স্পিড বোট, পরিযায়ীর সঙ্গে বছর শুরু
নকনে ঠান্ডার মধ্যেই আজ থেকে শুরু নতুন বছর। হই-হুল্লোড়ে প্রথম দিনটি কাটাতেই পছন্দ করেন বেশির ভাগ মানুষজন। ঢল নামে নানা পার্ক, রিসর্ট বা পিকনিকের জায়গায়। শিল্পাঞ্চলের এমন কয়েকটি জায়গায় প্রতি বছরই ভিড় জমান বাসিন্দারা। বছরের প্রথম দিন আনন্দে কাটানোর জন্য এ বার নানা জায়গায় থাকছে নানা ব্যবস্থা।

কুমারমঙ্গলম পার্ক
দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর মাঝখানে রয়েছে পার্কটি। আটের দশকের মাঝামাঝি দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট বিশাল এক জলাভূমিকে কেন্দ্র করে ৮০ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলে পার্কটি। দেশের প্রথম ইস্পাত মন্ত্রী মোহনকুমার মঙ্গলমের নামে পার্কের নামকরণ করা হয়। শুধু বিশাল লেক, বোটিং, সুসজ্জিত বাগান, চিলড্রেন্স পার্ক, ফুড প্লাজাই নয়, তরুণ-তরুণীদের জন্য রয়েছে ‘লাভার্স পয়েন্ট’। মুখ্য আকর্ষণ, মিউজিক্যাল ফোয়ারা। চড়ুইভাতি করার ব্যবস্থা রয়েছে।

ভিড়িঙ্গি শ্মশান কালী মন্দির
ভিড়িঙ্গি মোড় থেকে বেনাচিতি বাজারের দিকে সামান্য এগোলেই মন্দির। ১২৫৯ বঙ্গাব্দে অক্ষয়কুমার রায় মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। গাছগাছালিতে ভরা আশ্রমিক ও মনোরম পরিবেশ। বছরের প্রথম দিন পুজো দেওয়ার পাশাপাশি নিশ্চিন্তে সেখানে বেশ কিছুটা সময় কাটালে মন্দ হয় না।

ডিভিসি ব্যারাজ
বাঁকুড়া রোডে দামোদরের উপরে ডিভিসি ব্যারাজ। ব্যারাজ দেখার পাশাপাশি দামোদরের চরে রয়েছে চড়ুইভাতির ব্যবস্থা। নৌকা নিয়ে হাজির থাকে মাঝিরাও।

নাচন ড্যাম
প্রায় চল্লিশ বছর আগে সেচ দফতর নিচু জায়গা ঘিরে একটি জলাধার তৈরি করেছিল যা নাচন ড্যাম নামে পরিচিত। এখানে বোটিংয়ের ব্যবস্থা, চিলড্রেন্স পার্ক রয়েছে। রাতে থাকার ইচ্ছা হলে রয়েছে সরকারি অতিথিশালা।

প্রতাপপুরের ইকো রিসর্ট
বছর দশেক আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠে এই রিসর্ট। বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ দিয়ে ঘেরা। শহরের কোলাহল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজের মতো দিন কাটানোর আদর্শ জায়গা। অতিথিশালাও রয়েছে।

রণডিহা
দামোদরের সৌন্দর্য উপভোগ করার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। চড়ুইভাতির ব্যবস্থ রয়েছে। চাইলে জেলেদের সঙ্গে নৌকায় চড়ে দামোদরে ঘুরে বেরানো যায়। তাছাড়া আগে থেকে সেচ দফতরের বাংলো বুকিং করে নিলে রাতে থাকার ব্যবস্থাও হয়ে যায়।

দেউল পার্ক
শহর থেকে কিছুটা দূরে কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকায় দেউল পার্ক। ঐতিহাসিক এক রেখ দেউল ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র। ৮১ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে ফুলের বাগান, লেক, রিসর্ট, চিলড্রেন্স পার্ক, বোটিংয়ের ব্যবস্থা। পার্ক সংলগ্ন বনে হরিণ ও ময়ূর দেখার সুযোগ রয়েছে। চড়ুইভাতিও করা যেতে পারে।

ভাল্কি-মাচান
আউশগ্রাম ২ ব্লকের ভাল্কি মাচানের নিরিবিলি পরিবেশ সহজেই মন কাড়ে। বিশাল জঙ্গলের মাঝে এক চিলতে রিসর্ট। রিসর্ট লাগোয়া বিশাল জলাশয়। গাছ-গাছালি, পাখি, প্রজাপতির ভিড় দেখার মতো। রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে।

ভরতপুর বৌদ্ধস্তুপ
বুদবুদ থানা এলাকায় দামোদরের ধারে ভরতপুরে ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত একটি বৌদ্ধস্তূপ রয়ছে। ১৯৭১ সালে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় খননকার্য চালায়। পুরাতত্ত্বে আগ্রহ থাকলে বছরের প্রথম দিনে এখান থেকে ঘুরে আসা যেতেই পারে।

গুঞ্জন পার্ক
বছরের প্রথম দিনে যাঁরা শহরে থেকেও মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে চান তাঁদের জন্য আদর্শ জায়গা আসানসোলের গুঞ্জন পার্ক। আসানসোল পুলিশের হাতে গড়া এই কৃত্রিম বনাঞ্চলে ভরপুর বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে নতুন বছরের প্রথম দিনে। একদিকে বধ্যভূমিতে চড়ে বেড়াচ্ছে হরিণ। রয়েছে নানা প্রজাতির পাখির মেলা ও রঙ বাহারি প্রজাপতির মিছিল। চড়ুইভাতি করার ব্যবস্থাও রয়েছে।

মাইথন, বাথানবাড়ি

নতুন ভাবে ফের সাজিয়ে তোলা হয়েছে মাইথনের বাথানবাড়ি প্রমোদ কেন্দ্র। সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে এলাকার একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে এই কেন্দ্রের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। গড়া হয়েছে অতিথিশালা। সেখানকার নৌকাবিহার কেন্দ্রটিকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। রয়েছে স্পিড বোট। ১৯টি পরিবারের পুরুষ সদস্যদের নিয়ে তৈরি একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই নৌকাবিহার কেন্দ্রটি চালায়।

চিত্তরঞ্জন লেক
শিল্পাঞ্চলের অন্যতম ছুটি কাটানোর মনোরম স্থান চিত্তরঞ্জন লেক। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা পরিযায়ী পাখিদের চড়ুইভাতি দেখতে হলে আসতেই হবে এই লেকের প্রান্তে। এই পাখির মেলা দেখার জন্য উন্নত পরিষেবার ব্যবস্থাও করেছে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষ। সুযোগ রয়েছে চড়ুইভাতি করারও।

মুক্তাইচণ্ডী
বছরের প্রথম দিনে দেব দর্শনের সঙ্গে জমিয়ে চড়ুইভাতি, একসঙ্গে সম্ভব সালানপুরের মুক্তাইচণ্ডীতে। পাহাড়ের শৃঙ্গে অবস্থিত দেবী মন্দির ও শহরের কোলাহল থেকে দুরে গ্রাম্য পরিবেশে বছরের প্রথম দিন কাটানোর সুযোগ মিলবে এখানে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ভ্রমণ মানচিত্রে জায়গা পেয়েছে এই কেন্দ্রটি।

নেহরু পার্ক
ইস্পাত শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে দামোদরের পাড়ে তৈরি হয়েছে পার্কটি। বিনোদনের ব্যবস্থার পাশাপাশি লেকে নৌকা বিহারের ব্যবস্থাও রয়েছে। পরিবার নিয়ে চড়ুইভাতির আসর বসানোর জন্য রয়েছে সুবন্দোবস্ত।

শতাব্দী পার্ক, স্পন্দন পার্ক
শহরের বাইরে যারা যেতে চান না তাঁদের জন্য বছরের প্রথম দিনে একরাশ বিনোদন নিয়ে হাজির শতাব্দী পার্ক ও স্পন্দন পার্ক। আসানসোল শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কৃত্রিম ভাবে তৈরি এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয়। বছরের প্রথম দিনে সব রকমের সুবিধার ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.