|
|
|
|
গুজরাতে লোকায়ুক্ত নিয়োগ |
কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরব জেটলি
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
গুজরাতে লোকায়ুক্ত নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ অরুণ জেটলি। আজ শীর্ষ আদালতের রায়ের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিচার ব্যবস্থা বনাম আইনসভার বিতর্কটিও ফের উস্কে দিয়েছেন বিজেপির এই আইনজীবী নেতা। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের প্রভাব যাতে লোকপাল বিলে না পড়ে, তার জন্য রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা সংসদে সব দলকে বিষয়টি পর্যালোচনা করার দাবিও জানিয়েছেন।
২০১১-র ২৫ অগস্ট নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে এড়িয়ে শুধু হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করেই রাজ্যপাল কমলা বেনিয়ান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর এ মেহতারকে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করেছিলেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মোদী সরকার। কাল সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, লোকায়ুক্ত হিসেবে মেহতারের নিয়োগ বৈধ।
জেটলির দাবি, রাজ্যকে এড়িয়ে এই ভাবে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করা যায় না। আইন মোতাবেক এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং বিরোধী দলনেতার সঙ্গে আলোচনা করবেন। তার পর সেই সুপারিশ পাঠানো হবে রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী সেই নিয়োগ করতে বাধ্য। জেটলির অভিযোগ, কিন্তু গুজরাতে তা হয়নি। এখানে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে লোকায়ুক্ত নিয়োগের সম্মতি পাঠালেন রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা এবং বিরোধী দলনেতাকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়ে। যেখানে রাজ্যপালের ভূমিকা নাম মাত্র, সেখানে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির মতকে প্রাধান্য দেওয়া হল মন্ত্রিসভার মতামতকে পাশ কাটিয়ে।
কাল অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট মন্ত্রিসভাকে অমান্য করার জন্য রাজ্যপালের সমালোচনাও করেছে। পাশাপাশি লোকায়ুক্ত নিয়োগও বহাল রেখেছে। সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সম্পর্কে ‘নিরপেক্ষ’ মতামত জানিয়েছেন। এই পদে কে বসবেন, সে ব্যাপারে রায় দেওয়ার পক্ষে যোগ্য ব্যক্তি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
বিচারব্যবস্থার এই ‘সীমা’ লঙ্ঘনকেই তুলোধনা করেছেন অরুণ জেটলি। তাঁর কথায়, “ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই, এক মাত্র প্রধান বিচারপতিই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির কাজের মূল্যায়ন সব থেকে ভাল করবেন। বরং ভারতে এর উল্টোটাই হয়েছে।” জেটলির অভিযোগ, রাজ্যপাল তো অসাংবিধানিক কাজ করেইছেন, তার ভিত্তিতে আদালতের রায়ও যুক্তিহীন। গুজরাতে এখন এমন এক জন লোকায়ুক্ত হবেন, যাঁকে রাজ্য মন্ত্রিসভা কোনও দিনই সুপারিশ করেনি।
এখানেই থেমে থাকেননি জেটলি। তাঁর আশঙ্কা, এই রায়ের প্রভাব পড়তে পারে লোকপাল বিলেও। সেই বিলে লোকপালের চেয়ারপার্সন ও সদস্যদের নিয়োগের জন্য একটি কলেজিয়াম গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই কলেজিয়ামে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার স্পিকার, লোকসভার বিরোধী দলনেতা, প্রধান বিচারপতি বা তাঁর মনোনীত এক জন বিচারপতি এবং এক জন বিশিষ্ট আইনজীবী। যদি গুজরাতের লোকায়ুক্ত গঠনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রায়টি যথার্থ হয়, তাহলে লোকপালের সদস্য নিয়োগের ব্যাপারে একচ্ছত্র অধিকার চলে যাবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। আর কলেজিয়ামের বাকি সদস্যদের ভূমিকা হবে ‘নীরব দর্শকের’। জেটলি বলেন, “আইন প্রণেতাদের লক্ষ্য নিশ্চয়ই এটা নয় যে আইনসভা ও সরকারের ভূমিকা নির্মূল করে প্রশাসনিক নিয়োগের বিষয়টিও নিজেদের হাতে তুলে নেবে বিচার ব্যবস্থা! সংসদের এই বিষয়টি পূনর্মূল্যায়ন করা উচিত।” |
|
|
|
|
|