সীমান্তে চোরাচালান রোধে উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকায় ‘হাট’ তৈরির জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বিএসএফ। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত পরিদর্শন করে মালদহ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফের আইজি কুলদীপ শর্মা সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মালদহ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফের আইজি কুলদীপ শর্মা বলেন, “বিএসএফের তরফে পাঠানো ওই প্রস্তাবের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনা হয়েছে।”
মালদহ রেঞ্জ এলাকায় ৪টি হাট বসাতে জায়গাও খোঁজা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এতে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলার সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবার রোধে সাড়া মিলবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। আইজির মতে, “ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কাঁটাতারবিহীন এলাকায় খোলা হাট বসিয়ে ওপারের বাসিন্দাদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাসপোর্ট দিয়ে এপারে আসার ব্যবস্থা করবে অভিবাসন দফতর ফলে হাট গুলিতে বৈধ ভাবে বেচাকেনার ক্ষেত্র তৈরি হবে। ও পার বাংলার ব্যবসায়ীরাও এ পারে এসে জিনিস কেনাবেচার সুযোগ পাবেন। এতে শুল্ক বিভাগের কর আদায়ের মাধ্যমে সরকারের আয় হবে।”
হিলি-সহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। সেই সব এলাকা দিয়ে রমরমিয়ে চলছে চোরাকারবার। বস্তুত জেলার ওই সব সীমান্ত এলাকা দিয়ে ও পারে ব্যাপক হারে গরু, মাদক কফ সিরাপ, ওষুধপত্র, বিদেশি মদ, তৈরি পোশাক পাচার হচ্ছে। ও পার থেকে ঢুকছে তাঁতের শাড়ি, মাছের পোনা ও বিদেশি মোবাইল।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি এবং বালুরঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচারের কারবার চলে সপ্তাহে প্রায় তিন’কোটি টাকার উপর। এ ছাড়া মাদক দ্রব্যের চোরাকারবারে লগ্নি হয় সপ্তাহে প্রায় দু কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’দেশের সম্পর্কের উন্নতিতে বর্তমানে সীমান্তে বিএসএফের গুলি চালানোর উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। পাচারের এলাকা গুলিতে হাট বসিয়ে ওই সমস্ত জিনিস বেচাকেনার ব্যবস্থা করে নিয়ম মেনে কিছু সময়ের জন্য দুদিক খুলে দেওয়া হলে চোরাকারবার বন্ধ হতে পারে বলে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের ধারণা।
আইজি কুলদীপ শর্মার কথায়, “সীমান্তে চোরাকারবার রোধে জওয়ানেরা সতর্ক রয়েছে। তবে বেশ কিছু এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকার সুযোগে পাচারকারীরা সক্রিয়।” দিল্লি থেকে এই ব্যাপারে অনুমোদন পাওয়া গেলে পরীক্ষামূলক ভাবে সীমান্তের গ্রামে হাট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আইজি জানিয়েছেন। আইজি হিলি সীমান্তের কাঁটাতারের ও পারে ভারতীয় ভূখন্ডে অবস্থিত গ্রামগুলি পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন রায়গঞ্জ রেঞ্জের বিএসএফ ডিআইজি যশবন্ত সিংহ, ৯৬ বিএসএফ কোম্পানি কমান্ড্যান্ট রাজেন সুদ, হিলির কোম্পানি কমান্ডার সংগ্রাম বিসওয়াল পরে বাংলাদেশের বিজিবি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সীমান্ত পাহারা ও ‘খোলা হাট’ বসানোর বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। |