দেশে নয়, ভারতের মাটিতে কাটবে বছরের প্রথম দিন। আর সেখানে ইউনিস খান-সইদ আজমলদের পছন্দের মেনু কী?
হালাল মাটন, গোস্ত বিরিয়ানি, কিংবা জিভে জল আনা শিক কাবাব? সরি, একটাও নয়।
ওটা সুন্দরবন সাফারি!
চমকে উঠছেন? নিশ্চয়ই ভাবছেন ম্যাচ তো ইডেনে। সুন্দরবনে আবার কী হচ্ছে? তার উপর পাঁচ বছর পর শহরে পাকিস্তান। এত হাইপ্রোফাইল একটা সিরিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ইডেনে জিততে পারলে যে সিরিজটা হাফিজের পকেটে চলে আসবে। হারলে আবার ছিনিয়ে নেওয়া অনেকটা জমি ছেড়ে দিতে হবে ধোনিদের। শহরে নেমেই পাকিস্তান কোথায় পিচ দেখতে ছুটবে। কোথায় ইডেনে ‘টু-নিল’-এর স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ডাভ হোয়াটমোরের ক্লাস বসবে। তা নয়, প্ল্যানিংয়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার!
|
বিমানবন্দরে ইরফান। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
কী ভাবে সম্ভব এই বিলাসিতা? ওয়াঘার ওপারের সাংবাদিকরাও কেউ কেউ আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছেন। ভারতের বাজারে হাফিজদের এমন রমরমা দেখে ঘুরেফিরে আসছে অবাক প্রশ্ন এটা কোন পাকিস্তান? ক্যাপ্টেন কুলের দেশে এসে এরা এত ‘কুল’ থাকছে কী ভাবে? কোন মন্ত্রে?
ঘটনা হচ্ছে, ভারতে এসে এ রকম ভারতকে পাওয়া যাবে, হাফিজরা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি। ধোনিরা শুধু যে বাইশ গজে হারছেন তা তো নয়। মানসিক লড়াইও অনেকটা হেরে বসে থাকছেন। সোমবার বর্ষশেষের দিন শহরে পাকিস্তান ঢুকল হইহই করে। মেজাজে। আর ধোনি ঢুকলেন একাকী। নিঃসঙ্গ। টিম ইন্ডিয়ার বাকিরা ছুটিতে, আসছেন আজ। শুধু শহরের জামাই বলে আগেভাগে এসে পড়লেন ধোনি।
মঙ্গলবার ইডেনে প্র্যাক্টিস করা মিসবা উল হকদের কাছে শেষ বিকল্প ছিল। একান্তই যদি কিছু না করা যায়, তা হলেই ‘ইডেন চলো’। কিন্তু কপালের ফেরে সেই ইডেনেই শেষ পর্যন্ত যেতে হচ্ছে। ভিসা সমস্যায় সুন্দরবন সাফারি বাতিল হয়ে গেলে আর কী করা যাবে?
|
সইদ আনোয়ারের সঙ্গে ওর তুলনা টানা মোটেই ঠিক হবে না। আনোয়ার কিংবদন্তি। ওর মতো ব্যাটসম্যান পাকিস্তানে খুব কম জন্মেছে। তা ছাড়া নাসির সেঞ্চুরি করলেও একটা জিনিস আমার বলার আছে। ওকে ফিটনেস নিয়ে প্রচুর খাটতে হবে। কারণ নাসিরের চেহারাটাও বেশ ভারী।
নাসির জামশেদ সম্পর্কে পাক প্রচারমাধ্যমে মিসবা-উল-হক |
|
চেষ্টাচরিত্র প্রচুর চলেছে দু’দিন ধরে। রবিবার রাতে পাক ম্যানেজারের ফোন করেন সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে-কে। জানতে চান, পয়লা জানুয়ারি কী ভাবে সুন্দরবন সাফারির আয়োজন করা যায়? ছেলেরা লঞ্চে করে সুন্দরবন ঘুরতে চায়।
ফোন পাওয়ার পরের কয়েক ঘণ্টা ক্রীড়ামন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সব অফিসেই ছুটেছেন সিএবি কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও যথেষ্ট আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু লাভ হল না। টিম পাকিস্তানের ভিসা শহরভিত্তিক। সুন্দরবন যাওয়ার তাই লাইসেন্স নেই।
তার পরেও দুটো বিকল্পের সন্ধান দেয় সিএবি। তাজপুরের সমুদ্রসৈকত। নইলে সিরাজউদ্দৌল্লার মুর্শিদাবাদ। মুর্শিদাবাদের দূরত্ব কলকাতা থেকে অনেকটা। আর তাজপুরে মিসবাদের কতটা নিরাপত্তা দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। এই দুটোর একটাও তাই হল না। তা ছাড়া পাকিস্তান লঞ্চে ঘুরতেই বেশি উৎসাহী ছিল।
অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস? উত্তরটা সময় দেবে। কিন্তু আপাতত দু’দলের অবস্থান দেখে ইডেন ম্যাচ নিয়ে একটাই কথা বলতে হচ্ছে।
‘অ্যাডভান্টেজ পাকিস্তান’। |