|
|
|
|
অসমে ‘ধর্ষক’ বিধায়ককে ঝাঁটা-জুতো মেয়েদের
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
ধর্ষণ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন অসমের কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রম সিংহ ব্রহ্ম। গ্রামের মহিলারাই মারধর করে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। গত কাল রাতে নামনি অসমের চিরাং জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। দিল্লি ধর্ষণের ঘটনায় যখন খানিকটা কোণঠাসা কেন্দ্র, সেই সময় এক কংগ্রেস বিধায়কের এ হেন আচরণে অস্বস্তিতে পড়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে ঘটনার পর আর অপেক্ষা করেননি রাজ্য কংগ্রেস নেতারা। ব্রহ্মকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেই বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য যখন পুরোদমে তৈরি হচ্ছে রাজ্য, তখনই বড়োভূমি ও নামনি অসমের এই প্রবীণ নেতা তথা বড়োভূমি এলাকায় কংগ্রেস কো-অর্ডিনেশন কমিটির মুখ্য আহ্বায়ক, বিক্রম সিংহ ব্রহ্মের ‘নৈশ-বিক্রম’ দলের ভাবমূর্তিতে নিঃসন্দেহে কালি লেপে দিয়েছে। |
জুটেছে গণধোলাই। তার পর গ্রামের মহিলাদের হাতে
বন্দি কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রম সিংহ ব্রহ্ম। ছবি: উজ্জ্বল দেব |
কী ঘটেছিল গত রাতে? অরণ্যের কোল ঘেঁষা চিরাঙের প্রত্যন্ত গ্রাম শালমারা। সেখানেই গ্রাম পরিষদ উন্নয়ন কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান লখেন বসুমাতারির বাড়ি। গত রাতে তাঁর বাড়িতেই দেহরক্ষী-সহ আতিথ্য নিয়েছিলেন ব্রহ্ম। লখেন পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি ঘটেছে রাত দু’টো নাগাদ। লখেন অন্য ঘরে ছিলেন। তিনি বলেন, “স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভেঙে উঠে দেখতে পাই বিক্রম সিংহ আমার স্ত্রীর উপরে চড়াও হয়েছেন।” সে সময় ৬২ বছরের বিক্রম পুরো মত্ত। লখেন জানান, নেতাকে ওই অবস্থায় দেখে তিনি চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। বিক্রম সিংহ পালাবার চেষ্টা করলেও তাঁকে গ্রামবাসীরা ধরে ফেলেন। রাতভর তাকে বেঁধে রাখার পরে আজ সকালে সংবাদ মাধ্যমকে খবর দিয়ে শুরু হয় গণপিটুনি। মূলত, গ্রামের মহিলারাই ঝাঁটা-লাঠি নিয়ে কংগ্রেস নেতাকে মারধর করতে থাকেন। বেলা ১২টা নাগাদ বিক্রম সিংহকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। লখেনবাবু জানান, গত তিন মাস ধরে ব্রহ্ম সরকারি প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। পরিবারের কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকাও নিয়েছেন তিনি।
লখেনের স্ত্রী দুই সন্তানের মা। বয়স চল্লিশের কোঠায়। তিনি আজ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বাক্সার বাসিন্দা ব্রহ্ম আজ গণধোলাইয়ের মুখে গ্রামবাসী, সাংবাদিক ও পুলিশের সামনেই নিজের দোষ কবুল করেন। গ্রাম প্রধান বিশ্বনাথ নার্জারি বলেন, “এমন এক জন প্রবীণ নেতা গ্রামের মহিলার সম্মানহানি করবেন, এটা ভাবাই যায় না। এমন নেতাদের কড়া শাস্তি হওয়া উচিত।” অসম প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ওয়াই এল কর্ণ বলেন, “দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ব্রহ্মকে বরখাস্ত করা হয়েছে।” সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা বলেন, “জেলা কংগ্রেসের কাছ থেকে বিষয়টি নিয়ে বিশদ রিপোর্ট চেয়েছি।” কংগ্রেসের মুখপাত্র রশিদ অলভির বক্তব্য অবশ্য, ওই লোকটি আদৌ প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য কি না খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে গ্রামবাসীদের হাতে বিধায়ক বিক্রম সিংহ ব্রহ্মের মারধর খাওয়ার প্রসঙ্গে এক কংগ্রেস নেতা কৌতূক করে বললেন, “এটাই সত্যিকারে ফাস্ট ট্র্যাক ছিল!” |
|
|
|
|
|