জোর করে এক মহিলাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আসানসোলের কয়েক জন তৃণমূল নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা উমা বক্সী আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ করেন, গত ২২ ডিসেম্বর আসানসোল আর্যকন্যা রোড মুরগাশোলে তাঁকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন স্থানীয় তিন তৃণমূল নেত্রী গীতশ্রী পাইক, আয়লা চক্রবর্তী, জবা পাল ও এক তৃণমূল নেতা দীপক বিশ্বাস। তাঁরা নিজেদের প্রথমে মহিলা কমিশনার এবং পরে তৃণমূল নেত্রী বলে পরিচয় দেন। তৃণমূল নেত্রী গীতশ্রীদেবীর বক্তব্য, তাঁরা কোনও অন্যায় করেননি।
উমাদেবী জানান, ২০১১ সালের ১৬ অগস্ট তাঁর স্বামী স্বপনকুমার বক্সীর মৃত্যুর পর থেকে স্বামীর আবাসনেই থাকতেন তিনি। ২২ ডিসেম্বর তাঁর স্বামীর প্রথম পক্ষের ছোট মেয়ে সংগৃহীতা রায় ও তাঁর স্বামী রূপক রায় তাদের নিয়ে এসে তাকে আবাসন থেকে বের করে দেন। তিনি বলেন, “এর আগেও গত ৪ সেপ্টেম্বর সংগৃহীতা ও তাঁর স্বামী রূপক তৃণমূলের দীপকবাবুকে নিয়ে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে পুলিশও এসেছিলেন। পুলিশ সংগৃহীতা ও তার স্বামীকে জানিয়ে দেয়, উমাদেবীকে বাড়ি থেকে বের করতে গেলে কোর্টের বৈধ কাগজ লাগবে। সেদিনের মতো ওরা ফিরে গেলেও পরে আবার ওই তৃণমূল নেত্রীদের নিয়ে এসে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে সংগৃহীতারা। আমি এখন বাড়ির বাইরে।”
অন্য দিকে সংগৃহীতার অভিযোগ, মৃত্যুর আগে তাঁর বাবা আবাসনের অর্ধেক অংশ তাঁদের দুই বোনের নামে ও অন্য অর্ধেক অংশ তাঁর জামাইবাবুর নামে করে দিয়ে গিয়েছেন। বাবার অন্ত্যেষ্টি সেরে স্বামীর কর্মস্থল বিশাখাপত্তনমে চলে গিয়েছিলেন তিনি। প্রতিবেশিদের কাছে খবর পান, আবাসনের তালা ভেঙে সেখানে বসবাস করছেন উমা বক্সী। তাঁর দাবি, ৪ সেপ্টেম্বর ফিরলে তাঁকে আবাসনে ঢুকতে দেননি উমাদেবী। ১৯ নভেম্বর রাজ্য মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হন তিনি। বেগতিক দেখে নিজেই ২২ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান উমাদেবী।
সংগৃহীতার দাবি, তাঁর মা অনেকদিন আগেই মারা গিয়েছেন। ২০০৯ সালে উমাদেবীকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছিলেন তার বাবা। ২০১০-য়ের ১৩ জুন তাঁর বাবাকে ছেড়ে চলে যান উমাদেবী। ওই বছরই ৫ ডিসেম্বর তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা বধূ নির্যাতনের মামলা করেন উমাদেবী। তাঁর বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। জামিন পেয়ে বাবা ফিরে আসেন। এরপর থেকে উমাদেবী আর বাড়ি ফেরেননি। গীতালিদেবীর বক্তব্য, এ বিষয়ে প্রশাসনিক তদন্ত হলেই সব বোঝা যাবে। |