বাম জমানার উল্টো চিত্র নতুন সরকারের আমলে।
এক সময়ে ‘বামদুর্গ’ বলে পরিচিত আরামবাগে যে সব কলেজে মনোনয়ন জমা দিতে পারত না বিরোধীরা, সেখানে এখন এসএফআইয়ের একই দশা হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে ৬টি কলেজে বৃহস্পতিবার মনোনয়নই তোলেনি তারা। ফলে ৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে টিএমসিপি। একটিতে তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর প্যানেল জমা পড়েছে। বিষয়টি ‘আলোচনা সাপেক্ষে’ মিটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন নেতারা।
আরামবাগ মহকুমার আরামবাগ থানা এলাকার তিনটি কলেজ। নেতাজি মহাবিদ্যালয়, আরামবাগ গার্লস কলেজ এবং কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম কলেজ। খানাকুলে একটি কলেজ রাজা রামমোহন রায় মহাবিদ্যালয়। গোঘাটের দু’টি কলেজ কামারপুকুর এবং বেঙ্গাই অঘোরকামিনী মহিবিদ্যালয়।
এই ৬টি কলেজে ছাত্রসংসদের নির্বাচনের জন্য বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র তোলার দিন। কোথাও মনোনয়ন তোলেনি এসএফআই। কামারপুকুর কলেজে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী মনোনয়নপত্র তুলেছে।
হুগলি জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি শুভজিৎ সাউ বলেন, “আমাদের ছেলেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে প্রার্থীদের একটাই প্যানেল থাকবে। শনিবার, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিনই সমস্যা মিটে যাবে।”
যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই জেলা নেতা চিরঞ্জিৎ পাল বলেন, “সর্বত্রই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের ভাল হচ্ছে না। এই সমস্যা মেটাতে সব কলেজে চুক্তি হয়েছিল, উভয় পক্ষের প্রার্থীই থাকবে। কিন্তু তা না মেনে বেঙ্গাই অঘোরকামিনী মহাবিদ্যালয়ে মারধর করে একটি গোষ্ঠীকে বের করে দেওয়া হয়েছে।” এই যেখানে ‘পরিস্থিতি’, কামারপুকুর কলেজে এক পক্ষকে দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বস্তুত, এই দু’টি কলেজেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী এর আগে বেশ কয়েক বার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
আর কী বলছে বিরোধীরা?
এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি অরিন্দম ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসে আমাদের ছেলেরা কলেজেই যেতে পারছে না। নির্বাচনে যোগ দেওয়া তো অনেক দূরের কথা।”
বাম জমানায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই সব জায়গায় প্রায় সব বারই ছাত্র সংসদের ক্ষমতা দখল করেছে এসএফআই। তখন আবার তৃণমূল তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলত।
এ প্রসঙ্গে শুভজিৎবাবুর যুক্তি, “ওরা এখন মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কোনও লোকজন ওদের সঙ্গে নেই। সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” যা শুনে সিপিএমের এক জেলা নেতার কটাক্ষ, “মানুষ সবই দেখতে পাচ্ছেন। বুঝতেও পারছেন। আমাদের ভুলেরই পুনরাবৃত্তি করছে ওরা!” |