যেই শিকারপুরে এই ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছে বিএসএফ।’’ সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলোতে গত কয়েকদিন ধরেই মুখে মুখে রটে গিয়েছিল এই খেলার খবর। ফলে শিকারপুর তো বটেই। আশপাশের গ্রামগুলো থেকেও খেলা দেখতে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য মানুষ। সকাল সকাল হেঁশেলের কাজ গুটিয়ে খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন স্থানীয় অনেক মহিলাও। তাদের একজন মুকুল দাসের কথায়, “সকাল সকাল রান্নাবান্না সেরেই সোজা মাঠে চলে এসেছি।”
বিজিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচ উপলক্ষে এদিন বাংলাদেশ থেকে মোট ৬০ জনের একটি দল এসেছিল। এপারে কাজিপুর থেকে ফুলবাড়ি সীমান্ত হয়ে ওই দলটি শিকারপুরে এসে পৌঁছয়। |