অসহ্য প্রসব বেদনা নিয়ে অসহায় চোখে লেবার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নাইকুড়ার টুকুন মণ্ডল। প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও জোটেনি তাঁর ভাগ্যে। কারণ, হাসপাতালে ডাক্তারেই দেখা নেই। পাশের ঘরে বহিঃবিভাগে গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে এক মনে রোগী দেখে চলেছেন ফার্মাসিস্ট রামপ্রসাদ ঘোষ। তিনি সর্দি-জ্বর থেকে শুরু করে সমস্ত রোগেরই দাওয়াই বাতলে দিচ্ছেন রোগীদের। শুক্রবার একটু বেলার দিকে এটাই ছিল আসাননগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিত্র। দশ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ী চব্বিশ ঘণ্টায় ডাক্তার থাকার কথা। কিন্তু অভিযোগ, রাতের বেলা তো দূরের কথা প্রায়ই আউটডোরে দেখা মেলে না ডাক্তারবাবুর। সে ক্ষেত্রে রোগীদের ভরসা ফার্মাসিস্ট রামপ্রসাদবাবু। তিনি অবশ্য এই দায়িত্ব নিতে খুবই একটা কুণ্ঠাবোধ করেন না। |
তাঁর কথায়, “১৩ বছর ধরে মাঝেমধ্যেই এ কাজ করে আসছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষও জানেন সে কথা। চিকিৎসক না এলে রোগীদের স্বার্থেই আমি ওষুধ দিই। তা ছাড়াও চিকিৎসা সম্পর্কে আমি কিছুটা হলেও তো জানি।” চিকিৎসা করাতে আসা বিভা সাঁতরা বা সাধন বিশ্বাসরা বলেন, “ প্রায়ই ডাক্তারবাবু থাকেন না। ফার্মাসিস্টই ওষুধ দেন।”হাসপাতালের চিকিৎসক সুব্রত বিশ্বাসের মোবাইলে ধরা হলে তিনি বলেন, “সোমবার থেকে টানা ডিউটি করেছি। আজ থেকে অন্য চিকিৎসকের দায়িত্ব নেওয়ার কথা। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।” অপর চিকিৎসক, দেবব্রত ভট্টাচার্যকে ফোন করলে তিনি বলেন, “ট্রেনের সমস্যা থাকায় যেতে একটু দেরি হচ্ছে। তবে ফার্মাসিস্টের রোগী দেখার মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছি না। বিভিন্ন জায়গাতেই ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে ফার্মাসিস্টরা রোগী দেখে থাকেন।” কৃষ্ণনগর-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবলীনা হালদার বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমি হাসপাতালে এসে খোঁজখবর নিচ্ছি। পুরো বিষয়টা না জেনে কিছু বলতে পারব না।” |