কোচবিহারের শহিদ বন্দনা স্মৃতি আবাস
এক বেলা ভাতে ক্ষোভ হোমে
কুড়ি বাই কুড়ি অন্ধকারাচ্ছন ঘরে ১৫টি খাটিয়া পাতা। কয়েকটি লড়ঝড়ে। জানালা-দরজার পর্দা নেই। বৃষ্টির সময় ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। কম আলোয় পড়াশোনা করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সাতটি ঘরেরও একই অবস্থা। নেই পর্যাপ্ত কম্বল। নেই অ্যাম্বুল্যান্স। রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ভোগান্তি। বেহাল রান্নাঘর।
এর উপরে গত এক সপ্তাহ ধরে টান পড়েছে দৈনন্দিন খাবারের রুটিনেও। একবেলা ভাত খেয়ে কাটাতে হচ্ছে আবাসিকদের। সব মিলিয়ে নাজেহাল দশা কোচবিহারের শহিদ বন্দনা স্মৃতি আবাসের আবাসিকদের। শনিবার রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচরাম মান্না হোমে যাওয়ার পর করুণ দশা প্রকাশ্যে আসে। আজ, সোমবার কর্তৃপক্ষকে বৈঠক ডেকেছে প্রশাসন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “হোম কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ নিচ্ছি।”
শহর লাগোয়া বাবুরহাটে হোমটি সমাজকল্যাণ দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন। সেখানে শতাধিক ছাত্রীকে রাখা হয়। দুঃস্থর পাশাপাশি বিচারাধীনরাও রয়েছে। দু’তলা হোমের আটটি ঘর আবাসিকদের জন্য বরাদ্দ। বিদ্যুতের তার-সহ ব্যবস্থা বহু পুরানো হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট লেগেই থাকে। কিন্তু আর্থিক বরাদ্দ না থাকার জন্য খাবারে কোপ পড়েছে হোমে। আচমকা ওই হোমে পরিদর্শনে যাওয়া রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে কাছে পেয়ে প্রকাশ্যেই সেই ক্ষোভ উগরে দেন আবাসিকেরা। তারা মন্ত্রীকে জানায়, আগে দু’বেলা ভাত দেওয়া হত। এক সপ্তাহ ধরে একবেলা ভাত দেওয়া হচ্ছে। সকাল ১০টায় ভাত। দুপুরে রুটি, রাতে এক বাটি করে মুড়ি, গুড় খেতে হচ্ছে। সরকার টাকা দিচ্ছে না বলেই সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে আবাসিকদের তরফেই মন্ত্রীকে অভিযোগ জানানো হয়। হোম সূত্রে খবর, হোমে অর্থসাহায্য দেয় সমাজকল্যাণ দফতর। আবাসিক পিছু প্রতিমাসে বরাদ্দ করা হয় ১২৫০ টাকা। তার মধ্যেই খাওয়া ও অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ ধরা থাকে। কর্তৃপক্ষ জানান, গড়ে ১০০ জন আবাসিক হোমে থাকলেও সেই সংখ্যা মাঝে মাঝে বেড়ে যায়। আবাসিকের সংখ্যা জানালে সরকারি বরাদ্দ পাওয়ার কথা। কিন্তু ১০০ আবাসিকের জন্য যেখানে ১,২৫,০০০ টাকা আসার কথা সেখানে অর্ধেকের থেকেও কম টাকা আসে। ঠিকাদারের থেকে ধারে চালাতে হয়। সরবরাহকারী ঠিকাদার সংস্থার বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। তার জেরেই এক সপ্তাহ থেকে রাতে ভাতের বদলে মুড়ি, গুড় দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের সাফাই, সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তাদের জানানো হয়েছে। জেলার ভারপ্রাপ্ত সমাজ কল্যাণ আধিকারিক কাজী রুহল আমিন বলেন, “বকেয়া না পাওয়ায় ঠিকাদার সংস্থা সামগ্রী সরবরাহে টালবাহানা করছে। তাই দু’বেলা ভাতের বদলে একবেলা ভাত দেওয়া হচ্ছে।”
জেলাশাসককে কেন বিষয়টি জানানো হয়নি সেই প্রশ্নে সদুত্তর মেলেনি ওই আধিকারিকের কাছ থেকে। সমস্যার শেষ এখানেই নয়। হোমের ওই আবাসিকদের রান্নার জন্য কর্মী আছেন মাত্র তিন জন। আবাসিকেরা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যে সময়মত রান্নাও হচ্ছে না। তিনটি কম্পিউটার থাকলেও সেগুলি অচল হয়ে রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.