বিধানসভার ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ দক্ষিণ দিনাজপুরের স্কুল নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারল না। রবিবার জেলার ৭টি হাই স্কুলের অভিভাবক পরিচালন সমিতি ভোটে ৫টিতে কর্তৃত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হল বামফ্রন্ট। একটিতে ‘টাই’ হয়েছে। একটি স্কুলে পুনরায় জয়ী হয়ে পরিচালন সমিতি দখলে রেখে সন্তুষ্ট তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, তপন, কুমারগঞ্জ ও হরিরামপুর কেন্দ্রগুলি বামফ্রন্টের হাতছাড়া হওয়ার পরে ওই কেন্দ্রগুলিতে স্কুল নির্বাচনে জনমত ঘুরতে দেখে বামেরা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে। কারণ, সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তবে কংগ্রেস আলাদাভাবে সব জায়গায় প্রার্থী দিলেও সুবিধা করতে পারেনি। রবিবার বালুরঘাটের নদীপাড় এনসি হাইস্কুল এবং হিলির বালুপাড়া ফতেপুর হাইস্কুলের নির্বাচনে ৬টি আসনে বাম সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেনে। তৃণমূল আসন পায়নি। ফ্রন্ট জয় ধরে রেখেছে বালুরঘাটের রাজুয়া হাই স্কুলে। ৬টির মধ্যে বামেরা পায় ৫টি এবং তৃণমূল পেয়েছে ১টি আসন। তপন গার্লস হাইস্কুলে ৫-১ আসনে এবং হরিরামপুরের বাগিচাপুর জুনিয়র হাইস্কুলে ২-১ আসনে বামেরা তৃণমূল প্রার্থীদের হারিয়ে জয়ী হন। গঙ্গারামপুর বাজিতপুর হাইস্কুলে ৬টি আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বালুরঘাটের খাসপুর হাইস্কুলে ৩-৩ আসনে বাম ও তৃণমূল প্রার্থীদের টাই হয়। তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কার্যকরী সভাপতি বিপ্লব খাঁর এলাকা চকভৃগু নদীপাড় এনসি হাইস্কুলে ৬টি আসনেই দলীয় সমর্থক প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিপ্লববাবুর নালিশ, “কংগ্রেস নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করছে।” তবে এনসি হাইস্কুলের মতো বাকি স্কুলগুলির ভোটের পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, তৃণমূল এবং কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের যোগফলের চেয়ে বেশি ভোটে বাম প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় এ ফল তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন। তাঁর কথায়, “বিধান সভায় কংগ্রেসের হাত ধরে তৃণমূলের জয় এসেছিল। স্কুল ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের যোগফলের চেয়ে বামেরা বেশি ব্যবধানে জয়লাভ করেছে ঠিকই। ‘জোট’ করে লড়লে ফল অন্য হত।” প্রাক্তন কারামন্ত্রী আরএসপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরীর ধারণা, মানুষ নতুন করে ভাবছেন। তাঁর অভিযোগ, “প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশি দিন মানুষকে ধরে রাখা যায় না।” সিপিএমের আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে প্রভাব পড়বে।” |