মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য নিঃশর্তে ক্ষমা চেয়েছেন মাত্র দু’দিন আগে। দিয়েছিলেন ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার প্রতিশ্রুতিও। এমনকী, জনতার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন শনিবারেও। কিন্তু এ দিন হাওড়ার শ্যামপুরের দেওড়ায় সেই একই জনসভার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করায় অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা আনিসুর রহমান।
তবে শুধু আনিসুর নন, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে রাজ্যের প্রাক্তন ত্রাণমন্ত্রী হাফিজ আলম সইরানির বিরুদ্ধেও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলার অভিযোগ উঠেছে। পক্ষান্তরে, কোচবিহারে এক সভায় রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার বিরুদ্ধে আবার সিপিএমের প্রতি অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে এ দিন। |
জনসভায় আসার পথে শনিবার বাগনানে নুন্টিয়ার কাছে শ্যামপুর রোডে আনিসুরের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান একদল তৃণমূল কর্মী। দেখানো হয় কালো পতাকাও। বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতা মোকারপ মল্লিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার প্রতিবাদেই আমরা আনিসুর সাহেবের গাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।’’ বিক্ষোভে মিনিট পাঁচেক আটকে ছিল প্রাক্তন মন্ত্রীর গাড়ি। তার পরে এলাকার সিপিএম কর্মীরা তাঁর গাড়ি ছাড়ান। সভামঞ্চ থেকে আনিসুর ২৬ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি করা কটূক্তির জন্য ফের ক্ষমা চান। বলেন, “উত্তরবঙ্গের জনসভায় আমি কিছু মন্তব্য করেছিলাম সেগুলি অশোভন ও অসংসদীয়। এর আগে আমি সংবাদমাধ্যমের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। এ বার আমি জনসাধারণের কাছে সরাসরি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।”
পরে একই সভা-মঞ্চ থেকে অর্থ-ভাঁড়ারের দশা নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধতে গিয়ে শাহরুখ খান এবং অমিতাভ বচ্চনের (সম্প্রতি কলকাতায় চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন) প্রসঙ্গ টানেন আনিসুর। বলেন, “এ ধরনের অনুষ্ঠানের বেলায় তো টাকার অভাব হয় না!” এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে গিয়েই আনিসুর মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল শিবিরের। পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগেই বলেছিলাম, ওঁর ক্ষমা চাওয়াই যথেষ্ট নয়। আনিসুর আবার এমন বলবেন। সেটাই প্রমাণিত হল।” এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার মন্তব্য, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা। তাঁর প্রতি বার বার যদি এমন অসম্মানসূচক মন্তব্য করা হয়, তা হলে রাজ্যে নারী নির্যাতন আরও বাড়বে।”
অসম্মানসূচক বা আপত্তিকর মন্তব্য করার যে ঐতিহ্য রাজনৈতিক দলগুলোর দৌলতে দেখা গিয়েছে, অবিলম্বে তাতে ইতি পড়বে কি না, রাজ্যবাসী এ বার হয়তো সেই বিতর্ক শুরু করতে চাইবেন। |