ভারত-পাকিস্তান ওয়ান ডে সিরিজের শুরুটাও টি-টোয়েন্টি সিরিজের মতোই হল। ভারতকে পিছিয়ে থেকে লড়াইয়ে ফিরতে হবে। তবে আমি বিশ্বাস করি, টি-টোয়েন্টির মতোই পিছন থেকে এসে পাকিস্তানকে ধরতে পারবে ভারত। সিরিজটাও জিততে পারবে। যদিও এই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পর পর দুটো ম্যাচ জেতা যথেষ্ট কঠিন।
রবিবার চেন্নাইয়ে ভারত অধিনায়কের খেলা অন্যতম সেরা একটা ওয়ান ডে ইনিংস দেখতে পেলাম আমরা। যদিও পাকিস্তানকে হারানোর পক্ষে ধোনির লড়াইটা যথেষ্ট ছিল না। এই সিরিজে ভারতের ব্যাটিং কিন্তু আরও ভাল হতে হবে। ধোনির হাতে একটা মোটামুটি তরুণ, অনভিজ্ঞ ফাস্ট বোলিং অ্যাটাক আছে। যারা কিন্তু বোর্ডে বড় রান থাকলে বিপক্ষকে ঝামেলায় ফেলে দিতে পারে। ঠিক যেমন আমদাবাদের টি- টোয়েন্টিতে হয়েছে।
আগের দিন চেন্নাইয়ে প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ার ফলে মাঠ ভিজে ছিল। সুইং বোলিংয়ের পক্ষে আদর্শ পরিবেশও ছিল। মানছি, টস হেরে ব্যাটিং পাওয়ায় ধোনিদের কাজটা একটু কঠিন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভারতের টপ অর্ডারের কাছ থেকে আমি আরও লড়াই আশা করেছিলাম। কঠিন পরিস্থিতিতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স ইদানীং কিন্তু একটা চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতকে সিরিজে ভাল করতে হলে কিন্তু ওপেনারদের একটা বড় মঞ্চ তৈরি করে দিতে হবে। যার উপর দাঁড়িয়ে মিডল অর্ডার ব্যাটিং একটা ভাল স্কোর খাড়া করতে পারে। |
রোহিত শর্মা: বারবার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ। |
মিডল অর্ডারের কথা নিয়ে লিখতে বসে একটা প্রসঙ্গ তুলতে হচ্ছেই। রোহিত শর্মা। রোহিত আমাদের কাছে একটা ধাঁধার মতো। ওর দক্ষতা আছে, কিন্তু একটার পর একটা সুযোগ পেয়েও সফল হতে পারছে না। জাতীয় দলে যথেষ্ট সুযোগ পায়নি, এই অভিযোগ জানানোর মতো জায়গায় কিন্তু রোহিত আর নেই। এই মুহূর্তে ভারত কিন্তু রোহিতের জায়গায় জাডেজাকে খেলাতেই পারে। তা হলে বোলিংয়েও বৈচিত্র আসবে আর জাডেজার ব্যাটিংটাও পরের দিকে কাজে লাগবে।
চিপকে আরও একবার বোঝা গেল এই ধরনের ক্রিকেটে ধোনি কতটা বিপজ্জনক। এই কারণেই সীমিত ওভারের ক্রিকেট দুনিয়ায় ধোনিকে সবাই এতটা সমীহ করে। ধোনিকে এই ফর্মটা ধরে রাখতে হবে। এক জন অধিনায়ক যখন ভাল ফর্মে থাকে, তখন দলের উপর তার কর্তৃত্বটাও অনেক বেশি থাকে।
এই পাকিস্তান দলটাকে দেখে আমি কিন্তু চমকে যাচ্ছি। অনেক দিন বাদে এমন একটা পাক দল দেখলাম, যাদের মধ্যে জেতার খিদেটা আছে। যারা সফল হওয়ার জন্য ঝাঁপাতে চায়। আর একটা বিস্ময়ের ব্যাপার হল, কী ভাবে পাকিস্তান একটার পর একটা ফাস্ট বোলার তুলে আনে। এ বারের ইরফান, জুনায়েদ আর গুল কিন্তু যে কোনও দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেবে। ৫০ ওভারের ম্যাচের জন্য ব্যাটিংটাও যথেষ্ট ব্যালান্সড। মিসবা আছে, ইউনিস আছে।
আমি ঠিক নিশ্চিত নই, ২০১৫ বিশ্বকাপের জন্য মিসবা-ইউনিস থাকবে কি না। আমার মনে হয়, পাক নির্বাচকেরা অতদূরে না তাকিয়ে আপাতত যে কাজের জন্য যে লোককে প্রয়োজন, তাকে সেই দায়িত্বটাই দিয়েছে। পাকিস্তানের সমস্যা একটাই। সঈদ আজমল। পাকিস্তানি এই স্পিনার কিন্তু এখনও ভারতীয় ব্যাটিংকে সে ভাবে ভাঙতে পারছে না।
|