গত ২২ ডিসেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত শক্তিনাথ ঝা মহাশয়ের চিঠির জবাবে জানাই, যোগীন্দ্রনারায়ণ রায় নামটি সঠিক নয়। তা-ই যদি সত্য হত তাহলে এম এন পাবলিক লাইব্রেরি, কিংবা এম এন অ্যাকাডেমির ভিত্তি ফলকে প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে যোগীন্দ্রনারায়ণ রায় লেখা হত। কিন্তু সেটা হয়নি। এখনও ফলকে জ্বলজ্বল করছে ‘যোগেন্দ্রনারায়ণ’ লেখাটি। পরবতী কালে যখন এম এন অ্যাকাডেমির বিজ্ঞান ভবন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন সেই ভবনেরও নামকরণ করা হয় ‘যোগেন্দ্রভবন’। ১৩১৬ সালে সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় যোগেন্দ্রনারায়ণের আত্মীয়রা রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর লেখা ‘মন্দির প্রতিষ্ঠা’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে তিনি বারবার ‘যোগেন্দ্রনারায়ণ’ নামটি ব্যবহার করেছেন। দানবীর রাজকে কে ‘যোগ+ইন্দ্র’ বানালেন তা নিয়ে লালগোলাবাসীর মাথা ব্যথা নেই। যেমন, মথুরাবাসীর মাথা ব্যথা নেই তাঁদের কানাইকে শ্রীকৃষ্ণ বানানোয়। শক্তিনাথ ঝা তাঁর চিঠিতে আরও বলেছেন, “‘যোগী’ তো লৌকিক ধর্মের প্রতিনিধি।” বলে নেওয়া ভাল, যোগেন্দ্রনারায়ণ ‘যোগী’ ছিলেন না। লাইব্রেরি নিয়ে আমার বলা লোককথায় শক্তিনাথ ঝা ইতিহাস খুঁজেছেন। কিন্তু লোককথায় ইতিহাস থাকে না, থাকে ইতিহাসের অনুষঙ্গ। লোককথা সাধারণ মানুষের কথা। তাঁরা অত যুক্তি ব্যাখ্যার ধার ধারেন না। সেই আমলে পাবলিক লাইব্রেরি ব্যাপারটি লালগোলার মতো মফস্সলে অলীক বস্তু হলেও বাংলার আর পাঁচটি রাজপরিবারের মতো লালগোলার রাজপরিবারেরও নিজস্ব লাইব্রেরি ছিল। সেটি পরিবারের সদস্যদের জ্ঞানতৃষ্ণা মেটানোর প্রয়োজনেই। এই ব্যাপারটা রাজকুমার অর্থাৎ দত্তক যোগেন্দ্রনারায়ণ রায়ের শিক্ষার প্রয়োজনে বলে সাধারণ লোকের মুখে প্রচলিত। শ্রী ঝা আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। তবু কেন যে তিনি ‘ডাকঘর’-এর কাঠগড়ায় আমাকে দাঁড় করালেন, আমার বোধগম্য হল না। নীহারুল ইসলাম, লালগোলা। |