|
|
|
|
অতিসঙ্কটে তরুণী, আরোগ্য কামনা সনিয়ার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
প্রতি বার এই দিনটায় দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান তিনি। কিন্তু আজ বললেন, “এখন এ সবের সময় নয়। বরং আমাদের সব চিন্তা ওই মেয়েটাকে নিয়ে, বর্বরোচিত আক্রমণের পরে যে বাঁচার জন্য লড়ছে।” দিল্লির গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে এই প্রথম প্রকাশ্যে মুখ খুললেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। আরোগ্য কামনা করলেন ওই তরুণীর। কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে আজ দলীয় সদর দফতরে এসেছিলেন সনিয়া। সেখানেই জানালেন, তিনি চান, সিঙ্গাপুর থেকে সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসুন ওই তরুণী। অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির পক্ষে আজ আরও এক বার সওয়াল করেছেন সনিয়া।
কিন্তু সেই মেয়ে ভাল নেই। গোটা দেশ তাঁর আরোগ্য কামনা করলেও মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের তরফে আজ রাতের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়, গণধর্ষণের শিকার ২৩ বছরের ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। তাঁর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে। সর্বোচ্চ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে তাঁকে। সিঙ্গাপুরের সময় রাত ন’টা নাগাদ যে মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়, তাতে হাসপাতালের সিইও কেলভিন লোহ বলেন, “রোগীর অবস্থা আরও খারাপের দিকে। জীবনের মূল লক্ষণগুলোর ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে।” তবে সেই সঙ্গেই কেলভিন জানিয়েছেন, চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। কিছু অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হয়েছে। তরুণীর পরিবারকে সবই জানানো হয়েছে। সাহস দিতে বাবা-মা মেয়ের পাশে আছেন। |
|
বিহ্বল সনিয়া। সাংবাদিকদের মুখোমুখি নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই |
আজ সকাল এগারোটায় তরুণীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে একটি মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছিল। কেলভিন সেই সময় জানিয়েছিলেন, ওই তরুণীর ফুসফুস আর পেটে সংক্রমণ আছে। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাতও লেগেছে। তিনি সব রকম প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়ছেন। আগামী কয়েক দিনে তাঁর অবস্থা যাতে একটু স্থিতিশীল হয়, চিকিৎসকেরা তার সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছেন। ওই তরুণীর বাবাও আজ সিঙ্গাপুর থেকে জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের সুচিকিৎসার বিষয়ে তিনি ফের আশ্বাস পেয়েছেন। যদিও রাতের পরেই পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে থাকে।
এরই মধ্যে চলছে বিতর্ক। চিকিৎসকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, অবস্থা এতটা আশঙ্কাজনক জানা সত্ত্বেও ওই নির্যাতিতাকে কেন হাসপাতাল থেকে সরিয়ে বিমানযাত্রার ধকলের মধ্যে ফেলা হল। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “মেয়েটিকে সরানোর পিছনে রাজনৈতিক, সামাজিক বা আবেগের মতো দিকগুলো নিয়ে হয়তো অনেক কিছু ভাবা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার দিক থেকে বলতে পারি, দেশে ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বিদেশে পাঠানোটা খুব দুঃখের। এটা ভুলও। আমার রোগীকে তো সরাতে দিতাম না।”
রাজধানীতে জল্পনা, ওই তরুণীকে সিঙ্গাপুর পাঠানোর পিছনে মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের হাত থাকতে পারে। রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছিলেন অনেকে। সেই নিয়েই প্রশ্ন করা হয় বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদকে। তিনি বলেন, “মেয়েটির যাতে চিকিৎসার ত্রুটি না হয়, সে জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শেই তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এতে রাজনীতির রং নেই।” খুরশিদের দাবি, চিকিৎসকেরা নিশ্চয়ই ওই তরুণীকে ব্রিটেন বা আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা ভেবেই গন্তব্য ঠিক হয়। সিঙ্গাপুরের ভারতীয় হাইকমিশনার এ রাঘবন বলেন, “মেয়েটি যে সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা পাচ্ছেন, তা তাঁর পরিবার জানে। চেষ্টা করছি, পরিবার যেন সব সময় পাশে থাকে। আমরা ভালর দিকে তাকিয়ে।” |
|
|
|
|
|