|
|
|
|
রুদ্ধদ্বার শুনানির আর্জি |
দিল্লির গণধর্ষণ কাণ্ডে পেশ চার্জশিট
নিজস্ব প্রতিবেদন |
চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণীকে গণধর্ষণ ও মারধরের ঘটনার ১৮ দিন পরে চার্জশিট পেশ করল দিল্লি পুলিশ। আজ দক্ষিণ দিল্লির সাকেত জেলা আদালতে মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট সূর্য মালিক গ্রোভারের এজলাসে চার্জশিট-সহ বেশ কিছু নথি জমা দেন সরকারি আইনজীবীরা। ই-চার্জশিটও পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাম সিংহ ও তার ভাই মুকেশ সিংহ, পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা ও অক্ষয় ঠাকুরের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ এনেছে পুলিশ। মামলার ষষ্ঠ অভিযুক্ত নাবালক। তাই তার বিচার ‘জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে’ হবে। তার বিরুদ্ধেও শীঘ্রই চার্জশিট পেশ করবে পুলিশ। ৫ জানুয়ারি, শনিবার অভিযোগগুলি বিবেচনা করবেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। তার পরে মামলা বিচারের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে পাঠানো হবে।
ধর্ষিতার পরিচয় গোপন রাখাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। তাই চার্জশিট ও অন্যান্য নথি মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া হয়েছে। রুদ্ধদ্বার শুনানিরও আর্জি জানিয়েছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। সাধারণত বিকেল ৫টায় আদালত বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আজ তার আধ ঘণ্টা পরে চার্জশিট জমা দেন সরকারি আইনজীবীরা। পিপি রাজীব মোহনের কাছে দেরির কারণ জানতে চান গ্রোভার। পিপি জানান, মামলার নথিপত্র যথাযথ ভাবে পেশ করতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তাই বাড়তি সময় নেওয়া হয়েছে। |
প্রতিবাদী
সাকেত আদালতে শুরু হল বিচার।
বাইরে তখন বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। ছবি: পি টি আই |
গণধর্ষণ কাণ্ডের সময়ে ধর্ষিতার পুরুষ বন্ধুকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুরুষ বন্ধুটির মামা ডি কে মিশ্র পেশায় আইনজীবী। তিনিও আজ আদালতে হাজির ছিলেন। মিশ্র সাফ জানিয়ে দেন, দিল্লি পুলিশ নিম্ন আদালতে এই মামলা নিয়ে সঠিক ভাবে না এগোলে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন।
দিল্লি গণধর্ষণ মামলার চার্জশিট এ দিনই জমা পড়বে, এ কথা আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। সে কারণেই এ দিন আদালতের বাইরে জড়ো হন বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। দিল্লি ধর্ষণ-কাণ্ডের প্রতিবাদে নামা একাধিক বিক্ষোভকারী আগেই জানিয়েছিলেন, এ দিনটিকে তাঁরা ‘কালা দিবস’ হিসেবে পালন করবেন। তাঁরা আদালত চত্বরের বাইরে বিক্ষোভও দেখান। চার্জশিট পেশের সময় অভিযুক্তদের জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে সরব হন উপস্থিত কয়েক জন আইনজীবী। আদালতের বাইরেও বিক্ষোভ দেখান এক দল কৌঁসুলি। অভিযুক্তদের পক্ষে মামলা না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সাকেত কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু বিক্ষোভের মধ্যেই কয়েক জন মহিলা কৌঁসুলি বলেন, “অভিযুক্তদের পক্ষে কৌঁসুলি না থাকা কোনও সমাধান নয়। পুলিশকে ঠিক মতো মামলা লড়তে হবে।” ‘দিল্লি লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির’ সঙ্গে যুক্ত এক মহিলা কৌঁসুলি জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা আইনি সাহায্য পাবে। সাকেত বার অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, কোন মামলা তাদের সদস্যরা লড়বেন না, তা স্থির করার অধিকার তাঁদের আছে। তবে অন্য কোনও আইনজীবী এই মামলা লড়লে তাঁরা বাধা দেবেন না।
যে বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল, তার মালিক দীনেশ যাদবকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অভিযোগ, বাসের নথিভুক্তিকরণের সময় ভুয়ো ঠিকানা দিয়েছিল সে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও রাজ্য পরিবহণ দফতরকে ভুয়ো তথ্য দিয়েছে দীনেশ। ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে ব্যাঙ্কের পাসবুক ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি দিয়েছিল সে। কিন্তু তাতে উল্লিখিত বাড়ির মালিক অনন্ত গোপাল জানিয়েছেন, দীনেশ কোনও দিনই তাঁর বাড়িতে থাকেনি। দীনেশের দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। |
|
|
|
|
|