বিশাল জলাশয়ের পাশের বসার জায়গাগুলি প্রায় ভর্তি। কচিকাঁচারা ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলের বাগানের মধ্যে আঁকাবাকা পথ ধরে। শীতের মিঠে রোদ মেখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তরুণ-তরুণীরাও। ভিক্টোরিয়া বা ময়দান নয়, শহরে নতুন তৈরি হওয়া রাজারহাটের ইকোপার্কেও বর্ষশেষে আসতে শুরু করেছেন মানুষ।
বছরের শেষ ক’টা দিনে উল্টোদিকের রবীন্দ্রতীর্থও ছিল জমজমাট। শুধু ঘুরতে আসাই নয়, গত কয়েকদিন ধরে চলা নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও দেখতে আসছেন মানুষ। রাজারহাট, নিউ টাউনের বাসিন্দাদের জন্য নিজস্ব অডিটোরিয়ামে চলছে নাচ, গান ও নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রাজারহাটের ৪৮০ একর জমির উপর তৈরি হয়েছে পরিবেশ বান্ধব ভ্রমণ কেন্দ্র ‘ইকো ট্যুরিজম পার্ক’। পার্কের ভিতরে রয়েছে ২০০ একরের জলাশয়ও। গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্কটির উদ্বোধন করে সেটির নামকরণ করেছেন ‘প্রকৃতি তীর্থ’। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। তবে শীতের উৎসবমুখর দিনগুলির কথা ভেবে বাড়ানো হয়েছে সময়সীমা। এই মরসুমে পার্ক খোলা থাকবে রাত ৯টা পর্যন্ত। |
ফলে রাজারহাট-নিউ টাউনের বাসিন্দারা এখন সন্ধ্যায়ও এই পার্কে ঘোরার সুযোগ পাবেন। সন্ধ্যায় পার্কে এখনও পর্যাপ্ত আলো নেই। তবে খুব দ্রুতই আরও আলো লাগানো হবে বলে হিডকোর তরফে জানানো হয়েছে।
বছর পাঁচেকের ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে পার্কে এসেছিলেন নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া টু-এর বাসিন্দা অনিরুদ্ধ দত্ত। বললেন, “প্রতি বছরের শেষ দিনের দুপুরটা কাটাই ভিক্টোরিয়া বা ময়দানে। বাড়ির কাছে এত সুন্দর পার্কটিতে ময়দান বা ভিক্টোরিয়ার মতো ভিড় নেই। তাই এ বার এখানেই এলাম। খুব সুন্দর। তবে বোটিংয়ের সুযোগ থাকলে ভাল হত।” নিউ টাউন ও রাজারহাটের আশপাশের অসংখ্য গ্রামের বাসিন্দারাও ভিড় করছেন পার্কে। যাত্রাগাছির বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল বলেন,“আমাদের আশপাশে পার্ক ছিল না। এই পার্কে শিশুরা নতুন ধরনের গাছ চিনতে ও জানতে পারছে। তবে সন্ধ্যার পরে আরও আলো জ্বললে ভাল হয়।”
দ্রুত এই সব ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। তিনি বলেন,“বোটিংয়ের জন্য নৌকো চলে এসেছে। আগামী ছ’মাসে বোটিং চালু হয়ে যাবে। ফুডকোর্ট, মিউজিক্যাল ফাউন্টেনও থাকবে। আশা করা যায়, এক বছর পরে অর্থাৎ ২০১৩ সালের বর্ষশেষের দিনে আরও জমে উঠবে এই পার্ক।” |