কবি, মানুষ ও সন্ন্যাসী
ভারতপথিক
নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছিলেন ক্ষুধা কাকে বলে! ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে নগ্ন পায়ে চাকরির জন্য ঘুরেছেন। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। জ্ঞান ফিরলে দেখেন, বন্ধুরা গান শোনাচ্ছে। গান তখন ভাল লাগে না। গান থামিয়ে বলেন, খিদের জ্বালা তোরা কী বুঝবি? ভারতবর্ষকে চিনেছেন দারিদ্র, অশিক্ষা আর ক্ষুধা দিয়েই। ৩৯ বছরের জীবনে মাত্র দশটি বছর মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরেছিলেন। সিমলেপাড়ার নরেন হয়ে উঠেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।
তাঁর কবিতা, গান, জীবন সংগ্রাম, ঈশ্বর উপলব্ধি আর পূর্ণাঙ্গ ভারতের স্বপ্ন এই নিয়েই তৈরি হয়েছে তথ্যচিত্র ‘কবি মানুষ ও সন্ন্যাসী’। পরিচালনায় নীতিশ মুখোপাধ্যায়। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের সার্ধশতবর্ষে এটি রামকৃষ্ণ মিশনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। সাহায্যে কেন্দ্রীয় সরকার। ছবিটির একাংশে থ্রিডি অ্যানিমেশনের সাহায্যে বিবেকানন্দের ভাবনাকে রূপ দেওয়া হয়েছে। ১৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এই তথ্যচিত্রটির ডিভিডি উদ্বোধন করবেন স্বামী বিবেকানন্দের সিমলা স্ট্রিটের বাড়িতে।
স্বামীজির ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সভাপতিত্বে একটি জাতীয় কমিটি তৈরি করে নানা সামাজিক ও উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের গ্রন্থাগার গড়ে তোলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে ‘বিবেকানন্দ ভলান্টিয়ার্স ফোরাম’, বছরে তারা চারটি যুব সম্মেলন আয়োজন করবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং বড় গ্রন্থাগার ও বিদেশি দূতাবাসগুলিতে বিবেকানন্দের জীবন ও দর্শন বিষয়ে বিশেষ প্রকাশিত গ্রন্থ দান করা হবে। মূল অনুষ্ঠানগুলি শুরু হবে ১২ জানুয়ারি, জানালেন ‘বিবেকানন্দের বাড়ি’র সম্পাদক স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ।
২০ জানুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সারা দিনব্যাপী আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী আত্মস্থানন্দ। প্রকাশিত হবে স্মারক গ্রন্থও। সঙ্গের ছবি তথ্যচিত্র থেকে: রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের ভূমিকায় কনৌজ দাস এবং প্রতীক সেন।

আরেক রকম
দৈনন্দিন যাপনের গ্লানি থেকে বাঁচার দিশা পেতে আমরা খুঁজি আলোর ঠিকানা। কেউ কোথাও ঠিক জ্বালিয়ে রেখেছেন অনির্বাণ শিখা। ‘আমরা যদি প্রতিদিনই-- এমনকী প্রতিমুহূর্তই-- সজাগ রাখি নিজেকে, তবে কেবলই সেই আরেক রকমের দিকে উন্মীলিত হতে পারি আমরা।’ লিখছেন শঙ্খ ঘোষ, নতুন পাক্ষিকপত্র ‘আরেক রকম’-এর অন্যতম সম্পাদকীয় নিবন্ধে। অশোক মিত্র সম্পাদিত ও সমাজচর্চা ট্রাস্ট প্রকাশিত এই নব-পত্রের সম্পাদকমণ্ডলীতে শঙ্খবাবু ছাড়াও আছেন গৌরী চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, কুমার রাণা ও মিহির ভট্টাচার্য। অশোক মিত্র স্পষ্টই বলেছেন, ‘প্রথাগত চর্চা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে একটু আলাদা ধরনের কথোপকথন কি সম্ভব নয়?’ নিশ্চয়ই সম্ভব। ছ’টি সম্পাদকীয় নিবন্ধ, সমসাময়িক প্রসঙ্গ, অশোক মিত্র অমিয়কুমার বাগচী রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায় মালিনী ভট্টাচার্য সোমেশ্বর ভৌমিক অম্লান দাশগুপ্ত একরাম আলি আশীষ লাহিড়ী অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় অংশুমান ভৌমিকের লেখায় তারই প্রতিশ্রুতি। সঙ্গে হিরণ মিত্রের প্রচ্ছদ।


সুকুমার ১২৫
শতবর্ষে পৌঁছতে সুকুমার রায়ের (১৮৮৭-১৯২৩) তখনও পাঁচ বছর দেরি। ‘প্রস্তুতিপর্ব’ পত্রিকার দুই নবীন সম্পাদক অনুপম মজুমদার ও আশীষ লাহিড়ী প্রকাশ করলেন একটি বিশেষ সংখ্যা। লিখলেন, ‘বাঙালি ভদ্রলোকেরা সুকুমার রায়কে শুধু ভালোই বেসেছেন, তাঁকে বোঝবার চেষ্টা করেননি।’ সেই চেষ্টায় তাঁরা একত্র করলেন একুশটি নিবন্ধ আর এক ক্রোড়পত্র। সুকুমারের শতবর্ষে দিল্লির বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত উৎসবে শিশিরকুমার দাশের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় বারোটি নিবন্ধের সংকলন শতায়ু সুকুমার। দুষ্প্রাপ্য এই দু’টি সংকলন সুকুমারের ১২৫ বছরে পুনঃপ্রকাশ করল ‘কারিগর’। ‘প্রস্তুতিপর্ব’ সংখ্যাটি গ্রন্থাকারে, ক্রোড়পত্রটি পরিবর্ধিত, দুর্লভ চিত্রাদি সংযোজিত হয়েছে সন্দীপ রায়ের সহায়তায়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের হৃদয়-আসন গ্রন্থ সহ এ দু’টির প্রকাশ ৮ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় আশুতোষ শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহে। থাকবেন শঙ্খ ঘোষ, প্রসাদরঞ্জন রায়, আনিসুজ্জামান, সুধীর চক্রবর্তী, ও সন্দীপ রায়।

মেয়েদের ছবি
দিল্লির তরুণীটির মৃত্যু বছরের শেষে লজ্জিত করল গোটা দেশকে। মেয়েদের অধিকারই শুধু নয়, মেয়েদের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার ওপরেও পুরুষ-সমাজের যে আক্রমণ নেমে আসছে নিত্যদিন তা আজ আমাদের জীবনযাপনের অঙ্গ। তবু প্রতিবাদের ভাষা তৈরি হয়, সঙ্গে সাহস আর স্বপ্নও। পীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের তেমন নজির নিয়ে তৈরি একগুচ্ছ সিনেমা, ভারত পাকিস্তান নেপাল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তান ইরান আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন ইন রেডিয়ো টেলিভিশন, ইন্ডিয়া আর স্বয়ম-এর যৌথ উদ্যোগে রোটারি সদনে ৪-৬ জানুয়ারি এই উৎসব ‘আওয়ার লাইভস... টু লিভ’।

ছিন্নমূল
ওঁরা ঘরছাড়া। কোকরাঝাড় থেকে তুরস্ক, সোমালিয়া থেকে শ্রীলঙ্কা বা অস্ট্রেলিয়া, কখনও দেশের ভিতরে, কখনও বা সীমানা পেরিয়ে হাজারে-লাখে, কখনও খোলা আকাশের নীচে, কখনও পলিথিন চাদরের আশ্রয়ে জীবিকা ও সংস্কৃতি হারানো কালো-বাদামি-হলদে-সাদা মানুষের দল। জাতিগত বা গোষ্ঠীগত হিংসা, যুদ্ধ, রাষ্ট্ররোষ কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিংশ শতক থেকেই এঁদের দল বাড়ছে। বিশ্বজোড়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলির ফলে এই সংখ্যা এখন ভয়াবহ। সবচেয়ে সংকটে নারী ও শিশুরা। রাষ্ট্রপুঞ্জসহ নানা দেশ সাহায্যের হাত বাড়ালেও, প্রয়োজনের সিন্ধুতে তা বিন্দুতুল্য। মানবতার এই বিপুল বিপর্যয়ের স্বরূপ অনুসন্ধান করতে, প্রতিকার খুঁজতে ও লড়াইয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার জানাতে আন্তর্জাতিক সংগঠন, আই এ এস এফ এম-এর চতুর্দশ অধিবেশন বসছে কলকাতায়, ‘স্বভূমি’তে। আশিস নন্দী, আনিসুজ্জামান, আই এ রহমান, রিতু মেনন, রণবীর সমাদ্দার, ওয়াল্টার ফার্নান্ডেজ, ক্রিস ডোলেন, সুজান মার্টিন সহ বিশ্বের নানা প্রান্তের প্রায় ৩০০ সদস্য লেখক, গবেষক, কর্মী ও ক্ষতিগ্রস্তরা আসছেন। ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ-এর উদ্যোগে এই সম্মেলন ৬-৯ জানুয়ারি।

স্মরণে
জীবনকালেই একাধারে হয়ে উঠেছিলেন সবার মা। ৪ জানুয়ারি ‘শ্রীমা’ সারদা দেবীর ১৬১তম জন্মতিথি। তাঁর স্মরণে শহরে নানা অনুষ্ঠান, অনুষ্ঠান শহরের বাইরেও। শ্রীমা’র ভাবনায় ১৯১২-য় জয়রামবাটীর কাছের গ্রাম কোয়ালপাড়ায় গড়ে ওঠে ‘জগদম্বা আশ্রম’, আদুরে নাম ‘মায়ের বৈঠকখানা’। সে কালে কলকাতা-অভিমুখে বিষ্ণুপুর থেকে ট্রেন ধরতে গেলে গরুর গাড়িতে দীর্ঘ পথ-অতিক্রমের ক্লান্তি জুড়োতেন এই ছোট্ট আশ্রমে, আবার জয়রামবাটীতে অপ্রতুল শাকসব্জি, এটা-ওটা কেনাতেন কাছেই কোতুলপুরের হাট থেকে, ভক্ত-সন্তানরা খাবেন বলে। গ্রামের তরুণদের সৃজনশীলতায় মোড় ফেরানোর কাজও শুরু এখানেই। লোকচক্ষুর আড়ালে পেরিয়ে শ্রীমা’র নিজের হাতে গড়া এই আশ্রমের শতবর্ষ। প্রকাশিত হয়েছে স্মরণে, মননে ঋদ্ধ স্মরণিকা ‘শ্রীসারদা’।

কণ্ঠচর্চা
গলায় সুর-ই নেই, বা নাকি সুরে কথা বলে, তার আবার গান হবে কোথা থেকে? সত্যিই কি সুরেলা গলা ঈশ্বরপ্রদত্ত? এ সবই ভাবিয়েছিল মার্গ সঙ্গীত শিল্পী শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ছোট থেকেই দেখেছেন বাবা সঙ্গীতাচার্য অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলার তান। কী করে আসে এই তান? রেওয়াজ না কি অন্য কিছু। এ সব থেকেই ভয়েস ট্রেনিং-এর ভাবনা। কয়েকটি পেশির যথাযথ ব্যবহারিক প্রয়োগই সুরেলা গলার মূল রহস্য। প্রতিভাবানদের তা আপনিই হয়, বেসুরোদের দরকার পেশির ব্যবহারিক অভ্যাস। আমেরিকায় ভয়েস ট্রেনিং-এর বেশ কিছু কর্মশালা করেছেন শান্তনু। ৬ জানুয়ারি সল্টলেকের রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবনে সকাল এগারোটা থেকে শুরু হবে তাঁর ভয়েস ট্রেনিং কর্মশালা।

বিয়ের গান
হিন্দি ছবি আর সিরিয়ালের অনুপ্রেরণায় বহু বাঙালি বাড়িতেই ফিরে এসেছে বিয়ের গান। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলি ফিল্মি গান। কিন্তু এক সময় হলুদ কুটতে কুটতে বা ঢেঁকিতে পাড় দিতে দিতে মেয়েরা মুখে মুখে গাইতেন বিবাহের নিজস্ব গান। সহজ সুরের সেই গানে থাকত কৃষি ভিত্তিক সংসারের অভিজ্ঞতা, আশা আর দাম্পত্যের কথা। ধুলো সরিয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিক্ষায়তন ‘রাগ-রীত’ তুলে এনেছে বাঙালি বিয়ের পাশাপাশি রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ সহ উত্তর ও পূর্ব ভারতের বেশ কিছু সঙ্গীত। শিক্ষক কুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আঠাশ জন ছাত্রছাত্রী (বয়স ৬-৫২) সেই সঙ্গীত পরিবেশন করবেন সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায়।

আলোকচিত্র দিবস
১৮৫৬-এর ২ জানুয়ারি কলকাতার টাউন হলে প্রতিষ্ঠিত হয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি অব বেঙ্গল। সংস্থার সম্পাদক নির্বাচিত হলেন রাজেন্দ্রলাল মিত্র। এ দেশে ফটোগ্রাফি চর্চায় রাজেন্দ্রলাল এক পথিকৃৎ। প্রখ্যাত আলোকচিত্রী চারু গুহ স্মরণে গঠিত ‘বই-চিত্র’ সংস্থার তরফে প্রতি বছর ২ জানুয়ারিকে বেঙ্গল ফটোগ্রাফি ডে হিসেবে উদ্যাপন করা হয়। এ বছর সে দিনটিতে শুরু হবে প্রয়াত সুনীল জানার দুর্লভ আলোকচিত্রের প্রদর্শনী (সঙ্গে তারই একটিতে নজরুল)। চলবে পনেরো দিন। প্রদর্শনী উদ্বোধন করে তাঁর কর্ম ও জীবন নিয়ে বলবেন সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। জানুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হবে উদীয়মান আলোকচিত্রীদের কাজের প্রদর্শনী, ‘বই-চিত্র ছবিমেলা’।

এত দিনে
তাঁর মতো কয়েকজনের হাত ধরেই কয়েকশো বছর বিরতির পর ভারতীয়দের সক্রিয় বিজ্ঞানের জগতে পুনঃ-পদার্পণ। কিন্তু বাঙালি তাঁর অবদান মনে রাখল শুধু একটি পাহাড়চূড়ার অনুষঙ্গে! তিনি রাধানাথ শিকদার (১৮১৩-’৭০)। এত দিনে আশীষ লাহিড়ীর দ্বি-শতবর্ষে রাধানাথ শিকদার প্রকাশ করছে সূত্রধর, ৫ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় বিডন স্ট্রিটে ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ির প্রাঙ্গণে। এই সঙ্গে ১২৭ বছর পর মানবেন্দ্র নস্করের সম্পাদনায় পুনঃপ্রকাশিত হচ্ছে দুর্গাদাস লাহিড়ীর আদর্শ-চরিত কৃষ্ণমোহন। এটি রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দ্বিশতবর্ষ। আর সুকুমার রায়ের ‘সন্দেশ’-এ প্রকাশিত লেখার সংকলন জীবনী সপ্তদশ (সম্পা: প্রসাদরঞ্জন রায়) পৃথক বই আকারে প্রথম প্রকাশিত হচ্ছে। থাকছেন সমর বাগচী, গৌতম নিয়োগী ও অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত।

ধ্রুপদী
গত বছর ছিল উস্তাদ আলি আকবর খানের জন্মের ৯০ বছর। গত বছরই চলে গেলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। সুরের আকাশের এই দুই নক্ষত্রের স্মরণে তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের ‘শ্রীরঞ্জনী’ সংস্থা আয়োজন করেছে ‘স্বরসম্রাট উৎসব’। “আমার বাবা রঞ্জন মজুমদারের নামেই এই সংস্থা। খানসাহেব এবং পণ্ডিতজির স্মরণে এই উৎসব এ বছরই শুরু হচ্ছে,” বললেন তেজেন্দ্রনারায়ণ। ৫ জানুয়ারি রাতভর এবং ৬ সন্ধেয় নজরুল মঞ্চে এই উৎসব উজ্জ্বল হয়ে উঠবে জাকির হোসেন, শিবকুমার শর্মা, বিরজু মহারাজ, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, যশরাজ, গিরিজা দেবী, স্বপন চৌধুরী ও আশিস খানের নিবেদনে। শুরু হচ্ছে ‘স্বরসম্রাট রত্ন’ সম্মান প্রদান, প্রথম প্রাপক শঙ্কর ঘোষ।

নতুন মুখ
ছেলেটার মন নেই পড়ায়, পরের জন্মে পরিযায়ী পাখি হবে ভাবে। নেপাল-বাংলাদেশ সীমান্তে ছোট্ট মফস্সল শহরে বন্ধ কারখানা, কাজ নেই। বাবা-মা বাংলাদেশের উদ্বাস্তু, আইনি ছাড়পত্র নেই। হঠাৎ একদিন ছেলেটার স্কুলে এক কমবয়সি দিদিমণি এসে হাজির, প্রথমেই তাঁর নজরে পড়ে বেমানান এই ছেলেটি... আর বলতে নারাজ ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী তাঁর নির্মীয়মাণ ফড়িং ছবিটি নিয়ে: ‘দর্শক দেখে কী বলবেন সেটাই সবচেয়ে বড় টেনশন।’ ইতিমধ্যে ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন-এর ‘দ্য ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস ল্যাব’-এ ছবিটি বছরের সেরা ‘প্রোজেক্ট’, তত্ত্বাবধানে ফিলিপা ক্যাম্পবেল, ক্রিস প্যাটন আর সুধীর মিশ্রের মতো সিনেমাবেত্তা। এই সুবাদে বাঙালি তরুণটির জুটেছে প্রসাদ স্টুডিয়োর ‘ডি আই’ পুরস্কার, যা ছবিটিকে নিখরচায় আংশিক কারিগরি-সহায়তা জোগাবে। গোয়ায় সদ্যসমাপ্ত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এনএফডিসি আয়োজিত ‘ফিল্ম বাজার’ ইন্দ্রনীলকে এনে দিল এই সম্মান, নানা দেশের ফেস্টিভ্যাল-প্রতিনিধিরা আগ্রহ দেখালেন ছবিটি নিয়ে। ‘যাদবপুরে ইংরেজি অনার্স পড়ার সময় ফিল্ম সোসাইটি আগ্রহ তৈরি করে দেয় সিনেমা নিয়ে, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেই চলে গেলাম পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে।’ তাঁর এটিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাহিনিচিত্র, প্রযোজনায় চিত্রবীক্ষণ অডিয়ো-ভিস্যুয়াল প্রাইভেট লিমিটেড।

জীবনশিল্পী
সে-ও যেন আর এক নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ। সদর স্ট্রিটের ফুটপাথে ১৯৫৯-এ ছবির প্রদর্শনী নিয়ে বসে পড়েছিলেন তিনি, উদ্দেশ্য আধুনিক ছবিকে আর্ট গ্যালারির ‘এলিট’ ঘেরাটোপ থেকে বার করে আনা। শুধু নিজের স্টুডিয়োয় ছবি আঁকা আর হিল্লিদিল্লি প্রদর্শনী নয়, শিল্প নিয়ে রীতিমতো আন্দোলনে নেমেছিলেন প্রকাশ কর্মকার। জনপ্রিয়তার আন্দোলন। ভারতীয় জাদুঘরের রেলিং থেকে কফি হাউস কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছবি-সহ শিল্পীকে দেখা যেত প্রায়ই। ১৯৬৮-তে কলকাতার পার্কে শুরু করেন মুক্ত ছবি-মেলা, পরে তা আসে রবীন্দ্রসদন চত্বরে। ব্যান্ডপার্টি বাজনা বাজিয়ে চলেছে, প্রকাশও চলেছেন সঙ্গে, হাতে পতাকার মতো করে ধরা সদ্য আঁকা ছবি। ‘সোসাইটি অব কন্টেম্পোরারি আর্টিস্টস’ আর ‘ক্যালকাটা পেন্টার্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য তিনি। ১৯৩৩-এ জন্ম। বাবা শিল্পী প্রহ্লাদ কর্মকার মানিকতলায় নিজের বাড়ির পাশে বানিয়েছিলেন ছোট্ট স্টুডিয়ো। সরকারি আর্ট স্কুলেও যখন পুরোদস্তুর ন্যুড স্টাডি শুরু হয়নি তখন প্রহ্লাদবাবুর স্টুডিয়োয় তার ব্যবস্থা ছিল। প্রকাশ প্রচলভাঙার সেই পরিবেশে মানুষ। সোজা কথা বলেন, অসঙ্গতিকে ভরিয়ে তোলেন জীবনমুখর রমণীয়তায়। কখনও চিৎকার করে বলেছেন ‘আমিই শ্রেষ্ঠ’, আবার কখনও শিশুর মতো, ‘কিছুই আঁকতে পারিনি আমি’। বর্ণময় সেই জীবনশিল্পী আশি পেরোবেন এ বছর। আজও সচল শিল্পীকে নিয়ে আনন্দসভা ২৪ জানুয়ারি, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় রোটারি সদনে। দেখানো হবে তাঁকে নিয়ে সন্দীপ রায়ের ছোট্ট একটি তথ্যচিত্রও।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.