নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
পারুলিয়া পঞ্চায়েতে এলাকার জামথলিয়া গ্রামে রয়েছে দু’টি অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র। সমস্যাও দু’রকমের। এলাকার বাসিন্দা এবং কেন্দ্রের কর্মীরা জানাচ্ছেন, গ্রামের প্রাথমিক স্কুল চত্বরে চলা জামথলিয়া অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের জন্য সম্প্রতি একটি ঘর তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ঘরের দরজা উই পোকা খেয়ে ফেলায় চাল, ডাল ও অন্যান্য সরঞ্জাম রাখা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, ওই কেন্দ্রের জন্য না আছে রান্নাঘর, না আছে উপযুক্ত বাসনপত্র। অথচ মা ও শিশু মিলিয়ে ২১৭ জন এই কেন্দ্রটির উপর নির্ভরশীল।
অন্য দিকে, জামথলিয়া-মুচিপাড়া কেন্দ্রের অবস্থা আরও করুণ। মূল গ্রাম থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ওই পাড়ায় সাকুল্যে ৩৫ ঘর আদিবাসী পরিবারের বাস। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এখানে না আছে রাস্তা, না আছে বিদ্যুৎ। ভরসার একমাত্র অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের (মা ও শিশু মিলিয়ে এই কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল ৫৫ জন) ছোট্ট একটি রান্নাঘর থাকলেও নিজস্ব কোনও ঘর নেই। অগত্যা মা ও শিশুদের খাওয়া এবং শিশুদের পড়াশোনা সবই হয় ডুমুর গাছের নীচে। শীতকালে রোদে পিঠ দিয়ে বসতে সমস্যা না হলেও পাশের গভীর নলকূপ থেকে গড়িয়ে আসা জলে কেন্দ্রের ঘা ঘেঁষেই তৈরি হয়েছে কাঁচা নর্দমা। যা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করেছে। আর বর্ষাকালে তো কথাই নেই। ভিজতে ভিজতে এসে কোনও ক্রমে ডিম-খিচুড়ি নিয়ে যে যার মতো বাড়ির পথ ধরেন। |
আদিবাসী পাড়ার সুন্দরী সরেন, লক্ষ্মী মাড্ডি বা কেন্দ্রের কর্মী রীতা আঙ্কুর বললেন, “আড়াই বছর আগে কেন্দ্র চালু হয়েছে। মাস তিনেক আগে রান্নাঘরটি যদিও হল তাতে সমস্যা মেটেনি।” তাঁদের অভিযোগ, “সমস্যার কথা স্থানীয় পারুলিয়া পঞ্চায়েতে জানানো হলেও কাজ হয়নি।” অন্য দিকে, জামথলিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী মুক্তান্বেষা খাতুন জানালেন, আন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি যেটা সবচেয়ে জরুরি, সেটা বড় বাসনপত্র। কারণ যে বাসনপত্র রয়েছে সেগুলি ছোট। না হলে খুচুড়ি কখনও পুড়ে যায়। একই দাবি রেহেনা বিবি বা টনিকা বাউড়িদের। সমস্যার কথা সিডিপিওকে জানিয়েছি বলেলেন, মুক্তান্বেষা। দুবরাজপুরের সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক বিপ্লব সেন বলেন, “মুচিপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ক্ষেত্রে কী হয়েছে জানা নেই। তবে জামথলিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাসনপত্রের প্রয়োজন আছে। দেখি কী করা যায়।”
পারুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান রবিলাল আঙ্কুর বলেন, “মুচিপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর তৈরির জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল। সেটা বাতিল হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই নতুন করে দরপত্র ডাকা হবে।” দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে ছিল না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।” |