তাঁর কাছে মোতেরা বরাবরের পয়া। এই মাঠেই বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এসেছে তাঁর ম্যাচ জেতানো পারফরমান্স। কর্কটরোগকে হারিয়ে প্রথম টেস্ট ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৪। তার পর আজ আবার এক দুর্ধর্ষ ইনিংস। এ বার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।
তবু যুবরাজ সিংহের মুখে তিনি নিজে নেই। আছেন অশোক দিন্দা। “কী বল করল ছেলেটা! ডেথে এ রকম বোলিং স্রেফ ভাবাই যায় না। ডেথে বল করা সবচেয়ে কঠিন। অসহ্য চাপ থাকে, তার উপর দু’জন সেট ব্যাটসম্যান ছিল। যারা তৈরিই ছিল দিন্দাকে মারার জন্য। ডেথে আজ দিন্দা না থাকলে, দুর্ধর্ষ ফিল্ডিং না হলে, ম্যাচ আমরা জিততাম নিশ্চিত করে বলা যায় না। দিন্দার ওভারটার আগে পর্যন্ত কিন্তু ম্যাচটা যে কোনও দিকে যেতে পারত,” ম্যাচ শেষে ভিড়ে ঠাসা সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলছিলেন ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ যুবরাজ। দিন্দা নিজে ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, “আমার জীবনের সেরা দিন। এ রকম দিন আর আসবে কি না জানি না!” পাক অধিনায়ক মহম্মদ হাফিজও একটু আগে বলে গিয়েছেন, “দিন্দার ওভারই সব কিছুর বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।” আর যুবরাজের সংযোজন, “সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আজ দিন্দার ইয়র্কারগুলো একদম ঠিকঠাক পড়েছে।” |
কিন্তু তিনি নিজে? আর তাঁর ওই সাত-সাতটা ছক্কা?
বোধহয় কিছুটা লজ্জায় পড়লেন। “আরে না, না। ক’টা ছয় মারব, সে সব ভেবে আমি মোটেই নামিনি। ও ভাবে খেলা যায়ও না। আসলে বেশি প্ল্যান করে নামলে পরে ভুগতে হয়। ছক্কাগুলো হয়ে গিয়েছে। সহজাত ভাবে। আমি শুধু বলটা দেখার চেষ্টা করে গিয়েছি শেষ পর্যন্ত। শেষ দু’টো ম্যাচে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ডুবেছিলাম। এ দিন সাত ওভারের মাথায় নেমে ঠিক করি, উইকেটে থাকতে হবে। পরে মারব,” বলছিলেন যুবি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বুধবার নেটে একটা বলও তাঁর মাঝ-ব্যাটে লাগেনি। স্টাম্প ছিটকে গিয়েছে বেশ কয়েকবার। নিজে সেটা মেনেও নিলেন। বললেন, “ঠিকই। কিন্তু আজ আমাকে থাকতে হত। ওরা দেখলাম উমর গুলকে ছ’ওভারের মধ্যে আনল। আমি আর ধোনি বুঝে গেলাম, তার মানে ডেথে ওদের স্পিনার আনতেই হবে। যে আসবে, তাকেই মারব।” কপাল খারাপ আজমলের। যাবতীয় দুর্ভোগ তাঁকেই পোহাতে হয়েছে।
পাশাপাশি যুবরাজের মনে হচ্ছে টিমে তারুণ্য নিশ্চয়ই দরকার আছে, কিন্তু কখনওই অভিজ্ঞতাকে বিসর্জন দিয়ে নয়। “আপনারা যদি তরুণদের নিয়ে বেশি নাচানাচি করেন, তা হলে আমি খেলব কোথায়?” বলে একচোট হাসি। তার পর, “টি-টোয়েন্টি এমন ফর্ম্যাট যেখানে তারুণ্য দরকার ঠিকই। কিন্তু অভিজ্ঞতাকে বাদ দেওয়ার জায়গা আছে? আজ যদি টিম বিপদে পড়ে, আমার মতো সিনিয়রদেরই তো টেনে তুলতে হবে। জুনিয়রদের শিখতে সময় লাগবে। ওদের সেই সময়টা দিন।” |