কোনও রকমে টেনে-হিঁচড়ে ঢুকছে এক-একটা শরীর। ক্লান্ত। অবসন্ন। টিম হোটেলের স্তব্ধতা তখন এতটাই যে, আলপিন পড়লেও বুঝি শব্দ শোনা যাবে।
টিম ইন্ডিয়া ঢুকছে।
নিরাপত্তারক্ষীর কর্ডন দু’পাশে দাঁড়িয়ে। কেউ একটা অটোগ্রাফের খাতা বাড়িয়ে দিলেন গৌতম গম্ভীরের দিকে। গম্ভীর ফিরেও তাকালেন না। যুবরাজ সিংহ—কানে যিনি সর্বদা ইয়ারফোন গুঁজে চলাফেরা করতে ভালবাসেন, তাঁর ইয়ারফোন আজ কোথায়? বন্ধুস্থানীয় কেউ একজন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মেজাজ ঠিক করতে গেলেন। হালকা একটা ইয়ার্কি উড়ে এল ভারত অধিনায়কের দিকে। খুব একটা কাজ হল কী? উত্তরে চিলতে হাসি ছাড়া তো কিছু বেরোল না।
ক্যাপ্টেন কুলের মেজাজ ততক্ষণে যে ‘হট’। মাঠেই তো সেটা বুঝিয়ে গেলেন। |
ব্যাটিংকে দুষলেন, সঙ্গে সিনিয়র ব্যাটস্যানদের তুলোধোনা। ম্যাচ হেরে ধোনি সাফ বলে দিচ্ছেন, “বোলারদের কেন দোষ দেব? পাকিস্তান যে ভাবে শুরু করেছিল, তার পর ওদের আড়াইশোতে আটকে রাখা যথেষ্ট কৃতিত্বের।” একটু থেমে এমএসডি-র এ বার উত্তপ্ত সংযোজন, “কিন্তু আমাদের ব্যাটসম্যানরা কী করল? এ রকম ম্যাচে রান তাড়া করতে নামলে হাতে উইকেট থাকা ভীষণ জরুরি। আজ আমাদের রানরেট খুব ভাল ছিল না। কিন্তু তার পরেও কুড়ি ওভারের পর আমরা যে জায়গায় ছিলাম, সেখান থেকে জিততে হলে তিরিশ ওভারে ১৮০ লাগত। খুব কঠিন কি? তখন আমাদের প্ল্যানিংটা হওয়া উচিত ছিলপরের কুড়ি ওভারে অন্তত ৮০-১০০ তুলব। কিছুই হল না।”
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্তে ভুলচুক আছে বলে মনে করছেন না। ধোনির কথায়, “ওটা ঠিকই আছে।” টিমের জুনিয়র ব্যাটসম্যানদেরও পাশে দাঁড়াচ্ছেন। যেমন বিরাট কোহলি। পরপর ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পরেও নয়। ধোনি ক্ষিপ্ত সিনিয়রদের নিয়ে। নাম করছেন না কারও, কিন্তু বলতেও ছাড়ছেন না। “আমাদের টিম এখন ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখন সিনিয়ররা রান না করতে পারলে জুনিয়ররা কী দেখে শিখবে?” |
|
|
|
|
|
সুরেশ রায়না |
বিরাট কোহলি |
যুবরাজ সিংহ |
ওয়ান ডে |
১৮ |
১৮ |
২ |
ইনিংস |
১৮ |
১৮ |
১ |
রান |
৫১০ |
১০৩২ |
১১ |
সর্বোচ্চ |
৬৫ |
১৮৩ |
- |
গড় |
৩৯.২৩ |
৬৪.৫ |
৯.০০ |
সেঞ্চুরি |
নেই |
৫ |
- |
ম্যাচের পরিসংখ্যান ( ০১ জানয়ারি ২০১২ - ০৩ জানুয়ারি ১৩) |
|
এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। ধোনির মনে হচ্ছে তাঁর টিম ব্যাটিংয়ের ‘এ-বি-সি-ডি’-টাই ভুলতে বসেছে! “আজ দেখুন না। স্পিনারদের ওভারগুলোয় বড় শট খেলতে না গিয়ে জরুরি ছিল স্ট্রাইক রোটেট করা। ক্রিজে টিকে থাকাটাই তখন চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু সেটা কি হয়েছে? পেসারদের ভাল বলগুলোয় অযথা ঝুঁকি না নিয়ে দরকার ছিল স্রেফ ছেড়ে দেওয়া। ব্যাটিংয়ের এই গোড়ার জিনিসগুলো করতে না পারলে টিমে ক’জন ব্যাটসম্যান খেলল, তা দিয়ে কিছু হয় না।” এবং ঝাঁঝ এখানেই কমছে না। “প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের অন্তত একজনের থাকা দরকার। যাতে চাপটা শুষে নেওয়া যায়। এটা খুব স্বাভাবিক যে, ব্যাটিং যত নীচের দিকে নামতে থাকে, ততই কমতে থাকে ব্যাটসম্যানের চাপ নেওয়ার ক্ষমতা।” অদৃশ্য তিরটা কাদের দিকে, আন্দাজ করতে খুব অসুবিধা হয় না।
অতঃকিম? তা হলে কি এ বার ব্যাটিং-ধাঁধার উত্তর খুঁজতে বসবেন? “দেখুন, ম্যাচের পরপরই এ সব নিয়ে আলোচনায় বসা উচিত নয়। এই সময়টা সবাই খুব আবেগপ্রবণ থাকে। মাথা গরম করে এ সব জিনিস নিয়ে আলোচনা করা যায় না। পরে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে হবে।”
ভেবে যত তাড়াতাড়ি সমাধান বের করতে পারবেন, তত ভাল। না হলে যে বিপক্ষ অধিনায়কদের চাবুকের নির্মম শাসন আটকানো যাবে না। চলতেই থাকবে।
|
ভারত-পাক ‘অ্যাসেজ’ চান আশরফ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পাক বোর্ড চেয়ারম্যান জাকা আশরফ মনে করেন, ভারত-পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতার মতো উত্তেজক লড়াই ক্রীড়াবিশ্বে আর নেই। আর তাই অ্যাসেজ সিরিজের মতো দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যেও নিয়মিত সিরিজ চান তিনি। বলছেন, “কথা কিছুটা এগিয়েছে। দু’বছরে এক বার এ রকম সিরিজ হলে দু’দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদেরই লাভ। পাঁচ ম্যাচের এই ছোট সিরিজেই ভারত-পাক ক্রিকেটীয় সম্পর্ক থেমে থাকুক, চাই না।” |