বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রামানুজন ঠিক ছিলেন ১০০ বছর
আগেই, দাবি মার্কিন গবেষকদের

চিঠিতে লেখা ছিল বেশ কিছু ফর্মুলা। কিন্তু ছাত্রের লেখা সূত্রগুলোর
মাথামুণ্ডু উদ্ধার করতে পারেননি জি এইচ হার্ডি। তাই রামানুজন সে দিন অজান্তেই কী আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন, তা লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গিয়েছিল। আজ, তাঁর মৃত্যুর প্রায় একশো বছর পরে জানা গেল, স্টিফেন হকিংয়ের বহু যুগ আগেই কৃষ্ণগহ্বরের রহস্যের সমাধান করে ফেলেছিলেন রামানুজন।
মার্কিন গবেষকরা জানাচ্ছেন, কৃষ্ণগহ্বরের অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা অজানা রহস্য বাতলে দিতে পারে রামানুজনের সূত্র। আমেরিকার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কেন ওনো বলেন, “ওঁর চিঠিতে লেখা শেষ অক্ষরটা থেকেই রহস্যটার সমাধান করে ফেললাম আমরা। অঙ্ক নিয়ে যাঁরা গবেষণা করছেন, গত ৯২ বছর ধরে সমাধানটা তাঁদের হাতেই ছিল। কিন্তু হাতে যে রয়েছে, সে খবরই তো জানা ছিল না।” আক্ষেপ ধরা পড়ল কেন-এর গলায়। বললেন, “১৯২০ সালে রামানুজন যখন অন্য ধরনের ওই মডিউলার ফর্মগুলো লিখেছিলেন, তখন কৃষ্ণগহ্বর কথাটাই কারও মাথাতে আসেনি।” তখন কেন, এখনও গবেষকেরা তাঁর সেই কাজ দেখে হতবাক।
কী করে সম্ভব? কেন এবং তাঁর সহকর্মীরা যে সব আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষ্ণগহ্বরের রহস্যের একটা অংশ সমাধান করেছেন, প্রমাণ করে দিয়েছেন ৯২ বছর আগে ওই ভারতীয় বিজ্ঞানী যথার্থ বলেছিলেন, রামানুজন তো সে সুবিধা পাননি। তা ছাড়া কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কেও তখন কোনও ধারণা ছিল না।
তা হলে? কী ভাবে এমন অসাধ্য সাধন করেছিলেন রামানুজন?
এ প্রশ্নের জবাবও নিজেই দিয়ে গিয়েছেন রামানুজন।
১৯২০ সালে তিনি তখন হাসপাতালে শয্যাশায়ী। ডাক্তার জানিয়েছেন, যক্ষ্মা হয়েছে। এ সময়ই রামানুজন তাঁর ‘স্বপ্নে’ পাওয়া ফর্মুলাগুলো লিখে পাঠান হার্ডিকে! হ্যাঁ, স্বপ্নে পাওয়া। অন্তত তেমনটাই দাবি রামানুজনের। ঘোরতর ধার্মিক রামানুজন সে সময় জানিয়েছিলেন, দেবী নামাগিরি তাঁকে স্বপ্নে দেখিয়েছিলেন ওই সূত্রগুলি।
ইতিহাস অবশ্য অন্য কথা বলে। খুব গরিব পরিবারে রামানুজনের জন্ম। বাবা কাপড়ের দোকানের সামান্য কর্মচারী। টানাটানির সংসারে দু’বেলা খাবার জোটেনা, ছেলের পড়াশোনার খিদে মেটাবেন কি করে? তাই আলাদা করে শিক্ষক রাখতে পারেননি। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে গিয়েই ফেল। এক বার নয়, দু’-দু’বার। কারণ ছেলের অঙ্ক ছাড়া কিছুতেই মন বসে না। পরিণতি, পড়াশোনায় ইতি।
তবে অঙ্ক কষা থামল না। কোনও শিক্ষক নেই, পথ দেখাতে গাইড নেই। একা একাই, পাতার পর পাতা ভরে গেল অঙ্কে। পরামর্শ চেয়ে হার্ডিকে চিঠি লিখলেন তিনি। রামানুজনের কাজ দেখে অবাক হার্ডি। এমন এক জনের সাক্ষাৎ পাওয়ার সুযোগ হারাতে চাননি। কেমব্রিজে আমন্ত্রণ জানালেন রামানুজনকে। পরবর্তী কালে হার্ডি গর্বের সঙ্গে বলেছিলেন, “আমি রামানুজনকে ডিসকভার করেছি।” আবার স্বীকারও করে নিয়েছিলেন, “আমি কিন্তু ওঁকে ইনভেন্ট করিনি। সব মহান ব্যক্তিত্বের মতোই তিনি নিজেই নিজেকে ইনভেন্ট করেছিলেন।”
অভিভূত কেন-ও। বললেন, “আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি, রামানুজন ঠিক ছিলেন।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.