আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা আছে, শনিবার এই দাবি তুলে পুলিশ আসার আগেই সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এক নেতা-সহ সিপিএমের তিন জন মার খান। পরে পুলিশ ওই কার্যালয়ে ঢুকে একটি একনলা বন্দুক, একটি রিভলভার এবং ৬০টি বোমা উদ্ধার করে। কার্যালয়টি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। অস্ত্র মজুতের অভিযোগে কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া ১০ ঘরছাড়া সিপিএম কর্মীকে ধরে পুলিশ। ভাঙচুর বা মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।
দলীয় কার্যালয় থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে ‘সাজানো’ বলে দাবি করে সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, “আমাদের কার্যালয়ে অস্ত্র ঢুকিয়ে রেখে পরে তা উদ্ধারের দৃশ্য রচনা করা হল। আগেও পুলিশি তত্ত্বাবধানে আমাদের কার্যালয়ে ওরা হামলা করেছে।” প্রশাসন কার্যালয় খোলার ব্যবস্থা না করলে দল আইনি পদক্ষেপ করবে বলেও জানান সুদর্শনবাবু। |
জেলা তৃণমূল নেতা সমীর ভাণ্ডারীর দাবি, “ওই কার্যালয়ে অস্ত্র ছিল। সিপিএম এখন সাধু সাজছে।” তবে তাঁর সংযোজন, “আমাদের সংযত থাকতে হবে। না হলে আমরাও মানুষের আস্থা হারাব।” কার্যালয়ে হামলা ‘জনরোষের জেরে’ বলে দাবি করেছেন আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা।
এসডিপিও (আরামবাগ) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত বিষয়ই দেখা হচ্ছে।”
ওই কার্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র আছে, এই দাবি তুলে এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সেখানে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। স্বপন নন্দী, সোহরাব হোসেন-সহ কয়েকজন তৃণমূল নেতা ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ আসার আগেই সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে কিছু তৃণমূল সমর্থক পাশেই আরামবাগ আদালত চত্বর থেকে রাজু মালিক এবং দিলীপ মালিক নামে দুই সিপিএম কর্মীকে মারধর করতে করতে ওই কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসে বলে অভিযোগ। চলতে থাকে বিক্ষোভও। বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট শান্তিনাথ ঘোড়ুই ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পুলিশ-র্যাফ ওই কার্যালয়ে তল্লাশি শুরু করে। কার্যালয়ে ঢোকার সময়ে সিপিএম নেতা সমীর চক্রবর্তীকে পুলিশের সামনেই তৃণমূলের লোকজন রাস্তায় ফেলে মারধর করে বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। রাজু মালিক আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি।
শক্তিমোহনবাবু বলেন, “তৃণমূলের নোংরা রাজনীতি আরামবাগের মানুষ বুঝেছেন।” তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার দাবি, “অফিসে সিপিএম আগ্নেয়াস্ত্র জমা করছে বলে দিন দু’য়েক আগেই লিখিত ভাবে মহকুমাশাসকের দফতরে জানানো হয়। এ দিন তিন জনকে ব্যাগ ভর্তি বোমা নিয়ে ঢুকতে দেখেই ছেলেরা পুলিশ ডাকে।” |