উৎসবের শুরুতেই বিতর্ক
সভামঞ্চ থেকে সেই তৃণমূলের প্রচার
শুরু হল জঙ্গলমহল বিবেক ছাত্র-যুব উৎসব। এবং শুরুতেই বিতর্ক। সভামঞ্চ থেকে সেই তৃণমূলের প্রচারই করলেন দলীয় মন্ত্রী-বিধায়কেরা। জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরানোর কৃতিত্ব নতুন সরকারের বলে দাবি করলেন তাঁরা। সঙ্গে তৃণমূলের এক বিধায়কের হুঁশিয়ারি, যাঁরা শান্ত জঙ্গলমহলে অশান্ত করতে চাইবেন তাঁদের ক্ষমা করা হবে না। শুধু তৃণমূলের মন্ত্রী-বিধায়কেরা নন, রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারাও জানালেন, জঙ্গলমহলের চিত্র গত এক-দেড় বছরে অনেকটা বদলেছে। যা শুনে জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে দলের প্রচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে নতুন করে আর কী বলব? মানুষ সব দেখছেন।”
বৃহস্পতিবার থেকে মেদিনীপুর শহরে শুরু হয়েছে জঙ্গলমহল বিবেক ছাত্র-যুব উৎসব। চলবে কাল, শনিবার পর্যন্ত। উৎসবের শেষ দিনে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন এবং যুব কল্যাণ দফতরের উদ্যোগে শহরের কলেজ মাঠে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

ধামসা বাজিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করলেন সুকুমার হাঁসদা (বাঁ দিকে)। অনুষ্ঠানের একটি মুহূর্ত।

বৃহস্পতিবার সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন এডিজি (আইবি) বাণীব্রত বসু, আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা, জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী প্রমুখ। ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোও।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জেলাশাসক জানান, পশ্চিম মেদিনীপুর-বাঁকুড়া-পুরুলিয়াএই তিন জেলার আদিবাসী শিল্পীদের নিয়েই জঙ্গলমহল বিবেক ছাত্র-যুব উৎসবের আয়োজন। উৎসবে আদিবাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন দাশাই নৃত্য, পাতা নৃত্য, ঝুমুর গান, রণ পা নৃত্য প্রভৃতি রয়েছে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপস্থিত মন্ত্রী-বিধায়কেরা তৃণমূলেরই প্রচার করেন। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমারবাবু যেমন বলেন, “মা-মাটি-মানুষের সরকারই জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরিয়েছে। এই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।’’ এক ধাপ এগিয়ে মেদিনীপুরের বিধায়ক বলেন, “কোনও জাদুর স্পর্শে এই পরিবেশ ফিরে আসেনি। মুখ্যমন্ত্রী নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করেছেন। তাই অশান্ত জঙ্গলমহল শান্ত হয়েছে।” এ জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে সেলামও জানান বিধায়ক। তাঁর কথায়, “পুলিশ-প্রশাসন কাজ করেছে। তাই ওদের সেলাম জানাচ্ছি। এত সুন্দর অনুষ্ঠান গত ৩৪ বছরে আমার নজরে পড়েনি।” সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “যাঁরা শান্ত জঙ্গলমহলে অশান্ত করতে চাইবেন তাঁদের ক্ষমা করা হবে না।”
মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। রাত জেগে চলছে তারই প্রস্তুতি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
গত এক- দেড় বছরে জঙ্গলমহলের পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে বলে জানান রাজ্য পুলিশের কর্তারাও। এডিজি (আইবি) যেমন বলেন, “কাজের সূত্রে এখানে আগেও এসেছি। এখনও আসছি। জঙ্গলমহলের চিত্র গত এক-দেড় বছরে অনেকটা বদলেছে।” তাঁর কথায়, “অশুভ শক্তির প্ররোচনায় কেউ কেউ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। তাঁরা আপনাদেরই ভাই-বোন। তবে তাঁদের অনেকে অস্ত্র সমর্পণ করেছেন। আগামী ৫ তারিখ আবারও তা দেখতে পাবেন।” মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে এক বা একাধিক মাওবাদী আত্মসমর্পণ করবেন বলেই নিজের বক্তব্যে ইঙ্গিত দেন এডিজি (আইবি)। আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সরাসরিই বলেন, “এক বছরে জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরে এসেছে। এই পরিবেশ দেখেও খুব ভাল লাগে। যেখানেই যাই মানুষের মুখে হাসি দেখি। যাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁরা তো করেইছেন। আরও মাওবাদী আত্মসমর্পণ করবেন।”
কলেজ মাঠে একটি প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করা হয় এ দিন। বিবেকানন্দের জীবনের নানা দিক নিয়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। পরে বিভিন্ন জেলা ও মহকুমায় এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.