তোলাবাজদের বাধায় আটকে গেল ১০০ দিন প্রকল্পের কাজ। সোমবার এমনই ঘটনা ঘটেছে বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া গ্রামে। মোরাম ফেলার ট্রাক্টর আটকে জনা ত্রিশেক লোকজন ট্রাক্টর আটকে মোটা টাকা দাবি করে বলে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজার ও শ্রমিকরা বিডিও-র কাছে অভিযোগ করেন। পরে বিডিও-র প্রতিনিধি এলাকায় গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বেলশুলিয়া গ্রামে বিষ্টুর ঠাকুরতলা থেকে জয়পুর মেন রোড পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মোরাম ফেলার কাজ চলছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে কিছু লোকজন এসে মোরাম কাটার কাজে বাধা দেয়। তাদেরই বাকি সঙ্গীরা রাস্তায় যেখানে মোরাম ফেলা হচ্ছিল, সেখানে ট্রাক্টর আটকে দেন। এরপরেই ক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। রাস্তার উপর বসে পড়ে প্রায় ১২০ জন শ্রমিক বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শ্রমিকরা বিডিও-র কাছে গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্র জমা দেন। কাজের দায়িত্বে থাকা দুই সুপারভাইজার ধনঞ্জয় হালদার ও অঞ্জন কাপড়ি ব্লক অফিসে গিয়ে অভিযোগ করেন, তোলাবাজরা টাকা দাবি করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। |
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা মোরাম কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁরা জানান, চলতি অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মাত্র দিন কুড়ি কাজ পেয়েছেন। এই রাস্তা সংস্কারের কাজ করে যদিবা আরও কিছু রোজগার করার আশা করেছিলেন, তাও ভেস্তে গেল। তাঁদের মধ্যে গুরুপদ রুইদাস, সুকুমার মহাদণ্ডরা বলেন, “দুষ্কৃতীরা এসে বলল কাজ করা যাবে না। এ ভাবে জুলুমবাজি করে কাজ বন্ধ করলে আমরা খাব কী?” দুই সুপারভাইজারের অভিযোগ, “এলাকারই কিছু তোলাবাজ টাকা দাবি করে মোরাম ফেলার ট্রাক্টর আটকে কাজে বাধা দিয়েছে। আমরা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি।” কিন্তু তাঁরা তোলাবাজদের পরিচয় প্রকাশ করেননি। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময় সিপিএমের দখলে থাকা এই পঞ্চায়েতের সিপিএমের সকল সদস্য (৭ জন) পদত্যাগ করায় এখন তৃণমূল (৫ সদস্য) পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে। পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনা করেন তৃণমূলের যে নেতারা, তাঁদেরই বিরুদ্ধে গোষ্ঠী ওই কাজে বাধা দিচ্ছেন। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এই অভিযোগ মানতে চায়নি। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান রত্না দে বলেন, “কেউ কোনও অভিযোগ আমার কাছে করেনি। খোঁজ নিয়ে দেখব কী ঘটেছে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মথুর কাপড়ির দাবি, “তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই। মোরাম খাদানের সঙ্গে যুক্ত কিছু লোকের সঙ্গে গোলমাল হয়েছে বলে শুনেছি।”
বিষ্ণুপুরের বিডিও প্রশান্তকুমার মাহাতো বলেন, “রাস্তায় মোরাম ফেলার কাজ বন্ধের অভিযোগ পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্লকের এনআরজিএস সেলকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।” ওই সেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার সতীশ দাস বলেন, “এক ইঞ্জিনিয়ারকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছি। তাঁর দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |