নদিয়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে রুগণ শিশুদের জন্য দুধ
জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে রুগ্ণ শিশুদের জন্য সুষম খাদ্য হিসাবে দুধ সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিল নদিয়া জেলা প্রশাসন। তবে জেলা প্রশাসনের এই বিশেষ উদ্যোগটি পরীক্ষামূলক ভাবে কৃষ্ণনগর সংলগ্ন কোনও একটি পঞ্চায়েত এলাকায় শুরু করা করা হবে। আর সেই ‘পাইলট প্রোজেক্ট’টি সফল হলে তবেই তা ধাপে ধাপে জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে অন্যান্য শিশুদেরও দুধ সরবরাহ করা যায় কি না, সে বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করা হবে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন। আর সেই দুধ সরবরাহ করবে কিষান মিল্ক ইউনিয়ন। সংস্থার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর উৎসব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে চাহিদা মতো দুধ সরবরাহ করার জন্য আমরা তৈরি। পরিকাঠামো আরও উন্নত করা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১৮৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে গড়ে ৫০টির মতো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। আর প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গড়ে দশ জন করে রুগ্ণ শিশু আছে, যাদের শরীরে ব্যাপক পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে। এ সব টার্গেট করেই প্রকল্পটি শুরু করা হবে। আর তার জন্য সব রকম ভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে তিনটি পর্যায়ে খাবারের টাকা দেওয়া হয়। প্রসূতি মায়েদের জন্য ৫ টাকা, সাধারণ শিশুদের জন্য ৪ টাকা ও রুগ্ণ শিশুদের জন্য ৬ টাকা। জেলা প্রশাসনার এক কর্তার দাবি, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ৬ টাকায় ওই রুগ্ণ শিশুদের যে খাবার দেওয়া হয়, তাতে তাদের পেট ভরে। কিন্তু সেই খাবারে সব ধরনের ‘পুষ্টিগুণ’ থাকে না। বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের অভাব থাকে। জেলাশাসক অভিনব চন্দ্রা বলেন, “রুগ্ণ শিশুরা যাতে সুষম খাবার পায়, অর্থাৎ যাতে সেই খাবারের সব ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে, এমন খাবারই আমরা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছি। সেই কারণেই আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে দুধের প্যাকেট পৌঁছে দিতে চলেছি।”
সকাল ৮টার মধ্যেই এই দুধ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হবে। প্রাথমিক ভাবে কৃষ্ণনগর সংলগ্ন তিনটি পঞ্চায়েত এলাকাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্য থেকে একটি পঞ্চায়েতকে বেছে নিয়ে প্রকল্প চালু করা হবে এবং প্রশাসনের সর্ব স্তরে ওই প্রকল্পটির উপর কড়া নজরদারি চালানো হবে। প্রকল্পটি সফল ভাবে বাস্তবায়িত করার জন্য কী কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে, তা চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি, সেই সব প্রতিবন্ধকতাকে কী কী ভাবে অতিক্রম করা সম্ভব, তাও পর্যালোচনা করা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রতি সালে শিশুদের ওজন মাপা হয়। নির্দিষ্ট বয়সের শিশুদের নির্দিষ্ট ওজনের একটি তালিকা আছে। সেই তালিকা অনুযায়ী রুগ্ণ বা পুষ্টির ঘাটতি আছে এমন শিশুদের চিহ্নিত করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “রুগ্ণ বা পুষ্টির অভাব আছে এমন শিশুদের আমরা একটি কার্ড দেব। সেই কার্ড দেখিয়ে প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থেকে কার্ডে নথিভুক্ত করে বাড়িতে দুধ নিয়ে যাবেন এই শিশুর পরিবারের লোকজন।” তিনি বলেন, “রুগ্ণ শিশুদের জন্য বরাদ্দ ৬ টাকাই ওই দুধের জন্য ব্যয় করা হবে। এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করার জন্য বিশেষ ভাবে উদ্যোগী জেলা প্রশাসন একটি বিস্তারিত রূপরেখা তৈরি করে ফেলেছে। জেলাশাসক অভিনব চন্দ্রা বলেন, “এর আগে ভারতের কোনও জেলাতেই এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা চাই, রুগ্ণ শিশুদের যেন কোনও রকম পুষ্টির ঘাটতি না থাকে!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.