নিজস্ব সংবাদদাতা • শান্তিনিকেতন |
এক ছাত্রীকে প্রস্রাব চাটাতে বাধ্য করার ঘটনায় আগেই বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্বভারতীর এক হস্টেল ওয়ার্ডেন। এ বার চুরির চেষ্টার অভিযোগেও নাম জড়ালো বিশ্বভারতীর আর এক ওয়ার্ডেনের! গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ওয়ার্ডেন অবশ্য ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।
বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে সবিস্তারে খোঁজ নিয়ে দেখছি।” যদিও বিশ্বভারতীর ছাত্র পরিচালক অধ্যাপক শমিত রায় বলেন, “ছাত্রীদের কাছ থেকে বিষয়টি শোনার পর, সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি রবিবার সকালে বিশ্বভারতীর গবেষিকাদের আবাসন ‘বিড়লালয়’ গার্লস হস্টেলের। আবাসিকদের অভিযোগ, ওই দিন ছাত্রীদের নামে অনুমোদিত বেশ কিছু জিনিসপত্র ও আসবাব বেআইনি ভাবে নিয়ে পালাচ্ছিলেন হস্টেল ওয়ার্ডেন সাবিত্রী মাইতি। তখনই তাঁকে হাতেনাতে ধরেন কয়েকজন আবাসিক। এক আবাসিক ছাত্রী বলেন, “সে দিনই সাবিত্রীদি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। দু’টি রিকশা ডেকে আমাদের জন্য বরাদ্দ মগ, পাপোস, চেয়ার-টেবল ও নানা আসবাব নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।” তা দেখতে পেয়েই জিনিসপত্র আটকে রেখে নিরাপত্তা বিভাগে খবর দেন ছাত্রীরা। নিরাপত্তাকর্মীরা এসে তা আটক করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনের ব্যবহৃত ঘর ও স্টোররুম। রবিবারের ওই ঘটনায় প্রয়োজনীয় তদন্ত করে অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন আবাসিকের ছাত্রীরা। তাঁরা ইতিমধ্যেই এই মর্মে বিশ্বভারতীর ছাত্রকল্যাণ আধিকারিকের (‘ডিন অফ স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার’) কাছে একটি লিখিত দাবিও জানিয়েছেন। পরে ছাত্র পরিচালকের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবারের ডাকা অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের থেকে নির্দেশ পেয়ে সোমবার দুপুরেই ওই হস্টেলে গিয়ে পুরো বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে দেখেছেন বিশ্বভারতীর দুই কর্মী।
পুরো ঘটনায় বিশ্বভারতীর এক আধিকারিকের মন্তব্য, “সর্ষের মধ্যেই ভূত! বিশ্বভারতী অনুদান দিলেও ছাত্রছাত্রীরা তা পাচ্ছেন না।” তার পরেই তাঁর সংযোজন, “পড়ুয়াদের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যাঁদের উপরে নির্ভর করছি, তাঁরাই যদি এমন করেন, তা হলে বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের।” |