নারী-নির্যাতনে ক্রমাগতই কাছাকাছি হচ্ছে দিল্লি ও কলকাতা!
দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পরে কলকাতার দক্ষিণ শহরতলিতে একটি পরিত্যক্ত বাসে এক মহিলার উপরে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। রবিবারেও কলকাতায় রাতের চলন্ত বাসে শ্লীলতাহানির শিকার হলেন এক তরুণী। তবে অন্যায় সয়ে চুপ করে থাকেননি তিনি। প্রতিবাদ করে অন্য যাত্রীদের সাহায্য নিয়ে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। কলকাতাতেও মহিলারা যে নিরাপদ নন, এই ঘটনায় ফের তা সামনে চলে এল।
শনিবার দিল্লির মান্ডি হাউসের কাছে একটি সরকারি বাসে এক নাবালিকার শ্লীলতাহানি করে অন্য সরকারি বাসের কন্ডাক্টর। এর আগে দিল্লিতেই বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে খুন করা হয় এক তরুণীকে। যা নিয়ে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে নাগরিক সমাজ। যা এ দিনও বজায় ছিল শহরের পথে পথে। এর মধ্যেই খাস কলকাতায় ফের শ্লীলতাহানির শিকার হলেন বছর ছাব্বিশের এক তরুণী। বড়দিনের আগের রাতে দক্ষিণ শহরতলির ঠাকুরপুকুরে একটি পরিত্যক্ত বাসে এক মহিলার উপরে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার না-করে ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশ পরে বিহারের মোতিহারি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
কী হয়েছিল রবিবার?
পুলিশ জানায়, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ শ্লীলতাহানির ঘটনাটি ঘটে বেলঘরিয়াগামী একটি বেসরকারি বাসে। অভিযোগকারী তরুণী এবং অন্য যাত্রীরা অভিযুক্তকে চিড়িয়া মোড়ে বাস থেকে নামিয়ে ট্রাফিক পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে কাশীপুর থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ডিসি (উত্তর) গৌরব শর্মা জানান, চলন্ত বাসে এক তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে রবিবার রাতে নারায়ণ সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি বরাহনগরে। কাজ করে একটি বেসরকারি সংস্থায়। ঘটনার রাতে সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশের কাছে ওই তরুণীর দায়ের করা অভিযোগে লেখা হয়েছে, রবিবার রাতে তিনি এক সঙ্গীকে নিয়ে বেলঘরিয়া যাবেন বলে ধর্মতলা থেকে বেসরকারি বাসে উঠেছিলেন। সঙ্গী থাকলেও তিনি একাই ওই বাসের মহিলাদের আসনে বসে ছিলেন। তরুণীর দায়ের করা অভিযোগ থেকে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিডন স্ট্রিট থেকে বাসে ওঠে। বাসে উঠেই মহিলাদের আসনে ওই তরুণীর পাশে বসে পড়ে সে। তরুণী তাঁর অভিযোগে লিখেছেন, মাঝবয়সি ওই ব্যক্তিকে সরে বসতে বলা সত্ত্বেও সে সরেনি। তরুণীর অভিযোগ, পাশে বসে থাকা ওই ব্যক্তি তাঁর শ্লীলতাহানি করে। তিনি প্রাণপণে বাধা দেওয়া সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি নিরস্ত হয়নি। তার পরেই তিনি চিৎকার করে ওঠেন। ওই তরুণীর চিৎকার শুনে তাঁর সঙ্গী এবং বাসের অন্য যাত্রীরা অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। চিড়িয়া মোড়ে বাস থামিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তকে। |