বোঝার ভুল, দাবি প্রাক্তন মন্ত্রীর |
মানসের জমানায় অস্বচ্ছতা সেচে, অভিযোগ রাজীবের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পশ্চিমবঙ্গে নতুন সরকারের প্রাক্তন জোট শরিক কংগ্রেসের নেতা মানস ভুঁইয়া সেচমন্ত্রী থাকাকালীন দফতরে ঠিকাদার নথিভুক্তিকরণে অস্বচ্ছতা ছিল বলে অভিযোগ তুললেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী রাজীববাবু সোমবার মহাকরণে বলেন, “১২৫ জন ঠিকাদারের নাম নথিভুক্তির জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল, তা স্বচ্ছ ছিল না। ফাইল ঘাঁটতে গিয়ে নানা ধরনের সুপারিশ নজরে এসেছে। তাই পুরো প্রক্রিয়া স্বচ্ছ রাখতে ঠিকাদার নথিভুক্তির বিষয়টিই তুলে দেওয়া হচ্ছে।” রাজীববাবুর যুক্তি, “যেখানে ই-টেন্ডার পদ্ধতি মেনে এজেন্সি ঠিক হচ্ছে, সেখানে নথিভুক্তিকরণের কী প্রয়োজন? চাইলে যে কেউ কাজের বরাত পাওয়ার আবেদন জানাতে পারবেন।”
|
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় |
|
মানস ভুঁইয়া |
মানসবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, “রাজীব ভাল ছেলে। দফতরের অফিসারদের থেকে বিষয়গুলো বুঝে নিলেই তো পারেন! বাম আমলে এক দল ঠিকাদার মাতব্বরি করতেন। দীর্ঘ পনেরো-কুড়ি বছর ঠিকাদারদের শ্রেণি বিভাজন হয়নি। সেটা করতেই জুলাইয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। ২৩ সেপ্টেম্বর আমি দফতর ছেড়ে চলে এসেছি। তার মধ্যে এমন কোনও নথিভুক্তি হয়েছে বলে আমার জানা নেই।” মানসবাবুর আরও দাবি: দফতরের অফিসারদের নিয়ে গঠিত কমিটি-ই বিষয়টি নিয়ে বিচার বিবেচনা করছিল, মন্ত্রী হিসেবে এতে তাঁর ভূমিকা নেই। “আমার সময়ে এমন কোনও নথিভুক্তির কাজ হয়নি। রাজীব সাংবাদিকদের এ সব বলার আগে তো আমার সঙ্গে কথা বলে নিতে পারতেন! তা হলে বোঝার ভুল হতো না!” মন্তব্য প্রাক্তন সেচমন্ত্রীর।
অন্য দিকে বর্তমান সেচমন্ত্রী পরিষ্কার জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছতার স্বার্থে ই-টেন্ডার চালু করেছেন। সেই প্রথা মেনে যাঁরা যোগ্য, তাঁরাই কাজ পাবেন। “সেচ দফতরে যেমন সুভাষ নস্কর (বাম আমলের সেচমন্ত্রী) কিংবা মানস ভুঁইয়ার টিমের ঠিকাদার থাকবেন না, তেমন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের টিমেরও কেউ থাকবেন না।” বলছেন তিনি।
তবে নথিভুক্তির সুবাদে যে সব ঠিকাদার বরাত পেয়েছেন, আপাতত কাজ করতে তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছেন রাজীববাবু। তিনি এ দিন বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে দেখেছিলাম, ৬৪৮টি কাজ চলছে। তার বেশ কয়েকটি চলছিল অনন্ত কাল ধরে। এ বার বলা হয়েছে, ২২৪ কোটি টাকার মোট ৮২টি প্রকল্প আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করতে হবে। বিভিন্ন জেলার ২৩টি প্রকল্পের কাজ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হচ্ছে।” নয়া সেচমন্ত্রীর দাবি, পঞ্চাশ লক্ষ টাকার কম বরাতের কাজ নিয়েও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সে ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। |