বছরের শেষ দিনে পিকনিক করতে গিয়ে পাহাড়ের বাঁকে পিক-আপ ভ্যান উল্টে মৃত্যু হল এক ছাত্রী-সহ চার পড়ুয়ার। জখম ১২ জন। সোমবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে ডুয়ার্সের মেটেলির সামসিঙের লালিগুরাস পিকনিক স্পটের কাছে।
মৃত ও আহতেরা সকলেই নাগরাকাটা থানার সুখানি বস্তি এলাকার বাসিন্দা। মৃত রেশমি রাই (১৭) স্থানীয় চেংমারি হিন্দি হাই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। আমন শ্রেষ্ঠা (১৫), শরণ ছেত্রী (১৬), রোহিত কামি (১৪) নাগরাকাটা হিন্দি হাইস্কুলের ছাত্র। তারা যথাক্রমে অষ্টম, নবম এবং সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। আহতদের সকলকে প্রথমে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পাঁচ জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পিকনিক স্পটগুলিতে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাগরাকাটার সুখানি বস্তির ছাত্রছাত্রীরা পিকনিক করতে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ি ঠিক করেছিল। কিন্তু, গাড়ির চালক কাজ ছেড়ে দেওয়ায় সমস্যায় পড়ে তারা। এলাকায় বেড়াতে আসা বান্দাপানি চা বাগানের বাসিন্দা প্রবীণ ছেত্রী দাবি করেন, তিনি গাড়ি চালাতে জানেন। তাঁকেই গাড়িটি চালাতে দেওয়া হয়। পিকনিক স্পটে পৌঁছনোর মুখে একটি বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। গাড়িটি প্রায় ৪০ ফুট নীচে খাদে পড়ে যায়। বাসিন্দারা গিয়ে উদ্ধারের কাজে হাত লাগান।
দুর্ঘটনায় আহত গ্রাসমোড় চা বাগানের বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নরগু ডুকপা জানায়, “চালক না থাকায় অন্য এক জনকে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানতাম না। বন্ধুরা জোর করাতে পিকনিকে গিয়েছিলাম।”
নরগুর বাবা লাদিম ডুকপার বলেন, “ছেলেরা নিজেদের মতো করে পিকনিকের আয়োজন করেছিল। শুধু জানতাম পিকনিক করতে সামসিং যাচ্ছে।” আহত আরেক ছাত্রীর মা রাধিকা ছেত্রী জানান, “পিকনিকে যাবার জন্যে মেয়ে বায়না জুড়েছিল। গাড়ির চালকের বিষয়ে কোনও খোঁজ করিনি।” গাড়ির চালক প্রবীণ ছেত্রীর ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে বলে মেটেলি থানার পুলিশ জানিয়েছে। |