জাতীয় উৎসবের মর্যাদা দিতে হবে। এই দাবি নিয়েই শুক্রবার শুরু হল জয়চণ্ডী পাহাড় পর্যটন উৎসব। প্রদীপ জ্বালিয়ে জয়চণ্ডী পাহাড়ের পাদদেশে উৎসবের সূচনা করেন সঙ্গীত শিল্পী শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন এলাকার সিপিএমের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া, পুরুলিয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিলাসীবালা সহিস, রঘুনাথপুর পুরসভার পুরপ্রধান, তৃণমূলের মদন বরাট, আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম অরবিন্দ মিত্তাল-সহ প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা। উৎসবের আগে সাংসদ বলেন, “সাত বছর ধরে সফল ভাবে উৎসব হয়ে আসছে। তাই আমাদের সবার তরফ থেকে একটাই দাবি, এই উৎসবকে জাতীয় উৎসবের মর্যাদা দেওয়া হোক।”
পর্যটনকেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে রঘুনাথপুর শহরের উপকন্ঠে জয়চণ্ডী পাহাড়কে ঘিরে সাত বছর আগে শুরু হয়েছিল পর্যটন উৎসব। প্রথম দিকে উৎসব হলেও পর্যটনকেন্দ্র গড়ার কাজে প্রত্যাশিত গতি না থাকায় উৎসবকে ঘিরে অনুযোগ ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে গত দুই বছর ধরে সেই চিত্রের কিছুটা বদল হয়েছে। রাজ্য সরকার পাহাড়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। পাহাড়ে সবুজায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলছে পরিকাঠামো গড়ার কাজও। মেলা কমিটির সদস্য তথা এলাকার বাসিন্দা গৌতম দত্ত, নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে উদ্দ্যেশে মেলা শুরু হয়েছিল তার পূর্ণতা পাচ্ছে। আমরা খুশি।” |
শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ছবিটি তুলেছেন প্রদীপ মাহাতো। |
সেই প্রেক্ষিতেই এ দিন উপস্থিত সাংসদ থেকে শুরু করে পুরসভার পুরপ্রধান সকলেই জানিয়েছেন, যে লক্ষ্যে পর্যটন উৎসব শুরু হয়েছিল বর্তমানে তার অনেকটাই পূরণ হচ্ছে। এ দিন সত্যজিৎ রায় নামাঙ্কিত স্থায়ী মঞ্চে প্রদীপ জ্বালিয়ে ও পরে চণ্ডীপাঠ করে উৎসবের সূচনা করেন শ্রীকুমারবাবু। তাঁর কথায়, “এই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অতুলনীয়। এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠার সব উপকরণই রয়েছে।” কমিটির সম্পাদক সুকুমার মণ্ডল বলেন, “জয়চণ্ডী পাহাড়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার বিষয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে উদ্যোগী হয়েছিলাম আমরা। প্রশাসনিক সহযোগিতায় সেই কাজ শুরু হয়েছে।”
উৎসব কমিটির সভাপতি বাসুদেববাবু জানান, প্রতি বছরের মতোই এ বারও উৎসবে সাহায্য করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় জুট, ফিসারি, লাক্ষা রিসার্চ কেন্দ্র-সহ ডিভিসি ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতর উৎসবে প্যাভিলিয়ন দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানানোর পরে বিভিন্ন রাজ্যর সাংস্কৃতিক দলগুলি উৎসবে অনুষ্ঠান করতে আসছে। সাংসদের কথায়, “সাত বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে আমরা এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে উৎসব করছি। বর্তমানে সেই লক্ষ্যে অনেকটাই সফল। সেই প্রেক্ষিতে আমরা এই উৎসবকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানাব।” এ বারই জয়চণ্ডী পাহাড় সম্পর্কে পর্যটকদের আরও তথ্য দেওয়ার উদ্দেশ্যে উৎসবের ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে বলে জানান সাংসদ। রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান মদনবাবু বলেন, “পাহাড়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে এই উৎসবে সকলেই সামিল হন। আমরা রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রীর কাছে বিশদে পরিকল্পনা দিয়েছি। ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন স্থানীয় শিল্পী ও স্কুলগুলির পড়ুয়ারা। পাঁচ দিন ধরেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে বলে জানিয়েছে উৎসব কমিটি। |