ছুটির মরসুমে কদর বাড়ছে ঘরোয়া পার্টির
দেওয়ালের বিভিন্ন জায়গায় বেলুন আঁটা। ছাদ থেকে নেমেছে বিভিন্ন রংয়ের রিবন। দেওয়ালে এক দিকে সরে গিয়েছে সোফা। ঘরে জ্বালানো হয়েছে নীলচে আলো। সাউন্ড সিস্টেম থেকে একটানা বেজে চলেছে কোথাও রক, কোথাও রবীন্দ্রসঙ্গীত কোথাও বা রবিশঙ্কর।
কার জন্মদিন?
উত্তর—ছুটির। ২৫ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ছুটির মরসুম। এ বার তারই জন্য ঘরোয়া পার্টির দেদার আয়োজনে বিস্তর খাওয়াদাওয়া এন্তার মজা। বহরমপুরের বাসিন্দা রেশম ঘোষাল বলেন, “বাড়িতে পার্টি আয়োজন করার অনেক কারণ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কারণ এই পার্টিতে মহিলারা খুব স্বচ্ছন্দ থাকতে পারি। আমি বা পার্টিতে উপস্থিত মহিলা সদস্যরা মদ খান কি না সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু বড় হোটেলের পার্টিতে তো মদ্যপান হয়। সেখানে উপস্থিত পুরুষরা মাঝে মধ্যেই অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করেন। কিন্তু ঘরোয়া পার্টিতে যাঁরা আসেন তাঁরা পরিবারের বন্ধু। সেখানে উপদ্রব নেই, উপভোগ রয়েছে।”
কেন কদর
বাড়িতে নিরাপত্তা বেশি। বিশেষত মেয়েদের।
পরিচিতের বাড়িতে অনেক স্বচ্ছন্দ থাকা যায়।
হোটেল বন্ধ হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। ঘরোয়া পার্টি অনেকক্ষণ চালানো যায়।
ব্যাঙ্কোয়েট হল ভাড়ার খরচ বাঁচে।
অসুস্থ বা প্রবীণেরাও পার্টিতে যোগ দিতে পারেন।
ঊর্ম্মি চক্রবর্তীর কথায়, “হোটেল বা রেস্তোরাঁর পার্টিতে আমার কিশোরী কন্যাকে নিয়ে যেতে পারি না। বাড়িতে পার্টি হলে মেয়েও স্বাভাবিক থাকতে পারে। আর মা হিসেবে আমিও দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়ে পার্টির আনন্দ উপভোগ করতে পারি।” খরচও বাঁচিয়েছে। বড় হোটেলে এমনিতেই যাওয়া যায়, কিংবা ব্যাঙ্কোয়েট হল ভাড়া করা যায়। কিন্তু তার তুলনায় নিজের বাড়ি বা ফ্ল্যাটে পার্টি দেওয়া অনেক কম ব্যয়সাপেক্ষ। আনন্দও বেশি। রেশম বলেন, “সম-মানসিকতার মানুষজন যাঁরা, তাঁরা আমার বাড়ির পার্টিতে উপস্থিত থাকেন। আমিও তেমন বাড়িতেই যাই। ফলে কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থতি তৈরি হয় না। আর ব্যস্ত জীবনে সকলের সঙ্গে প্রতি দিন বা সপ্তাহান্তে দেখা হয় না। আবার হোটেলে পার্টি ফ্লোর সকলের জন্যই সমান, তাতে অন্তরঙ্গ ব্যাপারটা থাকে না।” তাঁর কথায়, “তা ছাড়া, রাত ৮টা থেকে ১০ টার মধ্যে ঘরোয়া পার্টিতে অতিথিরা বাড়িতে আসেন। তখন বহরমপুরের অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ হওয়ার মুখে। বাড়িতে পার্টি হলে যত ক্ষণ খুশি আনন্দ করব, কারও কিছু বলার নেই।”
তবে খাবার আসে কোনও হোটেল বা রেস্তোরাঁ থেকেই। সরকারি চাকরি করেন এমন এক মহিলা বড়দিনের পার্টি দিয়েছিলেন সম্প্রতি। তাঁর সাফ কথা, “রান্না করে খাওয়াতে হলে পার্টির আনন্দ কখন করব। হেঁসেলেই তো সারা সন্ধ্যা পড়তে থাকতে হবে। তাই বাইরে থেকেই খাবার নিয়ে আসা হয়।” একটি বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজার কলকাতার বাসিন্দা ইন্দ্রনীল চৌধুরী বলেন, “আমি ও আমার সহকর্মীদের অধিকাংশ জনের বাড়ি কলকাতায়। এখানে পরিবার বলতে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান। এদিকে সারা সপ্তাহ অফিসের কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। তাই খুব নিকট কয়েকটি পরিবার মিলে নিজেদের মতো করে পার্টির আয়োজন করি। পালা করে এক এক জন দায়িত্ব নেন। ছুটির সময়টা এই ভাবেই কাটে।”
এক গৃহকর্ত্রীর বক্তব্য, ঘরোয়া পার্টির জন্য বরং ঘর গুছোই। পার্টি অনেক সময়ে পিকনিকও হয়ে যায়। কারও বাড়িতে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কেউ নিয়ে আসছে খাবার, কেউ কোনও পানীয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.