পরিষেবার অভাব পিকনিক স্পটে, হতাশ আমুদে বাঙালি
ফের এসে গেল শীতের ছুটি। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে উৎসবপ্রিয় হুজুগে বাঙালির কাছে আবার নতুন সুযোগ নতুন আনন্দে মেতে ওঠার। তার উপরে সুযোগ যদি হয় শীতের মরসুমে বড়দিন-নতুন বছরের ছুটি, তা হলে তা হাতছাড়া করার কোনও চেষ্টা ভুল করেও করার প্রশ্ন নেই। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার পিকনিক স্পটগুলির পরিষেবা নিয়ে উৎসাহ থাকলেও পরিষেবা নিয়ে হতাশ মানুষ। অনেক আগে থেকে বুকিং করেও এই সমস্যায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ তাঁরা। কোথাও বাধ্য হয়ে প্রয়োজনের তাগিদে মেনে নিচ্ছেন। আবার কোথাও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রকাশ্যেই বচসায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ডায়মন্ড হারবার বা কাকদ্বীপ মহকুমাতেও এই ছবিটা কিছু ব্যতিক্রম নয়। সকাল থেকেই দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন আসছেন অসংখ্য মানুষজন। ডায়মন্ড হারবারের পুরনো কেল্লার মাঠ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা, রামনগরের রায়চক ও ফলতায় রূপনারায়ণ নদের ধারে কিংবা কাকদ্বীপের বকখালিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য পিকনিক স্পট। সকাল থেকেই এ সব জায়গায় উপচে পড়া ভিড়। কেউ ব্যস্ত রান্নার কাজে, কেউ বা খেলাধূলায়। কেউ বা এসেছেন শুধুমাত্র শীতের মোলায়েম রোদ্দুরের পরশে নিছক গা এলিয়ে আড্ডা মারতে, সঙ্গে একটু খাওয়াদাওয়া, হুল্লোড়বাজি। কিন্তু সুযোগ থাকলে তবে তো! বিভিন্ন পিকনিকের স্পটগুলোয় যেমন রয়েছে পর্যাপ্ত জায়গার অভাব, তেমন রয়েছে পানীয় জল, শৌচাগারের সমস্যাও। অসুবিধা রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের। কোথাও আবার প্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞা না থাকায় বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন মানুষজন। সেই সঙ্গে রয়েছে অসুবিধার সুযোগ নিয়ে কর্তৃপক্ষের বাড়তি চার্জ আদায়ও।
—নিজস্ব চিত্র।
হুগলি নদী লাগোয়া ডায়মন্ড হারবারে পুরসভা পরিচালিত একটি পিকনিক স্পটে পিকনিক করতে এসেছিলেন কলকাতা থেকে কিছু পর্যটক। কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। এদের মধ্যে কয়েকজন শ্যামল দত্ত, রিনা দত্তরা বলেন, “কলকাতার কাছাকাছি বলে পিকনিক করতে এসেছিলাম এখানে। কিন্তু এখানে শৌচাগার, পানীয় জল-সহ অনেক পরিষেবারই সমস্যা রয়েছে।” রায়চক ও ফলতার পিকনিক স্পটে আসা পর্যটকদের অভিজ্ঞতাও একই রকম। গ্রামের নলকূপ থেকে পানীয় জল সংগ্রহ এবং পলিথিন ঘেরা অস্থায়ী শৌচাগার পয়সার বিনিময়ে ব্যবহার করতে হওয়ায় তারা দৃশ্যতই বিরক্ত। তাঁদেরই একজন দেবব্রত দাস বলেন, “এত আগে থেকে বুকিং করেও এই পরিষেবার হাল হলে কিছু বলার নেই। কিছু দিন পর থেকে এ সব জায়গায় আর কেউ আর আসতেই চাইবে না।”
রূপনারায়ণ নদীর ধারের পিকনিক স্পটে নদীতে নামাওঠার জন্য নেই কোনও জরুরি সতর্কীকরণ বোর্ডও। নৌকা ভ্রমণ ছাড়াও নদীতে নামাওঠা করতে গিয়ে যে কোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ঠিক যেমন কয়েক মাস আগে ঘটেছে কাকদ্বীপের বকখালি পিকনিক স্পটে। কিছুদিন আগেই এখানে সমুদ্রে তলিয়ে যান কয়েক জন। তা সত্ত্বেও রয়েছে পুলিশি নজরদারির অভাব। অভিযোগ, কোথাও কোথাও নামমাত্র টহল দিয়েই দায় সারছেন তাঁরা। কি বলছে পুলিশ ও প্রশাসন?
এক পুলিশকর্তা বলেন, “প্রয়োজনীয় সব জায়গায় আমরা সকাল থেকেই টহলদারি ব্যবস্থা রেখেছি। তবে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন বা পুরসভার এ বিষয়ে আরও বেশি দায়িত্ব নেওয়া উচিত।” ডায়মন্ড হারবারের পুরসভা পরিচালিত পিকনিক স্পট প্রসঙ্গে পুরপ্রধান পান্নালাল হালদার বলেন, “পর্যটকদের জন্য চারটি শৌচাগার ছাড়াও অস্থায়ী শৌচাগার রয়েছে। পানীয় জল বাড়ানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেব। তবে হাজার হাজার মানুষকে সঠিক পরিষেবা দিতে গেলে একটু সমস্যা হতেই পারে।”
অন্য দিকে, বকখালি পিকনিক স্পট প্রসঙ্গে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুমারেশ পণ্ডা বলেন, “ সমুদ্রে যাতে মানুষ না নামে তার জন্য সতর্কীকরণ বোর্ড লাগানো হয়েছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও সেটা পর্যাপ্ত নয়। শৌচাগার নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদকে বলা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.